জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথমবার আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হবেন মোদী ও বাইডেন। হোয়াইট হাউসের (White House) তরফে ২৪ তারিখ দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠক হওয়ার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে।
শুধু নরেন্দ্র মোদী নন, কোয়াডের অন্তর্ভুক্ত আরও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরাও থাকবেন সেই বৈঠকে। থাকবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা (Yoshihide Suga) ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট ম্যারিসন (Scott Morrison)। চার রাষ্ট্রনেতার বৈঠকে আফগানিস্তান প্রসঙ্গে থাকবে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। তবে চার দেশের আলোচনার একটা বড় অংশে থাকবে চিন। হোয়াইট হাউসেই সেই বৈঠক হবে বলে জানিয়ছেন প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি।
কোয়াড অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে এর আগে একটি ভার্চু্যাল বৈঠক হয়েছিল। গত মার্চ মাসে সেই বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। চিনে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে এই চার দেশ কী ভাবে একজোট হয়ে কাজ করবে, সেই নিয়েই আলোচনা হয় মূলত। এ ছাড়া করোনা ভ্যাকসিন ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও কথা হয়েছিল তাঁদের।
জো বাইডেনের ইন্দো-পেসিফিক কো-অর্ডিনেটর কুর্ত ক্যাম্পবেল জানিয়েছেন, মূলত ভ্যাকসিন কূটনীতি ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। চিন যে ভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে আগ্রাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পরিকাঠামো সংক্রান্ত পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাইডেন। বুশেষত চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জ করতে সেই পরিকল্পনা জোরদার হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি। এর আগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকেও এই সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে একজোট হয়ে কাজ করার বার্তাও মূলত দেওয়া হবে এই বৈঠকে। করোনা অতিমারির মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করবে।
এর আগে মার্কিন মুলুকে গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হয়েই স্লোগান তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বাইডেন। বাইডেন ক্ষমতা আসার পর মোদীর সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়নি তাঁর। এর আগে তিনবার ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ হয় দুজনের। মার্চে কোয়াড সম্মেলন, এপ্রিল জলবায়ু পরিবর্তন এবং জুনে জি-৭ গোষ্ঠীর বৈঠকে। এ বার প্রথম সশরীরে সাক্ষাৎ হবে তাঁদের। অন্যানয় বিষয়ের পাশাপাশি আফগানিস্তান ইস্যুও একটা বড় জায়গা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তান নিয়ে অবস্থান প্রসঙ্গে সমালোচিত হয়েছেন বাইডেন। অন্যদিকে, তালিবানি শাসন চিন্তা বাড়াচ্ছে নয়া দিল্লিরও। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর আমেরিকা সফর বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। মার্কিন আধিকারিকদের মতে, আফগানিস্তানের যুদ্ধ শেষ করেছে আমেরিকা। এবার তাই পুরো নজরটাই দেওয়া হবে চিনের দিকে।