রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ভারতীয় অর্থনীতি এবং অস্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে সাউথ ব্লকে। রাশিয়া থেকে অস্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে এ বার আর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কোপ যে কাটানো যাবে না তা-ও আর অস্পষ্ট নয়। এই অবস্থায় দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর এবং স্বাবলম্বী হওয়ার দিকে জোর দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, অস্ত্র উৎপাদনের প্রশ্নে আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য যাবতীয় প্রয়াস শুরু করে দিতে হবে। পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সাময়িক ভাবে ইউক্রেন থেকে ভারতীয় দূতাবাস গুটিয়ে পোল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ভারত।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে একাধিক বার নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক ডেকেছেন মোদী। প্রাথমিক ভাবে নয়াদিল্লির চিন্তা ছিল ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে ইউক্রেন থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা। সেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে এ বার কূটনৈতিক, কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। যুদ্ধের জেরে জ্বালানির দাম আকাশছোঁয়া হলে তার সরাসরি প্রভাব ভারতের অর্থনীতিতে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ৭০ শতাংশ এখনও আমদানি হয় রাশিয়া থেকেই। এই নির্ভরতা কমাতে বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে ভারত।
এ দিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা প্রমুখ। ইউক্রেন পরিস্থিতির পাশাপাশি দেশের সীমান্ত এবং সমুদ্র নিরাপত্তা সম্পর্কেও আলোচনা হয়।
বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আজ একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘ইউক্রেনে পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি ঘটছে। দেশের পশ্চিম প্রান্তে আক্রমণ চলছে। এই কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আপাতত সাময়িক ভাবে ভারতের দূতাবাস ইউক্রেন থেকে সরিয়ে পোল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হবে। এর পরে অবস্থা কেমন দাঁড়ায় তা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’