প্রায়শই আমাদের দেশের মৎস্যজীবিরা গভীর সমুদ্রে দিশা হারিয়ে অন্য দেশের জলসীমায় ঢুকে পড়েন। তারপর অন্যদেশের কর্তৃপক্ষর হাতে জোটে কারাবাস থেকে শুরু করে বহুতর লাঞ্ছনা। এরকম অনভিপ্রেত ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য নতুন যন্ত্র তৈরি করলো ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের লাগোয়া গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ভারতীয় মৎস্যজীবিদের আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা অতিক্রম করতে বাধা দেওয়ার জন্য, ইসরো একটি ডিভাইস তৈরি করেছে যা ভারতের নৌকাগুলি সনাক্ত করে তাদের সতর্ক করবে। নৌবাহিনীর আধিকারিকরা সংসদীয় কমিটির কাছে এই তথ্য দিয়েছেন। কমিটি সম্প্রতি সংসদে তার রিপোর্ট পেশ করে ।
রিপোর্ট অনুসারে নৌ কর্মকর্তারা প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিকে বলেন, ভারতের আন্তর্জাতিক জলসীমা শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সঙ্গে রয়েছে। আমাদের দেশের সেই সমস্ত নৌকোতে অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (এআইএস) লাগানো হয়েছে যা ২০ মিটার বা তার বেশি উঁচু ।
তবে কিছু দুষ্টু লোক আন্তর্জাতিক জল সীমা অতিক্রম করে। এরা ২০ মিটারের কম উচ্চতাবিশিষ্ট নৌকা ব্যবহার করে। তাই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) ও ভারতীয় নৌবাহিনী একযোগে একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ।
এতে বলা হয়েছে, ইসরো এখন একটি মডিউল তৈরি করেছে যার অধীনে একটি ট্রান্সপন্ডার ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে যা এই নৌকাগুলির গতিপথ ও অবস্থান নির্ণয় করতে সহায়তা করে এবং এ বিষয়ে তাদের একটি বার্তাও প্রেরণ করে ।
নৌ কর্মকর্তারা সংসদীয় কমিটিকে বলেন যে এর মাধ্যমে সরকার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবিদের আবহাওয়া সম্পর্কিত বার্তাও দেওয়া সম্ভব এবং ঝড়ের সম্ভাবনা থাকলে তাদের সতর্ক করা যেতে পারে। এর আরও একটি পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত সুবিধাও রয়েছে যা থেকে এটি নির্ধারণ করা যায় যে তারা আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করছে কিনা। যদি তারা সীমান্ত অতিক্রম করে তবে তাদের কাছে বার্তা যাবে। ঐ রিপোর্ট অনুসারে, গুজরাট ও তামিলনাড়ুতেও ৫০০ জেলেদের নৌকায় এটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এবং সেই পরীক্ষা সফল। এখন বাকি রাজ্যকেও এর আওতায় আনা হবে। প্রসঙ্গত আমাদের দেশে মৎস্যজীবিদের প্রায় ২,৪৬,০০০নৌকা রয়েছে যা ২০ মিটারেরও কম লম্বা ।