যদি শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পেতেন, তাহলে সাহিত্যে দেশের দ্বিতীয় নোবেলটিও আসত এক বাঙালিরই হাত ধরে

কয়েকমাস আগে ১৯৭১ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কারের মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করলেন নোবেল কর্তৃপক্ষ । সেই বছর নোবেলজয়ী সাহিত্যিক ছিলেন চিলির পাবলো নেরুদা । বাকি প্রতিযোগীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্বের তাবড় তাবড় সাহিত্যিক – গ্রাহাম গ্রীন, গুন্টার গ্রাস, আর্থার মিলার, জেমস বল্ডউইনের, এজরা পাউন্ড, ভ্লাদিমির নবোকভ প্রমুখ । তবে প্রতিযোগীদের মধ্যে ছিলেন আমাদের বাংলার এক দিকপাল সাহিত্যিক । অবাক হলেন ? না অবাক হওয়ার কিছু নেই । তিনি শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ।

১৯৭১ সালে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাহিত্য অ্যাকাডেমির তৎকালীন সম্পাদক কৃষ্ণ কৃপালনি। তবে সেই বছরেরই ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় লেখকের। নিয়ম অনুযায়ী যেহেতু কাউকে মরণোত্তর নোবেল দেওয়া হয় না, তাই আর বিবেচিত হয়নি তারাশঙ্করের নাম।
প্রসঙ্গত, এতবছর ধরে শুধুই নোবেলজয়ীদের নাম প্রকাশ করত সুইডিশ কমিটি। তবে এবছর পুরোনো আর্কাইভ প্রকাশ করে কমিটি। জনসমক্ষে প্রথমবারের মতো আসে মনোনীত ব্যক্তিদের নাম। এই আবহে মনোনয়নের ৫১ বছর পর জানা গেল যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।

১৮৮৮ সালের ২৩ জুলাই বীরভূমের লাভপুরে জন্ম শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের । সারা জীবনে লিখেছেন ৬৫টি উপন্যাস, ১২টি নাটক ও ৫৩টি গল্প সংকলন। পেয়েছিলেন রবীন্দ্র পুরস্কার, সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার, জ্ঞানপীঠের মতো পুরস্কার। পেয়েছেন পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণও। তাঁর লেখার মধ্যে গণদেবতা, কবি, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, আরোগ্য নিকেতন বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। রাঢ়বাংলার ভাষ্য তাঁর লেখায় জীবন্ত হয়ে উঠত। যদি সত্য়িই শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পেতেন, তাহলে সাহিত্যে দেশের দ্বিতীয় নোবেলটিও আসত এক বাঙালিরই হাত ধরে !
শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়-কে প্রয়াণদিবসে আমাদের প্রণাম ।

© অহর্নিশ – Ahornish

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.