লাদাখে চিনা ফৌজ পিছু হঠলেও বিপদ কাটেনি। একইভাবে নিয়ন্ত্রণরেখায় ওঁত পেতে রয়েছে পাক সেনাবাহিনী। তাই দুই ফ্রন্টে শত্রুপক্ষের সঙ্গে একযোগে লড়াই চালাতে এবার সশস্ত্র মার্কিন ড্রোন কেনার কথা ভাবছে ভারত (India)।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলার অধিকার আছে ব্রিটেনের’, আজব যুক্তি শশী থারুরের]
শুক্রবার কোয়াড ব্লকের বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তখনই এনিয়ে আলোচনা হতে পারে। জানা গিয়েছে, আমেরিকার তৈরি ‘MQ-9B Predator’ ড্রোন কিনতে আগ্রহী ভারতীয় ফৌজ। কূটনৈতিক মহলের খবর, পাকিস্তান ও চিনের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে জলে ও স্থলে ও আকাশে শক্তিকে আরও মজবুত করতে চায় কেন্দ্র। সেই কারণেই, প্রথমবার কোনও মার্কিন কোনও মার্কিন কোম্পানি থেকে সশস্ত্র ড্রোন কেনার ভাবনাচিন্তা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তাদের মাথায়। তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে আপাতত তিরিশটির মতো সশস্ত্র ড্রোন কেনার কথা ভাবা হয়েছে বলে কূটনৈতিক মহলের দাবি। নতুন সরকার গঠনের পর এই মাসেই ভারতে আসতে পারেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন। তাঁর সফরেই এই ব্যাপারে প্রাথমিক কথা সেরে ফেলতে চায় দিল্লি। প্রসঙ্গত, বাংলায় Predator শব্দের অর্থ হচ্ছে শিকারি। মার্কিন ড্রোনটিও অত্যন্ত সফল শিকারি হিসেবেই পরিচিত। কোন শব্দ না করেই আকাশ থেকে আচমকা মিসাইল হামলা চালিয়ে শত্রুশিবিরে তাণ্ডব চালাতে পারে এই যানটি।
গত দশ বছরে মোদি সরকারের আমলে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের আমূল পরিবর্তন হযেছে। বিশেষ করে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজতে ইতিমধ্যেই আড়াইশো বিলিয়ন ডলার অর্থ খরচ করেছে মোদি সরকার। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, এরপরেও সীমান্তে স্বস্তি নেই। বিশেষ করে গালওয়ান পরবর্তী সময়ের পর লাদাখে দিল্লির উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বেজিং। তাই এই সশস্ত্র ড্রোন কিনে এক ঢিলে দুই পাখি মারার বার্তা দিতে চায় দিল্লি।
কূটনৈতিক মহলের দাবি, আমেরিকার সান দিয়েগো জেনারেল অ্যাটোমিক্স নামের ওই সংস্থার থেকে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এমকিউ নাইন প্রিডেটর ড্রোন কেনার ভাবনাচিন্তা করছে দিল্লি। যদিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক সূত্র দাবি করছে, এই ব্যাপারে এখনও কোনও সবুজ সংকেত মেলেনি সান দিয়েগোর কোম্পানি ও মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের থেকে। তবে কূটনৈতিক মহলের মতে, চিন ও পাকিস্তানকে টেক্কা দিতে কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না দিল্লি। তাই এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে মার্কিন এই কোম্পানির থেকে সশস্ত্র ড্রোন কিনতে পারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সশস্ত্র ড্রোন কেনার পরিকল্পনা কেন? মূলত চিনা নৌসেনার উপর নজরদারি বাড়াতেই এই সশস্ত্র ড্রোন কেনার ভাবনা। ভারতীয় নৌসেনায় এই ড্রোনকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা কার্যত পাকা। কারণ, আটচল্লিশ ঘণ্টা পর্যন্ত এক নাগাড়ে উড়তে পারে এই ড্রোন।