জহর সরকার কাল আনন্দবাজারে একটা লম্বা লেখা লিখেছেন । গায়ের রাগ উসুল করে । আলাপনকে নিয়ে ।
জহর সরকার বোধহয় একমাত্র কংগ্রেসী ঘরানার অনুগত আই এ এস । ভীষণ ভাবে কংগ্রেসের ধ্যান ধারণায় অনুরক্ত পড়াশুনা জানা একজন মোদী বিদ্বেষী প্রাক্তন আমলা ।
মিলে গেছে এখানেই আনন্দবাজারের ফিলোসফির সঙ্গে । তাঁকে দিয়ে লিখিয়েছেন অনির্বাণ, শাশ্বতীরা, যাঁরা এখনো চতুর্থ পাতার নিয়ন্ত্রক । পাল্টা জবাব দেওয়ার লেখা কিছুতেই আনন্দবাজার ছাপবে না । ছাপলে কালীঘাটে সাংবাদিক ” মামা ‘ র কান মোলা খাওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষায় থাকবে । বন্ধ হবে বিজ্ঞাপন । করে কম্মে খাওয়া, এটা ওটা বাগিয়ে নেওয়ার রসদ ।
আনন্দবাজার এটা জানে ।
কিন্তু পাল্টা প্রশ্ন গুলো তোলা দরকার, ভীষণ ভাবেই । তুললাম ।
তাই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ।
১. কর্মী বর্গ দফতর আলাপনকে বাগে আনতে পারেননি লিখেছেন জহর সরকার ।
উত্তর – ডি ও পি ডি দফতরের দু ‘ টি চিঠিতেই আই এ এস কেরিয়ারের ইতি টানতে হয়েছে আলাপনকে । অস্বীকার করবেন জহর বাবু ?
২. লিখেছেন – প্রধানমন্ত্রীর গোসা হওয়ার কারণে মুখ্য সচিবকে এ ভাবে জেলে পোরার হুমকি ।
উত্তর – শো কজ এর মধ্যেই জেলে পোরার ভয় পাচ্ছেন কেন জহরবাবু ? আপনি ভারতের প্রধান মন্ত্রীর চেয়ারের সঙ্গে অসভ্যতা করতে পারেন অসৌজন্য দেখিয়ে । আপনার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া যাবে না ? কৈফিয়ত চাইলে সেটা ঔদ্ধত্য ? আর অসৌজন্য দেখালে সেটা যুক্তিসঙ্গত শুধুমাত্র সেটা মোদীজির সঙ্গে হয়েছে বলে ?
৩. জহর বাবু লিখেছেন – হাতে ফুলের তোড়া, মুখে হাসি আর নত হয়ে স্যালুট চেয়েছিলেন মোদীজি । ইচ্ছাকৃত ভাবেই জহর বাবু প্রসঙ্গটা অন্য অভিমুখে ঘুরিয়েছেন ।
প্রশ্নটা ছিল রিভিউ মিটিং এর । একজন আমলা সেই মিটিং থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এসেছেন, ডেপুটেশন জমা দিয়ে চলে গেছেন । হ্যাঁ এটা ঠিক আলাপন মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনেই সেটা করেছেন । কিন্তু অসৌজন্য দেখানোটাও একটা ‘অন্যায় ‘, যাঁর নির্দেশেই হোক, সেটা স্বীকার করতে এত কুণ্ঠা কেন ? জহর বাবু এই অসৌজন্যটা আপনার এক সময়ের বিগ বস রাজীব গান্ধীর সঙ্গে হলে এ ভাষাতেই কলম ধরতেন তো ?
