আবর্জনা থেকে নোংরা বাছাই করে তা বিক্রি করে উপার্জন করতে হতো অসিত দাসকে, তাও দিল্লিতে। যদিও এই কাজ কোনদিন ভালো লাগতো না তাঁর। আর পাঁচটা দিনের মতো সোমবার সকালে বাবার সঙ্গে বেরিয়েছিলেন তিনি। অন্যদিনের মতো আবর্জনা থেকে জিনিস ঝেড়ে বস্তায় ঢুকিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। এমন সময় মেট্রো প্রজেক্ট এ কর্মরত চারজন গার্ড তাকে এলোপাথাড়ি মারতে মারতে তুলে নিয়ে যায়, এমনটাই দাবি করেছেন স্থানীয় চা বিক্রেতা ।
খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে অসিতের পরিজনেরা থানায় খোঁজখবর শুরু করে দেয়। সমস্ত সম্ভাব্য জায়গায় তাঁরা খোঁজ করতে শুরু করে। এমন সময় জাহাঙ্গীরপুরি থানা থেকে তাঁদের কাছে খবর আসে যে, খালের ধারে একটি লাশ পাওয়া গিয়েছে যেটিকে শনাক্ত করতে হবে। স্থানীয় জগজীবন হাসপাতালে গিয়ে অসিতের বাড়ির সকলে দেহ শনাক্ত করেন। তারপরেই কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সকলে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে পাঁচ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখেন প্রায় হাজার দুয়েক মানুষ। এরপরই প্রশাসনের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই ঘটনাটি জানা গিয়েছে বেশ কয়েকটি ভাইরাল ভিডিও দেখে। যেখানে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যে, অসিতকে কার্যত তুলে নিয়ে গিয়ে গণপিটুনি করা হয়েছে। এমনকি ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে তাঁকে। অসিতের এই অকাল মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে গিয়েছে গোটা পরিবার। পাঁচ বছরের ছেলে এখনো পর্যন্ত বুঝতে পারছে না যে তার বাবা কোথায় গিয়েছে। সদ্য বিধবা স্ত্রী তনুশ্রী সামান্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ। ছেলেকে কোলে নিয়ে ক্রমাগত খেটে যাচ্ছেন তিনি। বড় ছেলেকে মুখাগ্নি করে এসে সমানে নিজেকে দোষারোপ করে যাচ্ছেন অসিতের বাবা মন্টু। তাঁর কথায়, ছেলে আসতে চাইতো না এখানে। বলতো যারা বাইরে কাজ করে তাঁরা ভালো থাকতে পারে না। কিন্তু আমার কথায় জোর করে এসেছিল দিল্লিতে। এখন জানিনা বাচ্চাটার কি হবে!
বাংলায় বহিরাগতর মেকি তত্ত্বে বাইরে জেরবার বাঙ্গালী যুব সমাজ। তাছাড়াও উক্ত ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের বীভৎসতা প্রমান করে না কি? না জানি এমন কত অসিত মরছে….
তথ্যঃ প্রতিদিন