জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

কাশ্মীর ইস্যুতে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করল কেন্দ্র। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তিতে ইতিমধ্যেই সাক্ষর করেছেন সই করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ। জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখকে কেন্দ্র শাসিত আঞ্চল করার প্রস্তাব দিল কেন্দ্র। ‘গণতন্দ্রের সবচেয়ে কালো দিন’ বলে জানিয়েছেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি।

প্রেক্ষাপট-

১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অঙ্গ ছিল না৷ ছিল মহারাজা হরি সিং-এর স্বাধীন রাজত্ব৷ ১৯৪৭ সালের ২২শে অক্টোবর কাশ্মীর আক্রমণ করে পার্বত্ত্ দুষ্কৃতীরা। রাজত্ব বাঁচাতে সেই সময় হরি সিং ভারতের কাছে সেনা সাহায্য চান। তাঁর শর্ত ছিল ভারতভুক্তি বা ‘ইনস্ট্রুমেন্ট অফ অ্যাকসেশন’৷ তাতে জম্মু-কাশ্মীরকে ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী স্বায়ত্তশাসনের বিশেষ মর্যাদা দেবার সংস্থান রাখা হয়৷ সে সময়ে বিনা পারমিটে কাশ্মীরে কেউ প্রবেশ করতে পারতো না৷

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীর একটি ব্যতিক্রমী রাজ্য –

কারণ প্রতিরক্ষা-পররাষ্ট্র বা যোগাযোগের মতো কয়েকটি বিষয় ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সেখানে ভারতের কোনও আইন প্রয়োগ করতে গেলে রাজ্য সরকারের সম্মতিও আবশ্যিক। নাগরিকত্ব, সম্পত্তির মালিকানা বা মৌলিক অধিকারের প্রশ্নেও এই রাজ্যের বাসিন্দারা বাকি দেশের তুলনায় বাড়তি কিছু সুবিধা ভোগ করেন, আর ৩৭০ ধারা বলেই তারা তাদের সেই অধিকার পেয়েছে। ৩৭০ ধারার ভিত্তি নিহিত আছে ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের সংযুক্তিকরণের ইতিহাস।

৩৭০ নং ধারা কি রদ করা যায়?

সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা আছে সংসদের৷ নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে তা সংশোধন করতে পারেন৷ অবশ্য, তা রাজ্যের ওই রাজ্যের বিধানসভার অনুমোদন সাপেক্ষে৷ ভূস্বর্গে ৩৭০ ধারা রদ করতে হলে প্রথমে সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভা এবং উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা – উভয় সভাতেই এই ধারা রদ করা সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস করাতে হবে । তাতে দুই-তৃতীয়াংশ সাংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকতে হবে। তারপর সেই প্রস্তাবটিকে অনুমোদন পেতে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভায় দুই-তৃতীয়াংশ পাস করাতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.