নীচে ভোপালের নবাব হামিদুল্লা খানের একটি চিঠির ফটো দিলাম। নবাব হামিদুল্লা এটি জিন্নাকে লিখেছিল। চিঠিটির প্রতিটি লাইনে ভারত বিরোধিতা, তীব্র হিন্দু বিরোধিতা ফুটে উঠেছে। সেই সঙ্গে পাকিস্তান প্রীতিও চোখে পড়ার মত। এখানে বলে দিই, এই হামিদুল্লার মেয়ে সাজিদা সুলতান অভিনেতা সৈফ আলি খানের ঠাকুমা। হামিদুল্লার বড় মেয়ে আবিদা সুলতান ভুপালের উত্তরাধিকার ছিল। কিন্তু সে পাকিস্তানে চলে যাবার পরে তার বোন সাজিদা, সৈফের ঠাকুমা, এই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হয়। যদিও 2016 সালের সংশোধিত শত্রু সম্পত্তি আইনের আওতায় এই সম্পত্তি এখন রাষ্ট্রের অধীন যা বেআইনী ভাবে দখল করে আছে সৈফের পরিবার। সৈফের ছেলের নাম তাই কুখ্যাত নরসংহারক তৈমুরের নাম কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই সব পাকিস্তান প্রেমী ভারত বিরোধীদের অবিলম্বে দেশ থেকে বহিষ্কার করা উচিত। তবে তার আগে এর কারণ কি একটু বোঝা দরকার। এই সমস্যা আসলে অনেক গভীর। ভারতে বসবাসকারী মুসলিমরা আজও বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে মুসলিম থেকে গেছে, ভারতীয় হতে পারে নি।
ভারতবর্ষ পৃথিবীর এক মাত্র সভ্যতা যেখানে প্রাচীন ধর্ম আজও বিদ্যমান। ভারতের ধর্মান্তর হয় নি। ভারতীয় উপমহাদেশে যুগ যুগ ধরে অসংখ্য বার বিদেশী আক্রমণকারী এসেছে। কেউ ফিরে গেছে, আবার কেউ থেকে গেছে এই ভূমিতেই। অষ্টম শতাব্দীতে এই দেশে মুসলিম আক্রমণ হয়। পরে 1192 সালে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে পাকাপাকি ভাবে এই দেশের উত্তর ভাগ মুসলিম শাসকদের দখলে চলে যায়।
বিভিন্ন মুসলিম আক্রমণকারী ও সুলতান আমলে এখানে প্রচুর বিদেশী মুসলিম আসে। পরে তারা এখানেই বসতি শুরু করে দেয়। ধর্মীয় কারণে মুসলিমদের আচার আচরণ সম্পূর্ণ রূপে হিন্দু অর্থাৎ ভারতীয় মূল নিবাসীদের বিপরীত ছিল। তার সঙ্গে যোগ করল ধর্মীয় ভাবে নিপীড়িত করে ধর্মান্তর করবার সহজ পদ্ধতি। তাই আরবে যেখানে গবাদি পশুর দেখাও পাওয়া যেত না, সেখানে যেহেতু ভারতীয়দের কাছে গোরু মাতা হিসাবে পূজিত, গোরুর হত্যা করা শুরু হল। এর ফল সুদূরপ্রসারী। মানসিক ভাবে হিন্দুদের উপর আক্রমণ, তাদের আচারের উপর অবিশ্বাস ও জবরদস্তি দখলদারি। হিন্দু ও মুসলিম আলাদা সম্প্রদায় সেটা বুঝিয়ে দেওয়া। মুসলিম যেহেতু শাসকশ্রেণী, তার ক্ষমতা বেশী, তাই হিন্দুরা গোহত্যা বন্ধ করতে অপারগ হল। আবার অন্য দিকে হিন্দুরা নিজেদের আইডেন্টিটি বাঁচিয়ে রাখতে গোহত্যাকে শুধু বন্ধ নয়, কেউ স্পর্শ করেছে জানতে পারলেও তাদের পুরো বংশের জাত চলে গেল বলে মেনে নেওয়া হত। ওই পরিবারের কাছে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ছাড়া আর উপায় থাকত না। এভাবেও ধর্মান্তরিত করার প্রক্রিয়া চলত এবং ব্যাপক ভাবে এর প্রভাব তৎকালীন সমাজে পড়ে।
হিন্দু ধর্মকে হীন প্রতিপন্ন করার মধ্যে আসলে মুসলিমদের প্রভুত্ব করার সুপ্ত ইচ্ছাকেই প্রকাশ করে। এর মূল কারণ ইসলাম ধর্মের মূল বক্তব্য। ইসলাম ধর্ম আসলে সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠার একটি নির্দিষ্ট নিয়ম। ছলে বলে কৌশলে ধর্ম প্রতিষ্ঠা এদের আসল লক্ষ্য। এরপর সিপাহী বিদ্রোহ পর্যন্ত মুসলিম শাসন চলেছে। তারপর আইনত ও ঘোষিত ব্রিটিশ শাসন। কিন্তু হিন্দু বিরোধিতা কখনই মুছে যায় নি, বরঞ্চ আরও প্রবল ভাবে প্রোথিত হয়েছে।
মুসলিমদের এই স্থানীয় বিরোধিতা সব দেশে প্রকট। তাদের কাছে দেশের কোন অস্তিত্ব নেই, সবটাই ধর্মীয় আবেগ। তাই যখন যেখানে মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ হয়েছে, সেখানেই শরিয়তী আইন চালু হয়েছে। সেখানেই মারাত্মক লড়াই হয়েছে। এদের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব এত ভয়ানক যে সব দেশই গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত। এদের অন্যকে ঘৃণা এত প্রবল, এরা সেই ঘৃণার জন্য সব কিছু করতে পারে। যে কোন মুসলিমের কাছে অন্য যে কোন মুসলিম আপন, এর নাম মুসলিম ব্রাদারহুড। তার কাছে নিজের দেশের পরিচয় অনেক পিছনে। তাই কোথাও মুসলিম ও অমুসলিম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান একেবারে অবাস্তব।