৪. জহরবাবু লিখেছেন – মুখ্যমন্ত্রী দরবার নয়, গভীর আলোচনার জন্য বৈঠক চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ।
জহরবাবু – বৈঠকটা প্রধানমন্ত্রী ডেকেছেন, মুখ্যমন্ত্রী নন, মুখ্যমন্ত্রী তার জন্য আলাদা সময় চাইতে পারতেন । চান নি । তাঁর কাছে মূল সমস্যা ছিল তাঁকে যিনি non mla মুখ্যমন্ত্রী করে ছেড়েছেন সেই ‘ গদ্দার ‘ শুভেন্দু কেন সভায় থাকলেন । প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সভায় না ডাকলেই তো জল এত দূর গড়াত না । এই সরল সত্য টুকু মুখ ফুটে বেরোলো না জহর সরকারের ।
৫. জহর সরকার লিখেছেন এক মুখ্যসচিব কে কারও ইগো ম্যাসাজের বদলে মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তিগ্রাহ্য আদেশ পালনের জন্য কাঠ গোড়ায় তোলা হচ্ছে !
- জহর বাবুকে সামনে পেলে জানতে চাইব –
কার ইগো র জন্য এ রাজ্যে শিলাদিত্য চৌধুরীকে জেলে যেতে হয়েছিল বলবেন ?
বলবেন কার ইগোর জন্য ডা: শ্যামাপদ গড়াইকে প্রথমে সাসপেন্ড, পরে তাঁর বকেয়া আটকে রাখা হয়েছে ?
বলবেন জহরবাবু প্রেসিডেন্সিতে তানিয়া ভরদ্বাজকে কার ইগোর মুখে পড়তে হয়েছিল একদিন ?
প্লিজ বলবেন, অধ্যাপক অম্বিকেস মহাপাত্রর মত মানুষকে কার ইগো ক্ষত বিক্ষত করেছিল ? পুলিশের ঘানি ঠেলিয়েছিল ?
কার ইগোতে চূর্ন বিচূর্ণ হয়ে ডা: অরুণাচল দত্ত চৌধুরীর মত মানুষকে মৃত্যু পথ যাত্রী অশিতীপর মা কে ঘরে ফেলে কেরিয়ারের শেষ ৩ মাস কর্মজীবন কাটাতে দার্জিলিং মেল ধরতে হয়েছিল ?
কার ইগো র জন্য আই পি এস নজরুল ইসলামকে লিখতে হয়েছিল – her dishonesty ?
কার ইগো রক্ষার্থে অভীক সরকারের মত মানুষকে আনন্দবাজারের সম্পাদকের পদ ছাড়তে হয় ? জানা আছে জহর বাবু ? তালিকা কিন্তু লম্বা । লিখতে পারি সে সব ইতিহাস ।
উত্তর দেবেন জহরবাবু ? এসব প্রশ্নের । পাণ্ডিত্য থাকলেই কত সহজে কাদা ছোঁড়া যায় । তাই না ! সহজ সত্যের মুখোমুখি হওয়া যায় কি ? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করবেন জহর বাবু ।
অনেক অবান্তর, অপ্রাসঙ্গিক, অযৌক্তিক বক্তব্য লিখে লেখাকে দীর্ঘায়িত করেছেন যার প্রত্যেকটি শব্দের উত্তর দিতে পারি জহর বাবু ।
এমন অনেক প্রশ্ন আছে যে গুলো উত্থাপন করলে আপনি হয়তো বিড়ম্বিত হবেন । হাজার হোক আপনি আমলা, আপনি শিক্ষিত, আপনি পন্ডিত । আপনার personal grudge থেকে যা খুশী লেখার অধিকার আপনারই শুধু আছে । কিন্তু আমাদেরও কিছু প্রশ্ন করার অধিকার থেকে যায় ।
একটি প্রশ্ন রেখে গেলাম – প্রসার ভারতীর সি ই ও থাকতে এই অসৌজন্যতা যদি কলকাতা দূরদর্শন অধিকর্তা আপনার সঙ্গে দেখাতো কেমন লাগতো জহরবাবু ?
পারসোনাল ইগো ছেড়ে একটু উঠে বসে ভাবুন । কোনোদিন দেখা হলে উত্তর দেবেন, উত্তর থাকলে ।
প্রণাম আপনার চেতনাকে ।
সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়