নয়া বিপদ দেশের আকাশে৷ বৃহস্পতিবার মার্কিন সাইবার সিকিওরিটি ফার্ম ফায়ার আই জানিয়েছে ভয়ঙ্কর তথ্য৷ জানা গিয়েছে ভারতীয় স্বাস্থ্যক্ষেত্র থেকে চুরি গিয়েছে ৬৮ লক্ষ তথ্য৷ এর মধ্যে রয়েছে রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের তথ্যই৷ একটি নামকরা ভারতীয় সংস্থার ওয়েবসাইট হ্যাক করে এই চুরি হয়েছে বলে জানাচ্ছে ওই মার্কিন সংস্থা৷
তবে কোন ভারতীয় স্বাস্থ্যসংস্থার ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে, তা জানানো হয়নি৷ ফায়ার আই জানাচ্ছে এই হ্যাকাররা ভারত থেকে তথ্য চুরি করে মোটা দামে তা বিক্রি করছে চিনের কাছে৷ এই সব হ্যাকারদের বেশিরভাগই চিনের নাগরিক বলে খবর৷ বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে এই তথ্য বিক্রি করা হবে সূত্রের খবর৷ এমনকী চোরা পথে এই হ্যাকাররা ভারতের বাজারেও সেই তথ্য বিক্রি করতে পারে৷
ফেব্রুয়ারি মাসে “fallensky519” নামে একটি হ্যাকার গ্রুপ ভারতীয় স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে ৬৮ লক্ষ তথ্য চুরি করে৷ সংবাদসংস্থা আইএএনএস জানাচ্ছে এই তথ্যে রয়েছে রোগী ও চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য৷ শুধু ফেব্রুয়ারি মাসই নয়, ২০১৮ সালের পয়লা অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ৩১শে মার্চের মধ্যে একাধিকবার এই হানা চলেছে৷ এই ইস্যুতে ভারতকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে ফায়ার আই৷ ২ হাজার ডলারে এক একটি তথ্য বিক্রি করা হয়েছে বিশ্বের বাজারে৷
ফায়ার আই জানাচ্ছে, তারা কড়া নজর রেখেছিল এবিষয়ে৷ তবে হ্যাকিং ঠেকানো যায়নি৷ এর আগে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসের মধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ২৫ ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে বলে কেন্দ্র জানিয়ে ছিল৷ কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স ও আইটি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ রাজ্যসভায় লিখিতভাবে জানিয়ে ছিলেন, ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমারজেন্সি রেসপন্স টিমের (CERT-In) সূত্র অনুযায়ী, মোট ১৯৯, ১৭২, ১১০ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ২৫ ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে যথাক্রমে ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯-এর মে পর্যন্ত৷
সাম্প্রতিক এই সাইবার হুমকি নিয়ে সতর্ক করেছিল ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমারজেন্সি রেসপন্স টিম৷ আরবিআই পোর্টালের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে ১১৫.৫২৩ কোটি পয়েন্ট অব সেল (PoS) ট্রান্জাকশন হয়েছে৷ ২০১৪-১৫ সালে যা ছিল ১৪২.৩২১ কোটি, ২০১৫-১৬ সালে ২৫৫.৯২৮কোটি, ২০১৬-১৭ সালে ৩৪৮.৬৪৩ কোটি, ২০১৭-১৮ সালে ৪৭৪.৮৫৫কোটি এবং ২০১৮-১৯ সালে ৬১৭.৬৮৭কোটি৷
এবারের হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে ফায়ার আই জানাচ্ছে বিশ্ব জুড়ে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে চিন৷ ২০২০ সালের মধ্যেই বিশ্ব জুড়ে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে থাবা বসানোর লক্ষ্যে এই হ্যাকিংয়ের পথ বেছে নিয়েছে চিন বলে মনে করছে সাইবার বিশেষজ্ঞরা৷