ডিজিটাল স্ট্রাইকের পর চিনের ওপর কুটনৈতিক চাপ তৈরি করা শুরু করল ভারত। হংকং সম্পর্কিত বিতর্কিত বিল পাশ নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনে (UN Human Rights Council) চিনের বিরুদ্ধে ‘নালিশ’ জানাল ভারত। মঙ্গলবার ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি লেজিসলেশন ফর হংকং’ (National security legislation for Hong Kong) শীর্ষক বিলটিতে স্বাক্ষর করেন চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং (Xi Jinping)। ফলে স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশটির ওপর বেজিংয়ের রাশ আরও মজবুত হয়েছে। আগে নিয়ম ছিল হংকংয়ে কেউ কোনও অপরাধ করলে তার বিচার হংকংয়ের আইন মোতাবেক সেখানেই হত। চিনা সররকারের নতুন আইন অনুযায়ী জাতীয় নিরাপত্তার অভিযোগে কোনও ব্যক্তি অভিযুক্ত হলে তাঁকে মূল চিনের মূল ভূখণ্ডে নিয়ে গিয়ে শাস্তি দেওয়া হবে।

এই বিল পাসের পরে রাষ্ট্রপুঞ্জে সরব হয়েছে ভারত। হংকংয়ে গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভ চরম আকার নিতে থাকায় সেখানকার ভারতীয়দের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গেই জেনিভায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রতিনিধি রাজীব কুমার চান্দের বলেন, “চিনের নতুন আইনে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে। এখানে বহু সংখ্যক ভারতীয়ের বাস। আমরা আশা করব এই বিষয়টা সঠিকভাবে ও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। গোটা পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে ভারত।” তাই অশান্ত হংকংয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টা খতিয়ে দেখার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জকে আবেদন করল ভারত।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্ত হয় হংকং। সেই সময় একটি চুক্তিতে বলা হয়েছিল আগামী ৫০ বছর স্ব-শাসিত ভাবে পরিচালিত হবে হংকং। ২০৪৭ সালে হংকং পুরোপুরিভাবে চিনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। কিন্তু, চিন অতদিন অপেক্ষা করতে নারাজ। যেনতেন প্রকারেণ বলপূর্বক হংকংয়ে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে এখন নানা অছিলায় সেখানকার নাগরিক জীবনে হস্তক্ষেপ শুরু করেছে শিং জিনপিংয়ের সরকার। কিন্তু, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়েছে চিন। লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় কুড়ি জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মির (People Liberation Army) জওয়ানদের হাতে। এখন সব রকম ভাবে চিনকে চাপে ফেলতে মরিয়া ভারত। মধ্যে চিনের ৫৯ টি নিষিদ্ধ করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ফাইভ-জি পরিষেবা চালু করতে ও চীনের প্রযুক্তির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। তারপরে চীনের ওপর কূটনৈতিক চাপ তৈরি করতে হংকং নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সরাসরি নালিশ জানাল ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.