ঠিক এই কারণেই সিঙ্গাপুর হোক বা কানাডা, ফ্রান্স হোক বা ইংল্যান্ড, মুসলিম অপেক্ষা করে কবে সে সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে। যেদিন সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, সেদিন সেই অঞ্চলে তার অধিকার কায়েম হবে, ইসলাম প্রতিষ্ঠা পাবে। এই অদ্ভুত মানসিকতা থেকে ভারতে বসবাসকারী মুসলিমরাও বাদ নেই। স্বাধীনতা পাবার পরেও মুসলিমরা নিজেদের সংখ্যালঘু দোহাই দিয়ে কংগ্রেসের পরোক্ষ ও বামেদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সহানুভূতি আদায় করে চলেছে। এদের লক্ষ্য সব জায়গায় এক, কি করে সংখ্যা বাড়ানো যায়। চারটে বিয়ে, বিবাহিত স্ত্রীকে বিনা কারনে তালাক দেওয়া, বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে গর্ভনিরোধণের বিরোধিতা, সঙ্গে অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিবেশী দেশের থেকে,লাগাতার চেষ্টা চলছে।
মুসলিম যেহেতু দেশের কনসেপ্টে বিশ্বাস করে না, তাই সে এদেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্ম, সব কিছুর বিরোধিতা করে। ‘বন্দে মাতরম’ বলতে কষ্ট হয়। অথচ সুবিধা ভোগ করতে এই দেশে থেকে যায় নির্লজ্জের মত। এই মুসলিম ব্রাদারহুডের জন্যই এরা পাকিস্তানের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে যায়। পাকিস্তান এদের কাছে অনেক বেশী আপন। এরা এদেশের ধর্মনিরপেক্ষতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা, শরিয়তী আইন করিয়ে নিয়েছে। এরা যে কোন জায়গায় একজন মুসলিম হত্যা হলে যে ভাবে সঙ্ঘবদ্ধ হয় তা অবশ্যই শিক্ষণীয়। কিন্তু সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে কাশ্মীর থেকে মূল নিবাসী হিন্দুদের তাড়ায়, গোধরায় ট্রেনে আগুন লাগায়, কৈরানায় হিন্দুদের উৎখাত করে, মিথ্যা প্রচার করে 35 দিন ধরে পূর্ব দিল্লী অচল করে রাখে। এখনও পর্যন্ত আতঙ্কবাদের ধর্ম জানা না গেলেও মিথ্যা প্রচার হয়েছে গেরুয়া সন্ত্রাস নিয়ে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কোথাও কোন মুসলিমের বিরুদ্ধে অপরাধ তা সে সত্যি প্রমাণিত হলেও কত শত মুসলিম যে তাকে সমর্থন করে, অবাক লাগে। সেই খিলাফত আন্দোলনের সময় থেকে এদেশের মুসলিম তুরস্কের খলিফার জন্য লড়েছে, কিন্তু জনসংখ্যার অনুপাতে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেয় নি। দেশ ভাগের পর এখানে থেকে গেলেও পাকিস্তানের প্রতি সফ্ট কর্ণার অন্তরে অন্তরে প্রতি কোণায়। আমার বক্তব্য অনেকেই খণ্ডন করবেন আমিও জানি। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কালামের নাম আসবে একজন ভারতীয় হিসাবে। আমার বেশ কয়েকজন পরিচিত মুসলিম আছেন যারা তাদের ভারতীয়ত্ব প্রমাণ দিয়েছেন বিভিন্ন সময়। কিন্তু তারা মুসলিম জনসংখ্যার কত ভাগ?
কিন্তু এই নতুন ভারতে কিছু প্রশ্নের উত্তর আজ খুব জরুরী। যারা ঘৃণার জন্য সংস্কৃত শব্দ ব্যবহার উঠিয়ে দেবে তারা কিসের ভিত্তিতে ভারতীয়? যারা ভারত আত্মার সম্মান করতে পারবে না, তারা কিসের জন্য ভারতীয়? যারা ‘বন্দে মাতরম’ বলতে পারবে না, তারা কেন এই দেশে থাকবে? যারা হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করবে প্রতিনিয়ত, তাদের কেন এই দেশে থাকবার অধিকার থাকবে? যারা ভারতের প্রাচীন ধ্বজ গৈরিক পতাকার সামনে মাথা নোয়াবে না, তারা কেন ভারতীয় হবে? যাদের জন্য ভগবান শ্রীরামকে এতদিন এত অবহেলায় থাকতে হয়েছে, তাদের মধ্যে ভারতীয় বোধ কোথায়? যারা ভারতের আদি হিন্দু মন্দির ধ্বংস করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে না,তাদের জমি ফিরিয়ে দেয় না, তারা হিন্দুদের আস্থা অর্জন করবে কি করে?
যারা ভারতীয় পরিচয়ের থেকে তাদের ধর্মীয় পরিচয়কে অগ্রাধিকার দেবে, এই দেশ তাদের নয়। তারা নিজেরাই তাদের অপশন চয়েস করছে। তাদের রাখবার দায়িত্ব ভারতের নয় যারা ভারতীয় নয়। এই দেশের মুসলিমদের নিজেদের ঠিক করতে হবে তাদের পরিচয়।
© দেবযানী হালদার বসু