পুলওয়ামার আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার পরবর্তীতে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে জয়েশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি ঘাঁটিতে বিমান হামলার সময় ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) মনোনীত ছয়টি লক্ষ্যমাত্রার পাঁচটিতে সফলভাবে আঘাত হানে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সুত্র জানাচ্ছে ।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আইএএএফ লাকোটের লক্ষ্যমাত্রা আঘাত করার জন্য ইসরায়েলি আকাশ-থেকে-ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র ‘ক্রিস্টাল মেজ’ ব্যবহার করতে চেয়েছিল, কিন্তু প্রত্যাঘাতের সময় এলাকাটিতে ভারী মেঘের কারণে লক্ষ্য সরাসরি চালকের প্রত্যক্ষ গোচর হয়নি বলে সেটি ব্যবহার করতে পারেনি। আইএএফ যুদ্ধ বিমানগুলি মিশন চলাকালীন স্পাইস ২০০০ বোমা সহ ক্রিস্টাল মেজ এজিএম ১৪২ সহ সুসজ্জিত ছিল।
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম স্থানাঙ্কগুলি ব্যবহার করে ক্রিস্টাল মেজ তার লক্ষ্যকে সয়ংক্রিয় ভাবে খুঁজে পায়। কিন্তু লঞ্চ করা বিমানটির পাইলটকে বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র অস্ত্রের মধ্যে একটি ইলেকট্রনিক তথ্য-লিঙ্ক ব্যবহার করে হাতেনাতে চালানোর প্রয়োজন হয়।
এনডিটিভির একটি সূত্র উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ” ক্রিস্টাল মেজ হামলার শেষ পর্যায়ে পাইলটের সঙ্গে লক্ষ্য বস্তুর সরাসরি যোগাযোগ প্রয়োজন”।
ক্ষেপণাস্ত্রটি সন্ত্রাস ঘাঁটিগুলির পরিকাঠামোর দৃশ্যমান ধ্বংসের কারণে কেবলমাত্র উপকারী নয় তার সাথে লক্ষ্যগুলি আঘাত করার লাইভ ভিডিও ফিড করতে ও সক্ষম।
দ্য ক্রিস্টাল মেজ একটি স্ট্যান্ড-অফ রেঞ্জ ক্ষেপণাস্ত্র, একারণে বিমানটিকে লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি আসতে হয় না। ভারত ২০০৫ সাল নাগাদ-ইজরায়েল থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি পেয়েছিল।
আইএএফ এর তরফে দাবি করে বলা হয় যে বালাকোটের প্রত্যাঘাতে লক্ষ্যমাত্রা সফলভাবে আঘাত করেছিল। তবুও কিছু বিশ্লেষক প্রশ্ন তুলেছেন, স্পাইস -২০০০ বোমাগুলিতে ভুল তথ্য সরবরাহের কারণে লক্ষ্যগুলি ভ্রষ্ট হয়ে থাকতে পারে।আইএএফ যদি ক্রিস্টাল মেজ ব্যবহার করেছে তবে তার প্রমাণের ভিডিও ফুটেজ থাকবে। তার প্রমান হিসাবে কিছু সাংবাদিককে অন্তত একটি উচ্চ-রেজোলিউশনের চিত্র দেখানোর মাধ্যমে সফলভাবে লক্ষ্যগুলি আঘাত করার দাবির প্রমান হবে।
জি নিউজ এর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রটি ৮০ কিমি দূর থেকে লক্ষ্যে নিক্ষেপ করা যেতে পারে। ক্রিস্টাল মেজ মিসাইলের “মিডকোর্স নির্দেশিকাটি জন্য একটি ইনারসিয়াল মেসারমেন্ট ইউনিট (আইএমইউ) আছে। তার টার্মিনাল ফেজটি লক্ষ্যে আঘাত হানার জন্য একটি ইমেজিং ইনফ্রারেড (আইআইআর) বা টেলিভিশন (টিভি) যন্ত্র ব্যবহার করে থাকে।” “আইআইআর” -এর সাথে লাগানো ক্ষেপণাস্ত্র ‘আঘাত হানো-ও-ভুলে যাওয়’ নীতির উপর কাজ করে, অপরদিকে টিভি সংস্করণটি ‘আঘাত -ও-আপডেট’ মোডে কাজ করে এতে পাইলট একটি গোষ্ঠী বদ্ধ লক্ষ্য থেকে সহজেই নির্দিষ্ট একটি বেছে নিতে পারে।