আফগানিস্তান (Afghanistan) থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে ক্লান্ত আমেরিকা। ফের হারানো জমি উদ্ধার করতে কোমর বেঁধে লড়াই শুরু করেছে তালিবান। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই পটপরিবর্তনে রীতিমতো উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। এহেন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার (Russia) বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তাঁদের আলোচনায় উঠে আসে আফগানিস্তান প্রসঙ্গ।
শুক্রবার দীর্ঘক্ষণ আলোচনা শেষে যৌথবিবৃতি জারি করেন লাভরভ ও জয়শংকর। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি কথা হয়েছে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য আফগানিস্তান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মনে করি ওই অঞ্চলে হিংসা থামানো আপাতত সবচেয়ে জরুরি কাজ।” তিনি আরও বলেন, “যদি আফগানিস্তান ও তার আশপাশে শান্তি স্থাপন করতে হয়, তাহলে ভারত ও রাশিয়াকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ওই দেশে এখনও পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক হওয়া উন্নতি ধরে রাখতে হবে।” বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ফৌজ সরে গেলে তালিবানের কাবুল দখল সময়ের অপেক্ষা মাত্র। আর তেমনটা হলে রীতিমতো বিপাকে পড়বে ভারত। কারণ, সেখানে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে নিশানা করবে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি। আফগান ভূম থেকে তালিবানের মদতে কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেবে আইএসআই।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ৯/১১ হামলার পর ‘মিশন আফগানিস্তান’ শুরু করে মার্কিন ফৌজ। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ জুনিয়রের নেতৃত্বে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে আমেরিকা। আফগান মিলিশিয়াদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মাস খানেকের লড়াইয়ের পর তালিবানকে কাবুল থেকে বিতাড়িত করে মার্কিন ফৌজ। কিন্তু তারপর পরিস্থিতি পালটেছে। প্রায় দুই দশক কেটে গেলেও তালিবানের বিনাশ সম্ভব হয়নি। আর লাগাতার যুদ্ধে অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে ওয়াশিংটন। ফলে তালিবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে এবার দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে হোয়াইট হাউস। আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানিয়েছিলেন যে সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার শেষ হবে।