যাত্রামোহন সেনগুপ্তের একমাত্র বংশধর টালমাটাল চোখে তাকিয়ে থাকা এই মানুষটি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, কিন্তু স্বীকৃতি পাননি

শুরুতেই জানাই বাংলাদেশের সমাজ সেবা মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে এইমাত্র জেনেছি। নীচে দিলুম তার ছবি-

বাংলাদেশের সব বন্ধু এবং শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে কিছু তথ্য ও একটি ছবি।
কারও কিছু করার আছে?
করা যায়, কিছু?

নীচের লেখাটা
এস. অনিমেষ কুমার এর দেওয়াল থেকে নেওয়া, বানান সংশোধিত

পুলিশ কর্মকর্তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এই হতদরিদ্র মানুষটির নাম মিলন সেনগুপ্ত ।

পরার মত একটিমাত্র জামা আছে তার । আজকে ধুয়ে দিয়েছেন তাই খালি গায়ে রয়েছেন তিনি । শুকানোর আগে পর্যন্ত এভাবেই থাকতে হবে তাঁকে।

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় কোন রকমে পরিবার নিয়ে টিঁকে আছেন তিনি ।

এই ব্যক্তি সাধারণ কোন পরিবারের মানুষ নন । চট্টগ্রামের কীর্তিমান পুরুষ, উপমহাদেশের বিখ্যাত বাঙালী আইনজীবী, রাজনীতিক ও সমাজকর্মী যাত্রামোহন সেনগুপ্তের একমাত্র বংশধর তিনি । টালমাটাল চোখে তাকিয়ে থাকা এই মানুষটি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, কিন্তু স্বীকৃতি পাননি । ফলে তাঁর শেষ দিনগুলো কেমন যাচ্ছে সহজে অনুমেয় ।

তাঁর পূর্বপুরুষ যাত্রামোহন সেন চট্টগ্রাম শহরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘টাউন হল’, ‘ডাঃ খাস্তগীর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়’ সহ অনেক শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ; এছাড়া তিনি মন্দিরও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । এমনকি তিনি ‘নূর মহম্মদ তরফ’ নামে মসজিদের ভূমিও দান করেছিলেন ।

তাঁর সুযোগ্য পুত্র দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ছিলেন আরেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব । তিনি ছিলেন প্রথমসারির কংগ্রেস নেতা ও উকিল । উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে সশস্ত্র বিপ্লবীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইংরেজ শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি । জেল খেটে খেটে মাত্র ৪৮ বছর বয়সে কারাগারেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন । তাঁর স্ত্রী ভিনদেশী নেলি গ্রে (নেলি সেনগুপ্ত) ছিলেন আরেক বিখ্যাত মানুষ । ছিলেন রাজনীতিক ও সমাজকর্মী । তিনিও হেঁটেছিলেন স্বামীর পথেই । ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী হয়েছিলেন তিনি ।

অসাম্প্রদায়িক আর মানবিক এই সেন পরিবারের মানুষ উপমহাদেশের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং শিক্ষাবিস্তারে যে অবদান রেখে গেছেন তা এক কথায় ঐতিহাসিক ।

ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর আর খামখেয়ালী । শুনেছি মিলন সেনগুপ্তের অবশিষ্ট সব সম্পদ বেদখল হয়ে গেছে ।

কারা
বেদখল
করেছে

তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আর এখানেও সরকার যথারীতি চুপ । এই লজ্জা রাষ্ট্র, সমাজ, সভ্যতার ; আমার, আপনার, আমাদের সবার।

¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤

তো, এ একটা মাত্র ছবি

সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.