সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে শোনা যায় ‘রাম রাম’ ধ্বনি। শুধু তাই নয়, রীতি মতো হুমকির সুর শোনা যায় মিছিলে থাকা ব্যক্তিদের মুখে। এই ঘটনায় বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়কে দেখা গেলেও, কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল একাংশ। কিন্তু সোমবার রাতেই তৎপর হয় দিল্লি পুলিশ। ভিডিয়ো দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়। সাম্প্রদায়িক স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার অশ্বিনী উপাধ্যায় সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ।
আজ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দিল্লির বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র তথা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় ছাড়া বাকিরা হলেন বিনোদ শর্মা, দীপক সিং, দীপক, বিনীত ক্রান্তি ও প্রীত সিং। তাঁদের বিরুদ্ধে ‘হেট স্পিচ’ বা উস্কানিমূলক বক্তব্যের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই মিছিলের অনুমতি দেয়নি, তা সত্ত্বেও এই মিছিল হয়েছে যন্তর মন্তরে। এই মিছিলে অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা গজেন্দ্র চৌহান ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে, তবে তাঁকে ভিডিয়োতে দেখা যায়নি। এই স্লোগানের দায় অস্বীকার করেছেন অশ্বিনী উপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, তিনি এই মিছিলের বিষয়ে কিছুই জানেন না।
সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিয়োতে একদল ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘হিন্দুস্থান মে রহনা হোগা তো জয় শ্রী রাম কহেনা হোগা (ভারতে থাকতে গেলে জয় শ্রী রাম বলতে হবে)।’ এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শুরু হয় বিতর্ক। এরপরই দিল্লি পুলিশের তরফে বিনা অনুমতিতে মিছিল ও স্লোগান দেওয়ার প্রেক্ষিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ভিডিয়োটিতে যাদের দেখা গিয়েছে, তাদের চিহ্নিতকরণ করে পুলিশ।
যন্তর-মন্তরে ভারত জড়ো আন্দোলনের জনসভাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই উত্তাল দিল্লির রাজ্য-রাজ্যনীকি। ওই জনসভার মঞ্চ থেকেই সাম্প্রদায়িক স্লোগান তোলার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছে বেশ কিছু ভিডিও। আর তারপরেই অজ্ঞাত পরিচয় জনা দশেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে দিল্লি পুলিশ। এবার এই অনুষ্ঠানের আয়োজককেও গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ।
ভারত জড়ো আন্দোলনের’ নামের এই সভার ভিডিয়ো টুইট করে এর আগে আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ট্যাগ করেছেন অশ্বিনী উপাধ্যায়। অন্যদিকে ২০১৪ সালে দিল্লি মসনদে বসার পর থেকেই দেশজুড় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে কোমড় বেঁধে নামে মোদী সরকার। বর্তমানে দিল্লি হাইকোর্টের সমর্থন মেলার পর এই বিধি প্রণয়নের পথে নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে গেরুয়া শিবির। বর্তমানে এই আইনের পক্ষে জনসমর্থন আদায় করতেই এই সভা ডাকা হয়েছিল দিল্লির বুকে।
দিল্লি আদালত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং প্রাক্তন বিজেপির মুখপাত্র অশ্বিনী উপাধ্যায়কে জামিন দিয়েছেন, তিনি যন্তর-মন্তরে অনুষ্ঠিত মুসলিম বিরোধী সমাবেশের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন।সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এবং বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায় সহ পাঁচজনকে যন্তর -মন্তরে বিক্ষোভ করার সময় ‘সাম্প্রদায়িক’ এবং ‘উত্তেজক’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে দিল্লি পুলিশ আটক করেছে। স্লোগানটি একটি ভিডিওতে ধরা পড়ে যা পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।পুলিশ জানায়- অশ্বিনী উপাধ্যায়, বিনোদ শর্মা, দীপক সিং, বিনিত ক্রান্তি, প্রীত সিং এবং দীপককে আটক করা হয়েছে। আগের দিন, পুলিশ তলব করে সমস্ত অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল এবং বলেছিল যে বিষয়টি আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে এবং এ বিষয়ে কোনও সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না।দিল্লির ডিসিপি, দীপক যাদব বলেন, “যারা যন্তর -মন্তরে জড়ো হয়েছিল তাদের অনুমতি ছিল না। আমাদের কাছে তথ্য আছে কিছু লোক উস্কানিমূলক এবং আপত্তিকর স্লোগান দিয়েছে। আমরা একটি ভিডিওও পেয়েছি এবং এফআইআর নথিভুক্ত করেছি আমরা এই বিষয়ে আরও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “অশ্বিনী উপাধ্যায়, পরবর্তীতে সোমবার তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও জারি করে বলেছিলেন যে কথিত ভিডিও যার ভিত্তিতে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাঁকে বদনাম করার জন্য – “আমি দিল্লি পুলিশের কাছে ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি এবং তাঁদের বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি। যদি ভিডিওটি সত্য হয়, ভিডিওতে দেখা লোকদের অবশ্যই গ্রেফতার করতে হবে,” ভিডিওতে উপাধ্যায় বলেছেন।দিল্লির যন্তর মন্তরে অশ্বিনী উপাধ্যায় কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুসলিম বিরোধী স্লোগান দাবি করা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আশ্বিনী উপাধ্যায় জন্তর -মন্তর সমাবেশের সময় বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা এবং এর সাথে যুক্ত বিতর্কিত স্লোগানের সাথে সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন।নরেশানন্দের উপর হামলার কথা বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা মন্তব্য করেছিলেন যে তিনি তাঁর আন্দোলনকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। তিনি আরও বলেন, পুরোহিত বিজেপি নেতার বার্তা ভারত জুড়ে নিয়ে যেতেন। তদুপরি, তিনি পুরোহিতের উপর হামলার বিষয়ে নীরবতার জন্য বারবার লবিতে দরবার করেছিলেন। তিনি বজায় রেখেছিলেন যে তিনি তাঁর আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং তার দাবিগুলি পেশ করবেন।