সংক্রমণের চেন ভাঙতে জারি হচ্ছে জনতা কার্ফু, যে সমস্ত পরিষেবাগুলি থাকছে খোলা

নিউ নর্মালেও তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ। মারণ ব্যাধির থাবায় বিপর্যস্ত গোটা দেশ। দেশের মধ্যে সংক্রমণের শিখরে মহারাষ্ট্র। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে প্রতিদিনই এই রাজ্যে হু-হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে মৃতের সংখ্যাও। এই অবস্থায় সারা দেশের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের বিস্তারে লাগাম টানতে তৎপর মহারাষ্ট্র সরকার।

কারণ, দেশের মধ্যে করোনা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে মহারাষ্ট্রে। সংক্রমণে লাগাম টানতে মাহারাষ্ট্রে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। এক বিবৃতি জারি করে এমনই জানিয়েছে মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে সরকার।

বিবৃতিতে মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে লকডাউনে সায় নেই প্রশাসনের। তবে করোনা পরিস্থিতি বিচার করে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এই ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে মহারাষ্ট্রের বাসিন্দাদের। বুধবার রাত আটটা থেকে জারি হবে ১৪৪ ধারা। ১৫ মে পর্যন্ত এই নিয়ম বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে এক জায়গায় পাঁচ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। যে কোনও হোটেল বা দোকান থেকে জিনিস কিনে আনা যাবে সকাল সাতটা থেকে রাত আটটার মধ্যে।

ফলে সংক্রমণে লাগাম টানতে ১৫ দিনের জন্য গোটা রাজ্যে কার্ফু জারির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। বুধবার রাত ৮ টা থেকে জারি হচ্ছে এই কার্ফু। জরুরী ভিত্তির যাবতীয় পরিষেবা ছাড়া রাজ্যজুড়ে জারি হচ্ছে ১৪৪ ধারা। ১৮৯৭ সালের মহামারী আইন ও ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের উল্লেখ করে রাজ্যজুড়ে জারি করা কার্ফুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্রেক দ্য চেন’। ১৭ পাতার নির্দেশিকা জারি করে বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে কার্ফু সম্পর্কে। ১৪ এপ্রিল রাত ৮ টা থেকে ১ মে সকাল ৭ টা পর্যন্ত গোটা মহারাষ্ট্র রাজ্য জুড়ে কার্ফু বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে ।

এই বিষয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে প্রকাশিত একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে যে ,

১. রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন ধরণের সমাবেশ ঠেকাতে এবং সংক্রমণের চেন ভাঙতে ১৪৪ ধারা জারি করা হবে।

২. উপযুক্ত কারণ ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না এই কার্ফু চলাকালীন সময় পর্যন্ত।

৩. এই সময় জরুরি পরিষেবা ব্যাতীত সমস্ত পাবলিক প্লেস, শপিং মল, সিনেমা হল, পার্ক, বার, হোটেল রেস্তরাঁ বন্ধ থাকবে।

৪. গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করেই তবেই ড্রাইভার, বাড়ির পরিচারিকাদের নিজ নিজ এলাকার মধ্যে কাজ করার অনুমতি মিলবে।

তবে জনতা কার্ফু চলাকালীন যে জিনিস গুলি খোলা থাকবে-

১. হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক, ভ্যাক্সিন প্রদান কেন্দ্র, মেডিকেল বীমা অফিস, ফার্মাসি, ফার্মাসিউটিকাল সংস্থা এবং আপৎকালীন পরিষেবার জন্য কিছু যানবাহন চলবে।

২.ভ্যাক্সিন, স্যানিটাইজার, মাস্ক, চিকিৎসার সরঞ্জাম এবং পশুখাদ্যের দোকান খোলা থাকবে।

৩.মুদির দোকান, সবজির দোকান, ফলের দোকান ডেয়ারি, বেকারি গুলি খোলা থাকবে।

৪. এটিএম, পোস্ট অফিস, ব্যাংক খোলা থাকবে।

৫. জনতা কার্ফু সম্পর্কিত নির্দেশিকা অনুসারে মহারাষ্ট্র সরকার গণপরিবহন পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। তবে এর জন্যও কিছি সরকারও বিধিনিষেধ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেগুলি সবাইকে কঠোর ভাবে অনুসরণ করতে হবে। নাহলে মোটা অঙ্কের জরিমানা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.