বায়ুসেনার দাবি মেনে নিল কেন্দ্র। রাশিয়া থেকে ৩৩ টি যুদ্ধবিমান কিনতে চলেছে ভারত।এর মধ্যে ১২টি সুখোই ৩০ এমকেআই।২১ টি মিগ ২৯। ১৫ জুন, সোমবার রাতে গালওয়ান উপত্যকায় টহলরত ভারতীয় সেনা জওয়ানদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায় চিনের লালফৌজ। শুরু হয় দুই তরফের মধ্যে তুমুল হাতাহাতি। শহীদ হন ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান। ওদিকে চিনের ৪৩ জন সেনাকর্মী মারা যান। এরপরই মূল নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই তরফের বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। চিনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য লাদাখে ইতিমধ্যেই ভারত সুখই ৩০ এমকেআই, মিগ ২৯, মিরাজ ২০০০, জাগুয়ারের মতো যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। পদাতিক সেনাদের নিরাপত্তার জন্য লাদাখের আকাশে চক্কর কাটছে কমব্যাট শ্রেণীর অ্যাপাচি হেলিকপ্টার। অন্যদিকে উত্তর লাদাখে সীমান্তের কাছে কুড়ি হাজার সেনা জওয়ান মোতায়েন করেছে পাকিস্তান। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতকে দুই দিক দিয়ে ঘিরে ফেলার চক্রান্ত করেছে পাকিস্তান এবং চিন। যুদ্ধ হলে লাদাখে একইসঙ্গে ভারতকে পাকিস্তান এবং চিনের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। সেই আশঙ্কা করেই কয়েকদিন আগে বায়ুসেনা তরফ থেকে কেন্দ্রের কাছে ১২ টি সুখোই ৩০ এমকেআই এবং ২১ টি মিগ ২৯ যুদ্ধবিমান কেনার আর্জি জানানো হয়। অবশেষে সেই আর্জি মেনে নিলো কেন্দ্র। রাশিয়া থেকে এই যুদ্ধবিমান কিনতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে ভারতের কাছে সুখোই ৩০ এমকেআই, মিগ ২৯ থাকা সত্ত্বেও কেন নতুন করে এগুলো কেনা হচ্ছে।এই প্রসঙ্গে দুটি তথ্য সামনে এসেছে। প্রথমটি হল বর্তমানের রাশিয়া এই দুটি যুদ্ধবিমানের আধুনিকীকরণ করেছে।সেই আধুনিকীকরণের ফায়দা তুলতে মরিয়া ভারতীয় বায়ুসেনা।দ্বিতীয়টি হচ্ছে বিগত সময় একাধিক সুখোই এবং মিগ দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে।সেই শূন্যতা পূরণ করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।আগামী ৪০ বছর পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনা নিজের সেবা দিয়ে যাবে মিগ ২৯। আকাশ থেকে আকাশে যেকোনো লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানতে সক্ষম সুখোই।সম্প্রতি ব্রাহ্মমস ক্ষেপণাস্ত্র সুখোই থেকে ছোড়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এর নেতৃত্বে হওয়া প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ পরিষদের বৈঠকে এই যুদ্ধ বিমান কেনার মঞ্জুরি দেওয়া হয়। এদিন সব মিলিয়ে ৩৮ লক্ষ ৯০০ কোটি টাকা প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে।ইতিমধ্যেই ভারতের হাতে থাকা ৫৯ টি মিগ ২৯ যুদ্ধবিমান আপগ্রেডেশন এবং ২১ মিগ ২৯ কেনার জন্য খরচ হবে ৭ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সুখোই ৩০ এমকেআই ১০ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।রাশিয়া থেকে ভারত ২৪৮ টি আকাশ থেকে আকাশে আঘাত আনতে সক্ষম বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে ভারত।
উল্লেখ করা যেতে পারে সম্প্রতি বালাকোট এয়ার স্ট্রাইকের সময় ভারত তিন দশক পুরনো মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছিল। সুখোই থাকা সত্ত্বেও কেনই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছিল তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অনেকের মতে পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধে সুখোই খুব একটা কার্যকারী নাও হতে পারে। অন্যদিকে জুলাইয়ের শেষের দিকেই ভারতের হাতে চলে আসছে ছটি রাফাল যুদ্ধবিমান। এমনও শোনা যাচ্ছে জেট প্রযুক্তির পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিনতে পারে। তবে ভারতীয় বায়ুসেনা আপাতত আস্থা রাখছে যে জেড প্রযুক্তির চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান মিগ২৯ এবং সুখোই ৩০ এম কে আই।