কোথা থেকে শুরু করলে ঠিক হবে বুঝতে পারছি না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য টা কোন দিশায় চলছে শিক্ষিত মানুষরা যদি না বোঝেন তাহলে সামনে ঘোর দুর্দিন । কোথায় থাকবে , কি কাজ করবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম। যখন দেখছি ভোটের রাজনীতির কারণে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছেলেমেয়েদের বস্তা বস্তা নম্বর পাইয়ে দেওয়া হল । অথচ তারা কিছুই শিখল না। অনেকেই বলবেন করোনা পরিস্থিতিতে কিই-ই বা করার ছিল। আমার পরিচিত বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষকা আছে যারা গ্রামের স্কুলগুলিতে পড়ান,সেখানে স্কুল কমিটির মাতব্বরদের কথায় রেজাল্ট নির্ধারিত হয় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত। সংখ্যালঘু অঞ্চল হলে তো কথাই নেই , নিজের বাবার নাম যারা লিখতে পারেনা তাদেরকেও পঞ্চাশ শতাংশ নম্বর পাইয়ে দিতেই হবে তাহলে তারা যে কেন্দ্রের দেওয়া সংখ্যালঘু বৃত্তি পাবেনা । এ কোথায় চলেছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ! যাদের সামর্থ্য আছে তারা ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছে, চাকরি পেয়ে সেখানেই চলে যাচ্ছে। আর এরাজ্যের আর্থিকভাবে অক্ষম অথচ মেধায় পরিপূর্ণ এমন ছেলেরা পড়াশোনা শেষ একটা শিক্ষকতা, পিএসসির চাকরির জন্য হাহাকার করছে। রাজ্যে কোথাও কোন নিয়োগ নেই, যা আছে তা কেবল চুক্তিতে নিয়োগ। আর সেটাও পেতে হলে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের দাসত্ববৃত্তি একমাত্র criteria , আর এই criteria মানবার জন্যই শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীরা নিজেদের বিবেগ,সততা,মানবিকতা জলাঞ্জলি দিয়ে নিকৃষ্ট মানের শিক্ষাসম্পন্ন অর্থলোভী , নারীলোভী নেতা-মন্ত্রীদের পিছনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর ছুটতে তো হবেই কারণ পেটের দায় বড় দায়।
তাই তো দেখি ইতিহাসে স্বর্নপদক প্রাপ্ত স্বর্ণালি NRS হাসপাতালে ডোম পদে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে যায়। আর শাসক দলের মনোমত কথা বলা সাংবাদিক মারা গেলে তার স্ত্রীর বিনা ইন্টারভিউতেই এক লাখ দশ হাজার টাকার চাকরি জুটে যায়। আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি কোনো নিরপেক্ষ Interview Board বসলে সেখানে স্বর্ণালি বা স্বর্ণালির মতো কয়েক শত ছেলে মেয়েরা নির্বাচিত হবে। কিন্তু তাদের দিয়ে তো শাসক দলের চলবে না কারণ তারা তো শুধু মাত্র ভোটার , বন্দোপাধ্যায় পরিবারের মতো তোষামোদকারী তো নন।
খুব খারাপ লাগছিল টিভিতে দেখতে DSP-এর ঠিকাশ্রমিক নিয়োগের সময় গন্ডগোলে অনেক তরতাজা যুবকের মাথা ফেটেছে , হাত ভেঙেছে , মাত্র ১০-১২ হাজার টাকার চাকরির জন্য। আমার মনে আছে করোনার আগে দিল্লীতে বারোজন ড্রাইভার একটা সংস্থায় দরকার ছিল , ১৮-২১ হাজার মাইনেতে। একমাস চেষ্টা করেও সংস্থা কোনো ড্রাইভার পায়নি । এটা এ কারণেই বললাম দিল্লী,হরিয়ানা , তামিলনাড়ু, কর্নাটক,কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যে কুড়ি-একুশ হাজার টাকার চাকরি যখন খুশি ছেড়ে আরেকটা পাওয়া যায়। আর আমাদের রাজ্যে একটা সামান্য কাজের আশায় মানুষকে রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতে হয়। অথচ এদিকে দেখি শাসকদলের সর্বভারতীয় নেতা দিল্লী যাচ্ছেন Vistara বিমানে ৩৭ লক্ষ্য টাকা দিয়ে সমস্ত টিকিট কিনে নিয়ে মাত্র চারজন চড়ছেন । আগরতলা যাচ্ছেন মাত্র চারজন Indigo এর বিমানের ১৮০ টা সিটই ৩০ লক্ষ্য টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে। রাজ্যের সাড়ে পাঁচ লক্ষ্য সরকারি চাকরি কে অবলুপ্ত করে দিয়েছে যে সরকার যারা মাত্র দশ বছরেই রাজ্যকে ৫.৫ লক্ষ টাকার দেনায় ডুবিয়ে দিয়েছেন তারা ডোল রাজনীতি করবেন এটাই তো স্বাভাবিক – ভাবো বাঙালি ভাবো!
2021-08-05