কংগ্রেস নেতা গোলাম নবী আজাদ গতকাল প্রধানমন্ত্রী মোদিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে বলেন, “যার বংশে কেউ নেই উনি কি করতে পারেন?”
গত কয়েক মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে যখন প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে , নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে কংগ্রেসের একজন দায়ীত্ববান নেতার এই বিবৃতি আত্মঘাতী হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারনা।
বিজেপি গোলাম নবী আজাদের মন্তব্যটিকে দ্রুত টুইট করেছে। ।
উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি ব্লগে লিখেছেন কিভাবে পরিবারবাদী রাজনীতি ভারতে গণতন্ত্র ও তার প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে দিয়েছে। কংগ্রেসের নেতারা তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপর ঘৃণ্য ব্যক্তিগত আক্রমনের মুখে ফেলছে বলেও তিনি ব্লগটিতে তুলে ধরেন। বিজেপি এই বিষয়টিকে সহজে ছেড়ে দেবে না এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। হোলির উদযাপন শেষ হওয়ার পরে এবং দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা সম্পূর্ণ হলে, পার্টি তার নির্বাচন প্রচারে এই বিবৃতিটি ব্যবহার করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গোলাম নবী আজাদের পাশাপাশি, কংগ্রেস নেতা তারিক আনোয়ারও একই ধরনের কথা বলেছেন। তারিক আনোয়ার বুধবার বলেছেন, “একজন ব্যক্তি (প্রধানমন্ত্রী মোদি), যার উত্তরাধিকারী নেই, তিনি বংশবাদকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন কেমন করে। বিশ্বের প্রতিটি কোণায়, যেকোনো পেশার মানুষ উত্তরাধিকারের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যায়। মোদিজির কোনো উত্তরাধিকারী নেই, তাই তিনি এই ধরনের মন্তব্য করছেন।”
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আসা এই ধরনের মতামত দলের পরিবারবাদের প্রতি সমর্থনকেই প্রকাশ করে। এছাড়া এই রকম মন্তব্য আগেও এসেছে এটা নতুন কিছু নয়।
কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে লোকসভা ভোটের ঠিক আগেই এরম মন্তব্য।
তাছাড়া তাঁকে অসম্মানিত করে কোনো অশালীন মন্তব্য করলে তা বিরোধীরদের দিকে ঘুরিয়ে নিজের পক্ষে ব্যবহার করার প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। যেমন সাধারণ মানুষ বনাম নামদার পরিবারের এই বিষয়টি শুধু প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত পরিসরে নেই বরং এটি মূলস্রোতের আলোচনার বিষয় হয়ে গেছে।
এর মানে বোঝা যাচ্ছে যে গোলাম নবী আজাদ এবং তারিক আনোয়ারের অপমান সূচক বিবৃতি কেবল ব্যক্তিগত হিসাবে বিবেচিত হবে না, যেমন ২০১৪ সালে কংগ্রেস নেতা মনীশঙ্কর আইয়ারের ‘চওয়ালা’ মন্তব্যটির ক্ষেত্রে হয়েছিল। ‘নামাদার বনাম কামদার’ বিষয়টি যেমন গত কয়েক মাসে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রচার হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নিজেকে মশীহা বা রক্ষাকারী হিসাবে প্রমাণিত করার সাথে সাথে বিরোধী দল গুলিকে সাধারণ মানুষের কাছে তুলেধরার অক্ষমতার কারণে তাদের হতাশ করেছেন।
গত সপ্তাহে আমরা দেখলাম কিভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘চৌকিদার’ বিদ্রুপটিকে সম্পূর্ণভাবে ঘুরিয়ে দিলেন। যারা এটা শুরু করেছিল তারা এখন মনে মনে অনুশোচনা করছে নিশ্চিত। যুক্তরাজ্যে নিরভ মোদির গ্রেফতারের পর বিদ্রুপটি আরো বেশি মাত্রা পেতে শুরু করেছে। এর আগের ‘চাওয়ালা’র পাশাপাশি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বডঢ়ার করা ‘নীচ’বিদ্রুপটি স্মরণীয়। এরম সময়ে গোলাম নবী আজাদ ও তারিক আনোয়ারে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এমন বিদ্রুপ যেন অনেকগুলি ওপিনিয়ন পোলের ইতিমধ্যেই করা বিজেপির জয় সূচক ভবিষ্যদ্বাণী কে সরাসরি সীলমোহর দিচ্ছে।