অতিমারির প্রকোপে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ধুঁকছে মহারাষ্ট্র। এত সহজে এর হাত থেকে নিস্তার মিলবে না বলে এ বার জানিয়ে দিল রাজ্যের সরকারই। বরং আগামী দু’মাসের মধ্যে রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। তাই আপাতত স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠাই লক্ষ্য বলে জানানো হয়েছে।
গত এক বছর ধরে দেশের সমস্ত রাজ্যের মধ্যে মহারাষ্ট্রেই করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানে দৈনিক সংক্রমণ ৬৫ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। ১০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে দৈনিক মৃত্যুও। তাতে সেখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার করুণ চিত্র উঠে এসেছে। হাসপাতালে যেমন শয্যার অভাব, তেমনই অক্সিজেনের আকাল দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের জোগানেই টান পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে নিজেই পরিস্থিতিতর ভয়াবহতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘অতিমারি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুলাই অথবা অগস্ট নাগাদ কোভিডের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে অন্তত অক্সিজেনের জোগানে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠাই লক্ষ্য আমাদের।’’
বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন তোপে। ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রত্যেক জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনাররাও যোগ দিয়েছিলেন ওই বৈঠকে। অক্সিজেনের জোগান বাড়াতে সেখানে ১২৫টি প্লান্ট বসানো নিয়ে আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে, যাতে মৃদু উপসর্গ থাকাকালীনই রোগীদের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যায়। একই সঙ্গে জেলাশাসকদের সতর্ক করে দেওয়া হয় যে, তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আগাম সতর্কতা পেয়েছেন সকলে। সেই মতো আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিপদের সময় অক্সিজেনে ঘাটতি নিয়ে কোনও অভিযোগ যেন সামনে না আসে।
অক্সিজেনের পাশাপাশি রেমডেসিভিরেরও আকাল দেখা দিয়েছে মহারাষ্ট্রে। এই মুহূর্তে অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার রেমডেসিভিরের ঘাটতি রয়েছে। তাই চিকিৎসকদের বিচার বিবেচনা করে রেমডেসিভির ব্যবহারের আর্জি জানিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। প্রয়োজন না থাকলেও রোগীকে রেমডেসিভির দেওয়া অথবা কাউকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ডোজ দেওয়া নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতালে না গিয়ে অনেকে বাড়িতেই রয়েছেন। ফোন করলে যাতে তাঁদের বাড়িতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া যায়, তারও ব্যবস্থা করছে মহারাষ্ট্র সরকার।