মঙ্গলবার আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ভাষণে বলেন, দেশ এখন এমন এক পথে এগিয়ে চলেছে, যেখানে আগামী দিনে সব ধর্মের মানুষ সাংবিধানিক অধিকার লাভ করবেন। কোনও সম্প্রদায়ই পিছিয়ে থাকবে না। সকলের আশাই পূরণ হবে।
ধর্মনিরপেক্ষতা ও উন্নয়ন, মূলত এই দু’টি বিষয়ের ওপরে এদিন জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার গরিবদের জন্য যে প্রকল্পগুলি গ্রহণ করেছে, তাঁর সুফল পাচ্ছে সব মানুষ। এখানে ধর্মের ভিত্তিতে কোনও ভেদাভেদ করা হচ্ছে না। মোদীর মতে, দেশের প্রগতি ও উন্নয়নের স্বার্থে আমাদের মতাদর্শগত পার্থক্য দূরে সরিয়ে রাখা উচিত।
তাঁর কথায়, “আমরা যে ধর্মেই জন্মগ্রহণ করি না কেন, আমাদের ব্যক্তিগত আশা-আকাঙ্খার সঙ্গে জাতীয় স্বার্থের মেলবন্ধন ঘটাতে হবে। সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে মতাদর্শগত পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু দেশের উন্নয়নের কাছে তা তুচ্ছ।” পরে তিনি বলেন, “আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির অনেক ছাত্র স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁদের মধ্যেও মতাদর্শগত পার্থক্য ছিল। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বার্থে তাঁরা সেই মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আদর্শে আমাদেরও নয়া ভারত গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর মতে, শুধু রাজনীতির নিরিখে দেশের উন্নয়ন সম্পর্কে ধারণা করলে ভুল হবে। তিনি বলেন, নয়া ভারত গড়ার সময় অনেকে নেতিবাচক কথা বলবে। কিন্তু আমাদের চিন্তায় যদি দেশকে নতুন করে গড়ে তোলার কাজ অগ্রাধিকার পায়, তাহলে নেতিবাচক কথা বিশেষ গুরুত্ব পাবে না। রাজনীতি ও সমাজের চেয়ে দেশের উন্নয়ন বড়। তাঁর কথায়, “গত শতাব্দীতে নানা মতপার্থক্যের দরুন অনেক সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন আর নষ্ট করার মতো সময় নেই।”
এদিন ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ভাষণ দেন মোদী। স্বাধীনতার আগে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির নাম ছিল অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ। ১৯২০ সালের ১ ডিসেম্বর তা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। তখন তাঁর নাম হয় আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি।
মোদী এদিন এএমইউ-এর ছাত্রছাত্রীদের কাছে আবেদন জানান, তারা যেন স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে গবেষণা করে। যে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম সকলে ভুলে গিয়েছে, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির সময় যেন তাঁদের কথা প্রকাশ করে।