রেকর্ড জয়ে রাঁচিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চুনকাম করল ভারত

রাচি: আম্পায়াররা চেষ্টা করেছিলেন তৃতীয় দিনের শেষেই রাঁচি টেস্টের সঙ্গে সঙ্গে এবারের মতো গান্ধী-ম্যান্ডেলা সিরিজের অধ্যায় শেষ করে দিতে। তবে শেষ বেলায় এলগারের কনকাশন পরিবর্ত থিউনিস ডি’ব্রুইন ও এনরিচ নর্ৎজে ভারতীয় স্পিনারদের ফাঁদে পা না-দেওয়ায় দিনের শেষ বেলায় বাড়তি কয়েক ওভার যোগ করেও কোনও লাভ হয়নি।

তৃতীয় দিনে নিষ্পত্তি না-হলেও চতুর্থ দিনের সকালে রাঁচি টেস্টের পাট চুকিয়ে দিতে ভারতীয় বোলাররা সময় নেন মাত্র দু’ওভার। ৮ উইকেটে ১৩২ রানের পর থেকে খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে যায় বাড়তি ১ রান যোগ করে অর্থাৎ ১৩৩ রানে। ভারত তৃতীয় টেস্টে জয় তুলে নেয় এক ইনিংস ও ২০২ রানের বিশাল ব্যবধানে। উল্লেখ্য, রাঁচিতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ভারত ৯ উইকেটে ৪৯৭ রান তুলে তাদের প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রথম ইনিংসে অল-আউট হয়ে যায় মাত্র ১৬২ রানে। পুণের মতোই রাঁচিতে বিরাট কোহলি ফলো-অন করতে বাধ্য করেন প্রোটিয়াদের। পুনরায় রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসও ধসে পড়ে অল্প রানে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এটি ভারতের বৃহত্তম টেস্ট জয়। এর আগে পুণে টেস্টের এক ইনিংস ও ১৩৭ রানে জয় ছিল প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ভারতের সবথেকে বড় টেস্ট জয়। রাঁচিতে সেই ব্যবধান আরও খানিকটা বাড়িয়ে নেয় টিম ইন্ডিয়া। রাঁচি টেস্টে জয়ের সুবাদে ভারত তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

প্রোটিয়াদের এই প্রথমবার টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল টিম ইন্ডিয়া। সেই সঙ্গে সিরিজ থেকে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বোচ্চ ১২০ পয়েন্ট ঘরে তুলল বিরাট কোহলির। দু’টি সিরিজের পর আপাতত ভারতের ঝুলিতে রয়েছে সর্বাধিক ২৪০ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট। ভারতই রয়েছে তালিকার শীর্ষে।

রাঁচিতে চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারে বল হাতে নেন মহম্মদ শামি। অতিরিক্ত হিসেবে একটি লেগ-বাই সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসেন অভিষেককারী শাহবাজ নদিম। ওভারের পঞ্চম বলে তিনি ফিরিয়ে দেন ডি’ব্রুইনকে। উইকেটের পিছনে ঋদ্ধিমান সাহা অনবদ্য ক্যাচ ধরেন। তৃতীয় দিনের শেষ বেলায় আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন বাংলার উইকেটকিপার। চোট যে গুরুতর নয়, তা বোঝা যায় এদিন তিনি নতুন করে মাঠে নামায়। ওভারের শেষ বলে নদিম লুঙ্গি এনগিডির ফিরতি ক্যাচ তালুবন্দি করেন।

কনকাশন পরিবর্ত হিসেবে ব্যাট করতে নেমে ডি’ব্রুইন দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন। এছাড়া অভিষেককারী জর্জ লিন্ডে ২৭ রান করে আউট হন। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের হয়ে সর্বাধিক ৩টি উইকেট নেন মহম্মদ শামি। ২টি করে উইকেট দখল করেন উমেশ যাদব ও শাহবাজ নদিম। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। রাঁচিতে কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি করা রোহিত শর্মা ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন। সিরিজ সেরার পুরস্কারও উঠেছে ৩টি শতরান করা রোহিতের হাতেই।

সৌজন্যে কলকাতা২৪x৭.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.