প্রথম থেকেই ভেবেছিলা মাননীয় কল্যান সিংহ মহাশয়ে মৃত্যু খবরটা এড়িয়ে যাব, তার প্রধান কারণ আমরা হিন্দুরা সবসময় হিন্দুত্বের রাজনীতিকরণ বা রাজনীতির হিন্দুত্বকরণের উপর বড় বেশি নির্ভর করি, যার ফলে হিন্দুত্বের কথা বললে রাজনৈতিক ট্যাগ খাবার প্রবণতা থেকেই যায়, যা আমার মতো অবস্থানগত মানুষের জন্য যথেষ্ট বিপদজনক। কিন্তু বিধিবাম এতবড় একটি হিন্দু ব্যক্তিত্বের অবসান ঘটল আর আমি যদি শ্রদ্ধা না জানাই কেবল রাজনৈতিক ট্যাগ খাবার ভয়ে সেক্ষেত্রে আর যাইহোক নিজের কাছে নিজের পরাজয় হবে নিশ্চিত।
অবশ্যই মাননীয় কল্যান সিংহ মহাশয়ের একটি সর্বসম্মত রাজনৈতিক পরিচয় ছিল কিন্তু আমার কাছে তিনি রাজনৈতিক পুরুষ নয় বরং তিনি আমার কাছে প্রাতঃস্মরণীয় হিন্দু অস্মিতার নাম,যে হিন্দু সিংহ পুরুষের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায় হিন্দু হৃদয়ের একজন হিন্দু সেনাপতি হিসাবে কোন রাজনৈতিক নেতা হিসাবে নয়।
শেষ করছি একটি ঐতিহাসিক মূল্যায়ন দিয়ে, হাজার বছরের হিন্দু পরাধীনতার প্রধান কারণ কিন্তু বিদেশীদেএ বীরত্ব নয় বরং তার প্রধান কারণ হিন্দু অনৈক্য যা প্রেক্ষাপট অনুযায়ী হিন্দুত্বের রাজনীতিকরণের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে।
৭১৫ খ্রীস্টাব্দের সিন্ধু রাজা দাহিরে মৃত্যু ও বিদেশি শাসকদের সিন্ধু বিজয়ের ৩৫ বছর পর বঙ্গে পালেরা দীর্ঘ সাম্রাজ্য স্থাপন করে। তারা সুস্পষ্ট ভাবে ভারতে বিদেশি শাসকদের আক্রমণের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিলেন, কিন্তু রাজনৈতিক হিন্দুত্বের মতানৈক্যর কারণের জন্য কিন্তু পাল বা তৎকালীন অন্যান্য হিন্দু রাজারা বিদেশি শাসকদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলেনি যার ফল ভারতবর্ষ ১০০০ বছরের তমসাবৃও ধ্বংসলীলার মাধ্যমে চুকিয়েছে।
সুতরাং এই ভুলের যেন বারংবার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, হিন্দুত্বের মূল্যায়ন যেন রাজনৈতিক ভাবে কখনও না হয়,মূল্যায়ন হোক কর্মে আর ধর্ম পালনের মানদণ্ডে।
সুমিত ভরদ্বাজ