বায়ুসেনার অফিসার রাকেশ শর্মা গিয়েছিলেন ১৯৮৪ সালে। তিনিই প্রথম ও একমাত্র ভারতীয় যিনি মহাকাশে ঘুরে এসেছিলেন। রুশ মহাকাশয়ান ‘সয়ুজ টি-১১’-এ চেপে তিনি মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন। ভারত এ বার নিজেদের বানানো মহাকাশযান ‘গগনযান’-এ চাপিয়ে মানুষ পাঠাতে চলেছে মহাকাশে। তিনজন নভশ্চর, বেছে নেওয়া হবে ভারতীয় বায়ুসেনার নানা বিভাগ থেকে। আর তার বাছাই পর্বে প্রথম ১২ জনকে বেছে নেওয়া হল।
শুক্রবারই এই কথা জানিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। তবে এখনও পর্যন্ত সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। সেটা গোপন রাখাই নিয়ম। ২৫ জনের থেকে ১২ জন বাছাই হয়েছে। এর পরে ধাপে ধাপে বাছাই করে শেষে চূড়ান্ত তিন জনকে নির্বাচন করা হবে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছিল, গগনযানের জন্য মহাকাশচারীদের বেছে নেওয়া হবে বায়ুসেনার তিনটি বিভাগ থেকে। চূড়ান্ত তালিকায় থাকবেন ছ’জন যাঁদের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হবে তিনজনকে। এই বিশেষ বাহিনীর মধ্যে থাকবেন দু’জন পুরুষ ও একজন মহিলা। সুতরাং কোন তিন বিভাগের পাইলটদের শিকে ছিঁড়ছে তা নিয়ে চাপানউতোর ছিলই। গতকাল, বুধবার ইসরোর এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই তিন জন নভশ্চরের বাছাই পর্ব চলছে। তবে তাঁদের মধ্যে মহিলা থাকবেন কি না সেই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ যে সশস্ত্র বিভাগ থেকে মহাকাশচারীদের বেছে নেওয়া হচ্ছে, সেখানে কোনও মহিলা অফিসার নেই।
দিল্লির লাল কেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, চন্দ্রযানের অভিযান সাফল্য ছুঁতে চলেছে। বিশ্বে চতুর্থ দেশ হিসেবে চন্দ্রাভিযানে ইতিহাস গড়তে চলেছে ভারত। সুতরাং, আর দেরি করা যাবে না। ২০২২ সালের মধ্যেই মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ভারত। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে গগনযানে মানুষ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় ইসরো। ভারতীয় মহাকাশচারীদের বেছে নেওয়ার জন্য তৈরি হয় কমিটি। যে তিনজনকে বেছে নেওয়া হবে, তাদের কস্টিউমের মডেলও ইসরোর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
তখনই জানানো হয়, এই তিনজনের মধ্যে মহিলা ও পুরুষ উভয়েই থাকবেন। ইসরো জানিয়েছে, প্রায় দেড় বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে নভশ্চরদের। যার অধিকাংশই হবে ভারতে। চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতির জন্য ইতিমধ্যেই নাসা, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ইসরো। গগনযানে ৩ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত নভশ্চরেরা মহাকাশে থাকবেন। তার পরে তাঁদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে। ভারতীয় বায়ুসেনার অফিসাররা সফল ভাবে মহাকাশযাত্রা সেরে ফিরে এলে, আগামী অভিযানে সাধারণ মানুষদেরও মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে ইসরো।