তিনমাস ধরে মাইনে না পেয়ে বাধ্য হয়েই ১ এপ্রিল থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন জেট এয়ারওয়াজের পাইলট ও ইঞ্জিনিয়াররা। শেষ পর্যন্ত পরিষেবা চালু রাখতে বাধ্য হয়ে তাঁদের ডিসেম্বর মাসের মাইনে দেওয়ার কথা ঘোষণা করল জেট কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে এর বেশি মাইনে দেওয়ার সামর্থ্য জেট-এর নেই।
রবিবার একটি বিবৃতি দিয়ে জেট এয়ারওয়েজের চিফ এক্সিকিউটিভ বিনয় দুবে জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। তাই ডিসেম্বর মাসের মাইনে দেওয়া হচ্ছে পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের। পরিষেবা কিছুটা ভালো হলে বাকি মাসগুলিরও মাইনে মিটিয়ে দেওয়া হবে।” সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমরা বুঝতে পারছি, এই আর্থিক অবস্থায় কর্মচারীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু জেট কর্তৃপক্ষ চায় না কর্মচারীদের দিয়ে বেগার খাটিয়ে নিতে। বর্তমানের আর্থিক সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে জেট কর্তৃপক্ষ।”
এই ঘোষণার পর জেট এয়ারওয়েজের ইউনিয়ন ন্যাশনাল অ্যাভিয়েটর্স গিল্ডের সভাপতি করণ চোপড়া জানিয়েছেন, মুম্বইয়ে সোমবার ইউনিয়নের সব সদস্যরা মিলিত হবেন। তারপরেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন, ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অটুট থাকবেন, না প্রত্যাহার করে নেবেন।
এর আগে ২১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অসামারিক বিমানমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর কাছে চিঠি লিখে নিজেদের অবস্থার কথা জানান জেট এয়ারওয়েজের পাইলটদের ট্রেড ইউনিয়ন ন্যাশনাল অ্যাভিয়েটরস গিল্ড ( ন্যাগ)। এই চিঠিতে বলা হয়, “আমরা আশঙ্কা করছি যে কোনও মুহূর্তে এই সংস্থা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এরকম হলে হাজার হাজার লোক কর্মহীন হয়ে পড়বে। জেট এয়ারওয়েজ বন্ধ হয়ে গেলে বিমানের সংখ্যা কমে যাবে। ফলে ভাড়া বাড়বে। ফলে যাত্রীদেরও সমস্যার মুখে পড়তে হবে।” চিঠিতে এও লেখা হয়, “বিমানসংস্থার পাইলট ও ইঞ্জিনিয়াররা প্রায় তিনমাস ধরে বেতন পাননি। বাকি সবাই বেতন পেয়েছেন। আমরা বারবার সংস্থাকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। এই অবস্থার ফলে পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পাইলটরা নিজেদের কর্তব্য করছেন। বিমান ওড়াচ্ছেন তাঁরা। ফলে এখনও বিমানসংস্থা চলছে। কিন্তু এ ভাবে আর কতদিন? পাইলটরা মানসিকভাবেও বিধ্বস্ত। এই অবস্থায় যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে কোনও সমস্যা হোক, সেটা কোনও ভাবেই আমরা চাই না।”
নরেশ গোয়েলের এই সংস্থা গত ২৫ বছরে সবথেকে খারাপ আর্থিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার দেনায় চলছে জেট এয়ারওয়েজ। ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক, সাপ্লায়ারদের কাছে অনেক টাকা দেনা হয়ে গিয়েছে। এর ফলে ৪৫০ বিমান থেকে কমিয়ে বর্তমানে ১৫০ বিমান চালাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজ। প্রায় ৩০০ বিমানকে বসিয়ে রাখা হয়েছে।