আমরা কতটুকু চিনি তাঁকে?
ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে তিনি তখন মারাত্মক আহত | তাঁর করুণ চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন এক শিখ কনস্টেবল | সেই কনস্টেবলকে দেখে তিনি বললেন তাঁর একটা গুরুত্বপূর্ণ খাম বালেশ্বর স্টেশনের কাছে একটি পুকুরের পাড়ে গাছের নীচে রাখা আছে | সেই খামটি তাঁর যে কোন মূল্যে চাইই |
সেই কনস্টেবল পুলিশ সুপারকে নিয়ে সেইদিন রাতেই সেই পুকুর পাড়ে গেলেন | কিন্তু কোথায় কি ? সেই খাম খুঁজে পেলেন না | পরদিন সকালেও তারা তল্লাশি করলেন | কিন্তু কিছুই পেলেন না |
না পাওয়ারই কথা | কারণ সেই খাম গ্রামবাসীরা তার আগেই তুলে দিয়েছিল পুলিশের বড়কর্তার কাছে | তারপর সেই খাম পৌঁছে যায় কিলবির কাছে | খামটা ছিল এক পুঁটুলির মধ্যে | পুঁটুলির বাকি জিনিস গ্রামবাসীরা হাতিয়ে নেয় | শুধু খামটাই তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে |
কি ছিল সেই খামে?
তিনটে ইংরেজি প্রবন্ধ ছিল সেই খামে | দুটো খসড়া লেখা পেন্সিলে এবং একটা মূল লেখা কলমে | মূল লেখাটির নাম ছিল “The Children of the Mother India – The Voice of a Devotee!” | বিচারক ম্যাকফার্সন সেটি দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল | সেই লেখা ডেনমান থেকে শুরু করে পৌঁছায় লর্ড হার্ডিঞ্চের কাছেও | তিনি সেগুলো পাঠান কাউন্সিলের সভ্যদের |
পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল রাইল্যান্ড সেই লেখা দেখে বলেছিলেন “What a mastermind he was! বেঁচে থাকলে তাঁকে গোটা বিশ্বের সবাই নেতা বলে মেনে নিত |”
যাইহোক লর্ড হার্ডিঞ্চ সেই লেখা পাঠিয়ে দিলেন ব্রিটেনে | চেম্বারলেন ওগুলো পুরোপুরি সরিয়ে দিলেন | সেই লেখা কোথায় গেল তার ঠিকানা কেবল ইংরেজ শাসকদেরই জানা ছিল | কিন্তু জনসমক্ষে সেগুলো আসেনি | যদি ভবিষ্যতে কোনোদিন আসে তাহলে হয়ত জানা যাবে তিনি দেশের জন্যে বিশ্বের জন্যে আর কি কি করতে চেয়েছিলেন |
সেই প্রবন্ধটির লেখক ছিলেন বাঘাযতীন |
আত্মবলিদান দিবসে তাঁকে প্রণাম ও শ্রদ্ধা |
© অহর্নিশ
2023-09-14