কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত বিরোধী একাধিক পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই নিয়েছে পাকিস্তান। এ বার জম্মু-কাশ্মীর ও রাজস্থান সীমান্তে নাশকতা চালানোর চেষ্টা করছে তারা, এমনটাই রিপোর্ট গোয়েন্দা সূত্রে। জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই এই দুই সীমান্তে প্রচুর পরিমাণ পাক সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকী এই কাজের পরিকল্পনার জন্য পুলওয়ামা হামলার মাস্টারমাইন্ড জইশ প্রধান মাসুদ আজহারকে গোপনে জেল থেকে বের করে আনা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, শিয়ালকোট-জম্মু সেক্টর ও রাজস্থানে কিছু একটা বড় নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান। তাই ইতিমধ্যেই সেনা মোতায়েন করছে তারা। এইজন্য এই দুই সীমান্তে থাকা ভারতীয় জওয়ানদের ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, যে কোনও মুহূর্তে হামলা হতে পারে। প্রতিটা মুহূর্তে প্রস্তুত থাকতে হবে।
গত শুক্রবার পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, কাশ্মীরের উপর থেকে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস তুলে নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কাশ্মীরের জনগণের জন্য যতটা করা যায়, পাকিস্তান করবে। দু’দেশের মধ্যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য আন্তর্জাতিক কমিউনিটি দায়ী থাকবে বলেও দাবি করেছেন ইমরান। পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া বলেছেন, এর আগেও কাশ্মীরের জন্য পাকিস্তান রক্ত ঝড়িয়েছে। এ বারেও শেষ গুলি, শেষ সেনা ও শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত কাশ্মীরের জন্য লড়াই চালাবেন তাঁরা।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ ই মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারকে গোপনে জেলের বাইরে বের করে আনা হয়েছে বলেও গোয়েন্দা সূত্রে খবর। জানানো হয়েছে, মাসুদকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হামলার পরিকল্পনার। এই মাসুদকেই পুলওয়ামা হামলার পর আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে নিজেদের হেফাজতে নিতে বাধ্য হয়েছিল পাক পুলিশ। এ ছাড়াও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনগুলোও নিজেদের কাজ শুরু করে দিয়েছে বলেই খবর।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কাশ্মীরের উপর থেকে যে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস তুলে নেওয়া হবে, সে ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর। তাদের ইতিহাসে এটা সবথেকে বড় ব্যর্থতা। তাই বদলা নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আইএসআই।
এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে, সীমান্তে সেনা মোতায়েন শুধুমাত্র একটা সাজানো ঘটনা। ভারতীয় সেনাকে অন্যদিকে বিভ্রান্ত করে মাসুদ আজহারকে দিয়ে অন্যভাবেও হামলা চালাতে পারে পাকিস্তান। সরকারের ফোকাস জম্মু-কাশ্মীরের মধ্যেই রেখে দেশের ভিতরেও হামলা চালানোর পরিকল্পনা করতে পারে পাকিস্তান, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই ভারতের সবদিকের সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে কড়া পাহাড়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে খবর।
ভারতের জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, প্রায় আড়াইশো জঙ্গি সীমান্তের উপর থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত নিজে গিয়ে সরেজমিনে সীমান্তের সুরক্ষা বন্দোবস্ত দেখে এসেছেন। কোনও দিকে ফাঁক রাখতে চাইছে না নয়াদিল্লি। ইসলামাবাদের সব পরিকল্পনা ব্যর্থ করতে তৎপর তারা।