ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী মুসলিম-আদিবাসী-দলিত ঐক্যের বার্তা নিয়ে বামপন্থীদের মতোই স্বপ্নের ফেরি করে বেড়ালেও কার্যত পশ্চিমবঙ্গে আদিবাসীরাই কিন্তু প্রতিনিয়ত শোষণের শিকার হয়ে চলেছে।
শোষণের এমনই এক ঘটনার জন্য শিরোনামে এবার আউশগ্রাম।
ইতিপূর্বে লাভপুরে লাভ জেহাদের মাধ্যমে ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ আনা হয় হিন্দু সংহতির পক্ষ থেকে। ওই সংগঠনের অভিযোগ মুসলিম ‘লাভ জেহাদিরা’ সাঁওতাল বনবাসী এক মেয়েকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে জোর করে বিয়ে করে ধর্ম পরিবর্তনের চেষ্টা করে। অসহায় ও গরিব মেয়েটির পরিবারের লোকজন বিচার চেয়েও আজ পর্যন্ত্য কোনো সুরাহা হয় নি বরং অভিযুক্ত ১৩ জনকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যে গ্যাং-রেপের মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে দক্ষিণপন্থী সংগঠনটির অভিযোগ।
বুধবার আদিবাসী শোষণের আরেক ঘটনা সামনে আসে। বিবরণে প্রকাশ মাঠে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে এক মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টায় জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় নয়ন শেখ (২২)।
স্থানীয়রা জানায়, মহিলার চিৎকার শুনে ছুটে এসে ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। উত্তম মাধ্যম খেয়ে আহত অবস্থায় হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় শেখের।
পুলিশের এক সূত্র জানায়, আউশগ্রামের অমরাগড়ের বনপাড়ার বাসিন্দা এক চল্লিশোর্ধ্ব মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে শেখ।
ঘটনার বিবরণে আরো জানা যায় বুধবার দুপুর দেড়টা নাগাদ মাঠে কাজ সেরে সুনসান গ্রামের রাস্তা ধরে একাই বাড়ি ফিরছিলেন তিনি, আর ঠিক তখন সুযোগ বুঝে সুয়াতা গ্রামের বাসিন্দা নয়ন শেখ বদ উদ্যেশ্যে ওই মহিলাকে টানতে টানতে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে সে।
ওই অসহায় মহিলা নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে মহিলাকে প্রচণ্ড মারধরও করে সে। নির্মম ভাবে ওই মহিলার চিৎকার রোধ করার জন্য রাস্তার পাথরকুচি ওই মহিলার মুখে ঢুকিয়ে দেয় সে। মহিলার চিৎকার শুনে আশপাশ থেকে কয়েক জন ছুটে এসে নয়নকে ধরে ফেলে।
স্বভাবতই ক্ষোভ ছড়িয়ে পরে ওই অঞ্চলে এবিং বনপাড়ার বাসিন্দারা শেখকে গণপ্রহার করেন। জঙ্গল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই মহিলাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ।
নিহত শেখ সমাজবিরোধী ছিল বলে জানা যায়। পরিবারের লোকজিন জানিয়েছে, নয়ন শেখ বিবাহিত হলেও আট-ন’মাস আগে তার স্ত্রী-র সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। নয়নের মা বেগম বিবি স্বীকার করেন , ‘‘আমার ছেলের মদ-গাঁজার নেশা ছিল।’’