হিন্দুত্ববাদী নেতা কমলেশ তিওয়ারি খুনের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সম্ভাব্য খুনিদের চিহ্নিত করল পুলিশ। উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা এই ঘটনায় নেতার বাড়ির সামনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই শুটারকেও চিহ্নিত করেছে। এই ঘটনায় সুরাত ও আহমেদাবাদ থেকে পাঁচজনকে আটকও করেছে তারা।
এটিএস সূত্রে খবর, দুই শুটারের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আটক হওয়া তিনজনকে জেরা করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। স্থানীয় কেউ এই খুনের পিছনে যুক্ত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানানো হয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দু’জন পুরুষ ও এক মহিলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কমলেশের বাড়ি থেকে দুষ্কৃতীদের সুরক্ষিত অবস্থায় বেরিয়ে যেতে স্থানীয় কেউ সাহায্য করে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
শুক্রবার বিকালে নিজের বাড়িতে খুন হন হিন্দুত্ববাদী নেতা কমলেশ তেওয়ারি। তিনি হিন্দু সমাজ পার্টি নামে এক দলের নেতা ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গলায় গেরুয়া রং-এর স্কার্ফ জড়ানো দুই ব্যক্তি এ দিন কমলেশের সঙ্গে দেখা করতে আসে। তারা বলেছিল, দেওয়ালির মিষ্টি দিতে এসেছে। তাদের একজন ছুরি দিয়ে কমলেশের গলা কেটে দেয়। তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আর একজন তাঁকে লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি চালায়। স্থানীয় লোকজন দৌড়ে এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে।
দু’বছর আগে কমলেশ হিন্দু সমাজ পার্টি গঠন করেন। অভিযোগ, ২০১৫ সালে তিনি মহম্মদ সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্য করেছিলেন। তার পরে বিরাট বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বহু মানুষ ওই মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। সম্প্রতি তিনি সেই অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকেই কেউ তাঁকে খুন করেছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ও পি সিং বলেছেন, খুনিরা কমলেশের পরিচিত ছিল। খুনের আগে দু’জন ৩৬ মিনিট কথা বলেছিল তাঁর সঙ্গে। খুনিদের খুঁজে বার করার জন্য ১০ টি টিম গঠিত হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে এক মাসের মধ্যে এই নিয়ে চারজন হিন্দুত্ববাদী নেতা খুন হলেন। গত শনিবার বিজেপির কাউন্সিলার ধারা সিং গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি সাহারানপুর জেলায় এক সুগার মিলে যাওয়ার পথে তাঁকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। তার কয়েকদিন আগে বস্তি জেলায় কবীর তেওয়ারি নামে এক বিজেপি নেতা খুন হন। তিনি একসময় ছাত্রনেতা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্ররা কয়েকটি সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। গত ৮ অক্টোবর দেওবন্দ জেলায় বিজেপি নেতা যশপাল সিংকে গুলি করে মারা হয়। তিনি একসময় বিজেপির কিষাণ মোর্চার সহ সভাপতি ছিলেন।