হাওড়ায় সোশ্যাল মিডিয়ার কন্ঠ রোধ কি নৈতিক কাজ?

থমথমে হাওড়ার সলপ। ভষ্মীভূত একাধিক দোকান। মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। গতকাল হাওড়ার একাধিক এলাকায় অশান্তি তৈরি হয়। অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের উপরেও হামলা চালানো হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে রাতের দিকে হাওড়াতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেশ কিছু ট্রেন বাতিল হয়ে যায়। ফলে হাওড়া স্টেশন সহ একাধিক জায়গায় প্রবল বিপাকে পড়েন যাত্রীরা।
উলুবেড়িয়া নরেন্দ্র মোড়ের কাছে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বুথ এবং ভ্যানে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়। জাতীয় সড়কের ওপর তা জ্বলতে থাকে। উলুবেড়িয়া, পাঁচলায় দফায় দফায় অবরোধ করা হয়। অভিযোগ, হাওড়া জেলার ডোমজুড থানা আক্রমণ করে বিক্ষোভকারীরা।

শুক্রবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ থানা লক্ষ্য করে বড় বড় ইঁট এবং পাথর ছুড়তে থাকে। ভাঙচুরও চালাযনো হয়। পুলিশ পাল্টা লাঠিচার্জ করে এবং ১২ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১২ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়। সলপে বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এদিন এই সব ঘটনার জেরে প্রবল আতঙ্ক ছড়ায় মানুষের মনে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটা দোকানও। দমকলকে পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পেতে হয়। সেখানে প্রচুর কাচ, ভাঙা টিউবের অংশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর পাশাপাশি বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে হাওড়া শহরে জাতীয় সড়কের ওপর বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। রেলের ট্র্যাকের ওপর টায়ার জ্বালিয়ে রেল পরিষেবা অব্যাহত হাওড়া দাসনগর স্টেশন ছবি ধরা পড়েছে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে ট্রেন পরিষেবা চালু হবে। সলপে পুলিশের ওপর বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। চেঙ্গাইলেই রেল অবরোধ করা হয়। ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। এর ফলে বৃদ্ধ , শিশু এবং চিকিৎসারত বহুজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘ পথ অতিক্রমকারীরা চরম সমস্যায় পড়েন।

এরউপর আবার ইন্টারনেট বন্ধ হওয়া অনেকটা গোদের উপর বিষফোঁড়ার কাজ করে। নেট থেকে ক্যাব বুকিং করেও মানুষ যন্ত্রনা থেকে নিস্তার পায় নি। ওষুধ এবং অন্যান্য পরিষেবা থেকে ব্যাহত হচ্ছে মানুষ। ইন্টারনেট বন্ধ হলেই যদি সমস্যার সমাধান হত তবে কেন বার বার একই ঘন্টার পুনরাবৃত্তি এখনো হয়ে চলেছে হাওড়ায়। ইন্টারনেট বন্ধ করে সোশ্যাল মিডিয়ার কন্ঠ রোধ করে প্রশাসন কাদের সুবিধা করে দিচ্ছে? ধূলাগড়ের সময়েও একই ভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে অকথ্য অত্যাচার চালানো হয় সাধারণ মানুষের উপর, ফলে অনেকেই পালিয়ে গেছে। আজ ধুলাগড় দুষ্কৃতি কবলিত। একই ঘটনা হাওড়ায় পুনরায় ঘটাতে চাইছে সরকার? নেট বন্ধ করে ঠিক কাদের সুবিধা করে দিল প্রশ্ন ওঠে বার বার।

এই যে দুষ্কৃতকারীরা কলকাতা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে তান্ডব চালালো তাদের আড়াল করে রাখা একরকম কলকাতার মানুষকে অপ্রস্তুত করে রাখা। এমনি বিক্ষোভ তসলিমা নাসরিনের সময় পার্কসরকাস দেখিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ার কন্ঠ রোধ কি নৈতিক কাজ? সাধারণ মানুষ কি বলে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.