আমেরিকার ডিপ স্টেট নীতি বদল করছে বলে মত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের। কিরকম নীতি বদল? দেউলিয়া পাকি*₹স্তানকে ফান্ড দেওয়ার ছুতো খুঁজতে এফএটিএফের গ্রে লিস্ট থেকে বের করার চেষ্টা করা একটা উদাহরণ। পাকিস্তানকে বে আইনি গুন্ডা গরদী করতে ইউরোপ আর আমেরিকার দরকার হয় মাঝে সাজে। কিরকম বে আইনি? ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে পাকিস্তানে তৈরি শেল রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের প্রমাণ দিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ওই দুটো দেশ নিজেরা লড়াই করলে গোটা বিশ্বে এতো সমস্যা আসতো না। কিন্তু সব বিষয়ে নিজের নাক গলিয়ে আসলে নিজেদের বাজার চাঙ্গা রাখার আমেরিকান নীতির কি হবে? যাকগে আমেরিকার কীর্তিকলাপ লিখতে গেলে আস্ত মহাভারত হয়ে যাবে। এই লেখায় সেসব কথা থাক।
আমেরিকার ডিপ স্টেটের নীতি বদলের কান্ডারী বলে ভাবা হচ্ছে ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডকে। নাম আমরা সবাই জানব না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সব ভারতীয়ই কি এই নাম সম্পর্কে অপরিচিত? নিজেদের আখের গোছানো অ্যান্টি ইন্ডিয়া ফোর্স এর লোকজন কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে কাজ করা আমেরিকার ডিপ স্টেটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। যতই সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা বলে চিল্লামিল্লি করুক, যে দেশে জন্মেছে সেই দেশের সঙ্গে গদ্দারি করার বেলায় আমেরিকার বন্ধু না হলে চলবে?
রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের মনোমালিন্যের লম্বা ইতিহাস ছিলোই। তবে এই যুদ্ধ শুরুর স্টেজ তৈরি কবে হয় জানেন? 2014 এর ফেব্রুয়ারিতে। ইউক্রেনের রাজধানী কিভে EUROMAIDAN Protest শুরু হয়েছিল 2013 র নভেম্বরে। তৎকালীন ইউক্রেনিয়ান প্রেসিডেন্ট ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে পলিটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এবং ফ্রি ট্রেড চুক্তি করতে চাইছিল না। ইউক্রেনের জনতা তার বিরুদ্ধে হিংসাত্মক প্রতিবাদ করে। এবং এর ফলে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর জানুকোভিচ গদিচ্যুত হন। ভিক্টর বাবু ইউরোপের সঙ্গে মাখামাখির চেয়ে রাশিয়া আর ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের সঙ্গে চলতে চাইছিলেন। যাই হোক এই ভয়ঙ্কর হিংসাত্মক প্রতিবাদের পিছনের মাস্টারমাইন্ড ছিল আমেরিকান ভিক্টোরিয়া।
এই কান্ড সামনে আসে যখন ইউক্রেনের লোকজনের সঙ্গে ভিক্টোরিয়ার কথোপকথনের অডিও লিক হয়। এই ভিক্টোরিয়া ভারতে অফিসিয়াল সফরকালে কাদের সঙ্গে মিটিং করে জানেন? দিশা রবি, করুণা নন্দীর মতো কর্মহীন বিপ্লবজীবিদের সঙ্গে। সেই দিশা রবি যে টু*লকিট কাণ্ডে এরেস্ট হয়েছিল “ফার্মার্স প্রোটেস্ট” নামের কৃষক স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে। ভিক্টোরিয়া শাহীন বাগ কান্ডকে সাপোর্ট করেও বক্তব্য রেখেছিল।
বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় অরাজকতা কাণ্ডেও হাত খুঁজে পাওয়া গেছে ভিক্টোরিয়ার। মহিলা দেশে দেশে বিপ্লবের ব্যবসা চালিয়ে এসেছে সফলভাবে। ভাবুন একবার বিপ্লবীদের সবচেয়ে অপছন্দের আমেরিকা কেন দেশে দেশে বিপ্লবের ব্যবসা চালায়? খুব সোজা উত্তর। দেশে দেশে বিপ্লব হবে আমেরিকাকে বাণিজ্যে সুবিধা দিতে।
কিন্তু ভারত এখন আমেরিকার সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ! রাশিয়াকে ভারতের জন্য পুরোপুরি কোণঠাসা করতে পারছে না আমেরিকা। আরেকটা কারণ হলো ফসিল ফুয়েলকে অর্থনীতির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে ভারতের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ( কি পদক্ষেপ নিজেরা খুঁজে নেবেন। আশা করব নিজের দেশ কি কি ভালো কাজ করছে তার খোঁজ রাখবেন)। আরও রাগ আমেরিকার ক্রুড অয়েল পঞ্চাশ শতাংশ ইমপোর্ট কমিয়েছে ভারত।
রাগের চোটে বিপ্লবের ব্যবসা করা ভিক্টোরিয়া এখন ভারতীয়দের আমেরিকার ভিসা দিতে অস্বীকার করছে। ভারতকে সবক শেখাতে ভিক্টোরিয়া দেশে বিদেশে খেলছে। ভারতের চারটে ফার্মা প্রোডাক্ট এর লাইসেন্স ক্যান্সেল করেছে WHO। মজার কথা WHO এই সংক্রান্ত ল্যাব রিপোর্ট জানাতে চাইছে না। যদিও জানানোটাই নিয়ম।
তবে এতো কিছু করেও ভারত নিজের ইচ্ছেমতোই চলছে। আমেরিকার মাটিতে বসেই আমাদের বিদেশমন্ত্রী আমেরিকাকে কড়া দাওয়াই দিয়ে এসেছেন। এদিকে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য বিপ্লবজীবিরা কিন্তু খুশি নয়।
আরেকটা কথা বুঝুন। ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড কিন্তু একা একজন মানুষ নয়। বিরাট একটা সিস্টেমের একটি মুখ মাত্র। সেই বিরাট সিস্টেম চায় ভারত দুর্বল হোক অর্থনৈতিকভাবে। তবেই তাদের ব্যবসা আগের মতো চলবে। দুর্বল করার মূল হাতিয়ার বিপ্লব ফান্ড করা। সেইজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমেরিকার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে দেশকে অস্থির করলে চলবে না। দেশ ভালো থাকলে তবেই আমরা ভালো থাকব।
স্বাগতা মণ্ডল