কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর এই প্রথম মুখোমুখি বৈঠকে বসছে ভারত ও পাকিস্তান। মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৩শে মার্চ বৈঠকে বসতে চলেছে দুই দেশ। আলোচ্য বিষয় সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি। নয়াদিল্লিতে এই বৈঠক হবে।
উল্লেখ্য কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর দুই দেশের সম্পর্কের শৈত্য আরও বেড়ে যায়। পরে কেন্দ্র দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাগ করে গোটা এলাকাকে। প্রথম লাদাখ ও দ্বিতীয় জম্মু-কাশ্মীর। এরপর আর কোনও আলোচনায় বসেনি নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ।
বার্ষিক আলোচনায় অংশ নিতে সোমবারই নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন পাকিস্তানের সাত সদস্যের দল। পাক সিন্ধু কমিশনার সৈয়দ মহম্মদ মেহের আলির নেতৃত্বে এই টিম এসে পৌঁছেছে ভারতে। আজই বৈঠকে বসবেন ভারতীয় প্রতিনিধি ও পাকিস্তানের সিন্ধু কমিশনের বিশেষ টিম।
ভারতীয় সিন্ধু কমিশনের টিমকে নেতৃত্ব দেবেন পি কে সাক্সেনা। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের উপদেষ্টারা, সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি ও ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশনের উচ্চপদস্থ কর্তারা।
সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর এই বৈঠক হওয়ার কথা। একবার ভারতে, একবার পাকিস্তানে এই হিসেবে বৈঠকে বসার কথা দুই দেশের। বৈঠক শুরুর আগে পি কে সাক্সেনা বলেন ভারত এই চুক্তি ও বৈঠকের মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বাতাবরণে যাতে বৈঠক হয়, তার জন্য সচেষ্ট নয়াদিল্লি।
ভারতের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়ে সাক্সেনা বলেন আলোচনায় মতবিরোধ কাটানো সম্ভব। সেই চেষ্টাই করা হবে। উল্লেখ্য সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি নিয়ে শেষবার দুই দেশ বৈঠকে বসেছিল ২০১৮ সালের অগাষ্ট মাসে।
সোমবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী জানান, এই চুক্তির মধ্যস্থিত ইস্যুগুলি নিয়ে মিটিংয়ে আলোচনা হবে। চেনাব নদীর ওপরে তৈরি হতে চলা পাকাল ডাল ও লোয়ার কালনাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েও দুই দেশের মধ্যে কথাবার্তা হবে। পশ্চিমের নদীগুলিতে ভারতের প্রজেক্ট সম্পর্কে পাকিস্তানিকে জানানো হবে এই মিটিংয়ে। পাশাপাশি ভারতের বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্যও তাদের দেওয়া হবে।
২০১৮ সালের বৈঠকের পর থেকে ভারত জম্মু কাশ্মীর রিজিয়নে একাধিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রস্তাবনা রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে দুরবুক শোয়ক (১৯ মেগাহার্টজ), শানকো (১৮.৫ মেগাহার্টজ), নিমু চিলিং (২৪ মেগাহার্টজ), রংদো (১২ মেগাহার্টজ), রতন নাগ (১০.৫ মেগাহার্টজ)। এগুলির প্রতিটিই লেহ এলাকার জন্য।
কার্গিলের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে একাধিক প্রজেক্ট। মাংগদাম সাংগরা (১৯ মেগাহার্টজ), কার্গিল হান্ডারম্যান (২৫ মেগাহার্টজ), তামাশা (১২ মেগাহার্টজ)।