হিন্দু পুরাণ থেকে জানা যায় অমরত্ব লাভের প্রত্যাশায় দেবতা ও অসুররা অমৃতের খোঁজে সমুদ্র মন্থন করেছিলেন। ধরিত্রী হয়েছিল উথালপাথাল। অমৃতের অধিকারী অবশেষে দেবতারাই হয়েছিলেন। এখন হিন্দু পুরাণ থেকে অনুপ্রেরনা নিয়ে ‘অমৃত’ লাভের লক্ষ্যে সমুদ্রের গভীরে জলযান পাঠাচ্ছে মোদী সরকার। আর এই কাজে ভারত সরকারকে সাহায্য করবে ISRO।
কী এই আধুনিক অমৃত যার খোঁজে এত আয়োজন? এককথায় বহুমূল্য খনিজ পদার্থ। যা মেটাতে পারে বিপুল শক্তি ও শিল্পক্ষেত্রের চাহিদা। কমাতে পারে আরব থেকে আমদানিকৃত পেট্রোল ডিজেলের উপর নির্ভরতা। ভারতকে প্রকৃত অর্থেই গড়ে তুলতে পারে আত্মনির্ভর। একটি দেশের কাছে যা প্রায় অমরত্ব লাভেরই সমান।আসলে মোদী সরকার ইউনিয়ন কেবিনেট ‘ডিপ ওসেন মিশন’ নামে এক প্রজেক্টকে মঞ্জুরি দিয়েছে। মোদী সরকারের ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক এই প্রকল্পে ৫ বছরের জন্য ৪০৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
সমুদ্রগর্ভে যে ৭৫০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সমীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেখানে আনুমানিক ৩৮০ মিলিয়ন টন খনিজ থাকতে পারে। যার মধ্যে সিংহভাগ লোহা, নিকেল, কোবাল্ট ও তামা। এছাড়াও ১০০০ মিটার গভীরতায় সমুদ্রের জলের তাপমাত্রার হেরফেরকে কাজে লাগিয়ে শক্তি উৎপাদন করার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও নিয়েছে সরকার।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে একটি বিশেষ জলযানে তিন বৈজ্ঞানিককে সমুদ্রের ৬০০০ মিটার গভীরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বিশেষ প্রযুক্তি এখনও অবধি মাত্র পাঁচটি দেশের হাতে রয়েছে- আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও জাপান। ভারত সেই অভিজাত তালিকায় ষষ্ঠ সংযোজন। খনিজ উত্তোলনের পাশাপাশি ‘নীল অর্থনীতির’ নীল নকশাও বানিয়ে ফেলেছেন মন্ত্রকের অফিসাররা। সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যকে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগিয়ে বিপুল কর্মসংস্থান ও আয়ের পথ খুলে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’এর পথে এগিয়ে চলতে বড়ো সাফল্য পাবে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।