ভারতবর্ষে ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকগুলি গান্ধী ও নেহরুর গল্পে ভর্তি। জনগণের আবেগের প্রবল চাপে সুভাষ চন্দ্র বসুর ইতিহাসকে একটু আধটু লেখা হলেও বাঘা যতীন, মাস্টার দা সূর্য সেনের মতো মহান ব্যক্তিত্ব এর ইতিহাসকে প্রায় বিলুপ্ত করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। আসলে যে সমস্ত ব্যক্তিত্ব গান্ধী, নেহেরুর তথাকথিত অহিংসা নীতির বিপরীতে গিয়ে দেশের স্বার্থে কাজ করেছিলেন তাদেরকেই ইতিহাস থেকে বিলুপ্ত করার ষড়যন্ত্র দশকের পর দশক ধরে চলে আসছে।
ইতিহাস থেকে বিলুপ্ত করে দেওয়া এই ব্যক্তিত্বদের তালিকায় রয়েছেন বাঙালি হিন্দুদের রক্ষাকারী মহাযোদ্ধা গোপাল পাঁঠার নাম। ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট যখন মুসলিম লীগের নেতাদের নেতৃত্বে শুরু হয় হিন্দু নিধন। হিন্দুদের হত্যা করার এই প্রক্রিয়ার নাম দেওয়া হয় ডাইরেক্ট একশন ডে বা প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস। সেই সময় অখন্ড বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুরাবর্তী।
হিন্দুরা যাতে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য না পায় তার জন্য রাজ্যের ২৪ টি পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে হিন্দু পুলিশ অফিসার সরিয়ে ২২ টিতে নিযুক্ত করা হয় মুসলিম পুলিশ অফিসার ২ টিতে নিযুক্ত করা হয় আঙলো ইন্ডিয়ান পুলিশ অফিসার। ১৬ আগস্ট থেকে সুরাবর্দী ও মেয়র ওসমান খান বসেছিল লালবাজার পুলিশ হেডকোয়ার্টারে। সেখান থেকেই তারা নজর রাখছিল কট্টরপন্থীরা কতজন হিন্দুকে মারতে পারলো। পরিস্থিতি এমন হয় যে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে কলকাতায় হাজার হাজার (আনুমানিক ১০ হাজার) হিন্দুর শবদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্টেটমেন্টের সম্পাদক এই ঘটনার উপর বিবৃতি দিতে গিয়ে বলেন, গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংয়ের ঘটনা যেকোনো যুদ্ধের বিভীষিকাকে লজ্জিত করবে। এই ঘটনাকে বিবরণ দেওয়ার জন্য শব্দ মধ্য যুগ অর্থাৎ ইসলামিক জিহাদের যুগে খুঁজতে হবে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠে যে হিন্দুরা উপলব্ধি করে, তাদের উদ্ধারের জন্য কোনো নেহেরু বা গান্ধী আসবে না। নিজেদের রক্ষা নিজেদের করতে হবে। হিন্দুরা প্রতিরোধ করা শুরু করে এবং খেলা পাল্টে যায়।
হিন্দুদের উপর মুসলিম লীগের যে অন্ধকার ছেয়ে পড়ে ছিল তা হিন্দুদের প্রতিরোধের সাথে সাথে সরতে শুরু হয়। হিন্দুত্ব পৌরুষের সূর্যউদয় হয় আর এই সাথে জিহাদির মধ্যে পাল্টা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সুভাষচন্দ্র বসুর ভক্ত গোপাল মুখার্জী ওরফে গোপাল পাঁঠার নেতৃত্বে পরাক্রমী হিন্দুদের সুপ্ত শক্তি জাগ্রত হয়ে উঠে।
ইসলামিক গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের এমন ক্ষত্রিয় রূপ দেখে সেকুলার ও উন্মাদীদের বুক কেঁপে উঠে। ইংরেজ ও কংগ্রেসীরা গোপাল পাঁঠার নেতৃত্বে চলা হিন্দুদের ব্যাপক প্রতিরোধকে সমালোচনা করতে শুরু করে। গোপাল মুখার্জীর ‘ভারতীয় জাতীয় বাহিনী’ এর সদস্যরা এক একজন হিন্দুর পরিবর্তে ১০ জন পাক পন্থীকে আচারের মতো নিধন করতে শুরু করে। গোপাল মুখার্জী ও বিখ্যাত কুস্তিগির বসন্তের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল ওয়ান টু টেন অর্থাৎ ওরা একজন মারলে তোমরা ১০ জন মারবে। হিন্দুদের দুর্দান্ত প্রতিরোধ দেখে কেঁপে উঠে সুরাবর্দী ও আলি জিন্নাহ। তারা কংগ্রেসের কাছে চায় সাহায্য।
কংগ্রেসের নেতারা তখন দিল্লীতে থেকে আসে কলকাতায়। গোপালের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করানো ছিল তাদের উদেশ্য। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী অহিংসার বানী শুনিয়ে গোপাল মুখার্জীকে অনুরোধ করে বলেন তিনি যেন অস্ত্র সমর্পণ করেন। সুভাষচন্দ্র বসুর ভক্ত গোপাল মুখার্জী বলেন, যদি একটা পেরেক হিন্দুর সন্মান রক্ষার্থে কাজে লেগে থাকে তাহলে সেটাও আমি সমর্পণ করবো না।