প্রায় ১২ ঘন্টা ধরে চলল বৈঠক। তবে বিশেষ কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে না এলেও ভারত চিন দুই দেশের আলোচনার ফোকাসে ছিল সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা। ভারতের পক্ষ থেকে নয়া উদ্যমে পূর্ব লাদাখ সীমান্তের একাধিক এলাকা, যেমন গোগরা, হট স্প্রিং, ডেপসাং থেকে চিনা সেনা সরানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য প্যাংগং থেকে ইতিমধ্যেই সেনা প্রত্যাহারের কাজ শেষ হয়েছে।
সেনার উচ্চপদস্থ কমান্ডাররা সকাল ১০টায় বৈঠকে বসেন। বৈঠক চলে রাত ৯.৪৫ মিনিট পর্যন্ত। প্যাংগং লেক থেকে দুই দেশের সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে ভারতের তরফ থেকে প্যাংগং ছাড়াও লাদাখের অন্যান্য সীমান্ত এলাকা থেকে চিনা সেনা সরানোর ওপর জোর দেওয়া হয়। ভারত জানিয়েছে গোগরা, হট স্প্রিং ও ডেপসাং এলাকাও খালি করে দিতে আগের মত। ২০২০ সালের মে মাসের আগের সেনা অবস্থানের চিত্রই ফের চাইছে ভার বলে সূত্রের খবর।
যদিও এবারের বৈঠকে সেই উত্তেজনা ও টানাপোড়েন অনেকটাই কম ছিল বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা পিটিআই। প্যাংগং ছাড়া যে সব এলাকায় এখনও চিনা সেনা মজুত রয়েছে, সেই বিষয় নিয়ে ফের আলোচনা চলবে বলে জানানো হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরা চলা টানাপোড়েন কাটিয়ে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপনে উদ্যোগী হয়েছে দুই দেশ। তাই বৈঠক ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যেই আলোচনা চলে।
সকাল ১০টায় ভারতীয় সীমান্ত চুশুল ও চিনের প্রান্ত মলডোতে এই বৈঠক হয়। এর আগে ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর মিলেছিল পিএলএ-র সেনার প্রায় ১০ হাজার ট্রুপ প্যাংগং লেকের দক্ষিণ পাড়ে অবস্থান করছে। রয়েছে ১০০টি ট্যাংক, ৫০টি ইনফ্যান্ট্ররি কমব্যাট ভেহিকল, আর্টিলারি ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। রেচিন লা পাসের কাছে সাজানো হয়েছিল অত্যাধুনিক ZTZ-99 ট্যাংক। ছিল ZTZ-88 ট্যাংক, ZTZ04A ইনফ্যান্ট্ররি কমব্যাট ভেহিকল, মর্টার, অ্যান্টি ট্যাংক অস্ত্র।
প্যাংগং লেকের উত্তর প্রান্তে চিনা সেনার ছয় হাজার ট্রুপ মোতায়েন করা ছিল। এইচকিউ-১৬ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, মধ্যম রেঞ্জের ভূমি থেকে আকাশ মিসাইল ও আর্টিলারি গান মজুত করা হয়েছিল। মূলত ফিঙ্গার সেভেনে এইগুলি মোতায়েন করা হয়। অন্যদিকে, প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে যেভাবে সেনা সাজিয়েছিল চিন, তা বেশি উদ্বেগজনক ছিল। এদিনের বৈঠকে ভারতের তরফে প্রতিনিধিত্ব করেন লেহর ১৪ কর্পসের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। চিনের তরফে ছিলেন মেজর জেনারেল লিউ লিন।