সকালে জাপানের রাজকুমার, বেলা গড়াতেই মোদীর আগমনে ভুটান আপ্লুত

পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। তাই সাজো সাজো রব। ভুটানবাসীর কাছে সপ্তাহ শেষের দিনটা বেশ জমজমাট থাকে। তায় আবার আসছেন দুই দেশের ভিভিআইপি অতিথি।

শনিবার সকালে শান্ত-ঠাণ্ডা বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিবহুল বিমানবন্দরে এসে পৌঁছলেন প্রথম রাজকীয় অতিথি-জাপানের ভবিষ্যৎ রাজা ফুমিহিতো তাঁর স্ত্রী কিকো ও তাঁদের পুত্র রাজকুমার হিশাহিতো । দুই বৌদ্ধ দেশের রাজপরিবারের এই সম্পর্ক দীর্ঘ সময়ের।

ভুটানের সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, গত মে মাসে জাপানের সম্রাট হন নারুহিতো। তাঁর রাজ্যাভিষেকের পর ক্রাউন প্রিন্স তথা যুবরাজ ফুমিহিতো জাপানের সিংহাসনে আগামী উত্তরাধিকারী। তাঁরই পুত্র হিশাহিতো তার পরে জাপ সম্রাট হবেন। রাজকীয় সফরেই ভুটান এসেছেন তাঁরা। পারো বিমান বন্দরে তাঁদের স্বাগত জানান ভুটানের রাজপরিবারের সদস্যরা। তারপর বিশেষ মর্যাদায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় থিম্পু রাজপ্রাসাদে।

এ তো গেল সকালের পর্ব, বেলা গড়াতেই পারো বিমান বন্দরে অবতরণ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে আসা বিমান। পারোতেই মোদীকে প্রথাগতভাবে স্বাগত জানিয়েছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং। সেখানেই রয়্যাল ভুটান আর্মির তরফে মোদীকে সেনা সম্মান জানানো হয়।

পারো থেকে থিম্পু যাবেন মোদী। এখানে বিখ্যাত তাশিচো জং প্রাসাদে তাঁকে স্বাগত জানাবেন ভুটানের বর্তমান রাজা তথা দেশের সর্বচ্চো ক্ষমতার অধিকারি জিগমে খেসর নামগিয়াল ওয়াংচু ও রানি জেতসুন পেমা। সম্প্রতি রাজা নিয়ন্ত্রিত গণতান্ত্রিক দেশ ভুটানে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। ক্ষমতায় এসেছেন ড. লোটে শেরিং। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই প্রথম বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন নয়াদিল্লি। ১৯৪৯ সালে থেকে চলে আসা ভারত ভুটান বন্ধুত্বের চুক্তি মেনে থিম্পু সবসময়ই নয়াদিল্লির বন্ধু। সেই রেশ ধরেই ভুটানি প্রধানমন্ত্রী সফর করেন।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের রেশ ধরে এবার ভুটান সফরে মোদী। তাঁর সফর ঘিরে থিম্পু, পারো সহ পাহাড়ি দেশটির সর্বত্র জারি হয়েছে কড়া নিরাপত্তার বলয়। রাজধানী থিম্পুতে ৫ স্তরীয় নিরাপত্তার বলয় তৈরি হয়েছে। ভুটানের প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিন। কূটনৈতিক মহলের ধারণা, নতুন সরকার ভুটানে ক্ষমতায় আসার পর বেজিং চাইছে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে। ভুটানের অবস্থান এখনও ভারতের পক্ষেই।

চিন-ভুটান-ভারতের মধ্যে থাকা ডোকলাম ভূখণ্ড নিয়ে তীব্র সীমান্ত উত্তেজনার পর এটাই প্রথম মোদীর সফর। থিম্পু ও নয়াদিল্লির বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, মোদীর সফরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পাদিত হবে। তাতে ভুটানের উন্নয়নের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। জলবিদ্যুৎ শক্তির রফতানি বাড়তেও উদ্যোগী হবে ভুটান সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.