জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা তথা ৩৭০ ধারা বিলোপের পরে দু’দেশের উত্তেজনার পারদ চরমে উঠেছে। ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার অজয় বিসারিয়াকে দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইমরান খান প্রশাসন। অন্যদিকে, ভারতের গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, যে কোনও মুহূর্তে হামলা চালাতে পারে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি। এমনকি এও খবর মিলেছে, স্বাধীনতা দিবসের আগেই বড়সড় নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে ভারতের ১৯টি বিমানবন্দরে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিমান মন্ত্রকের অধীনে থাকা ‘দ্য বুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি’ (বিসিএএস) প্রতিটি রাজ্যের পুলিশ কর্তা, সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) এবং প্রতিটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলিকে সতর্ক করেছে। নজরে রয়েছে দেশের মেট্রো শহরগুলির ১৯টি বিমানবন্দর। যার মধ্যে নাম রয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরেরও। কেন্দ্রের ওই নির্দেশিকায় শুধুমাত্র বিমানবন্দরই নয়, সতর্ক করা হয়েছে বায়ুসেনা ঘাঁটি, এয়ারস্ট্রিপ, এয়ারফিল্ড, হেলিপ্যাড, ফ্লাইং স্কুল, বিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকেও।
বস্তুত, কিছুদিন আগেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘পুলওয়ামার মতো ঘটনা’ ফের ঘটতে পারে। তার পরেই জইশের ছক নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছেন গোয়েন্দারা। ইমরানের মন্তব্যকে উস্কানিমূলক বলেই মনে করছে ভারত। দিল্লির মতে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে সাহায্য করবেন।ইমরান যখন পাকিস্তানের সংসদে ওই বিবৃতি দিচ্ছিলেন, তখনই জইশ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের ভাই রউফ আজঘার হাজির ছিলেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। তার আগে রাওয়ালপিন্ডিতে তিনি সেনাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলেও খবর।
বিশেষ সতর্কতা হিসেবে নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে মেনে চলতে বলা হয়েছে কুড়িটি পদ্ধতি। পরবর্তী নোটিস জারির আগে পর্যন্ত এই বিশেষ পদ্ধতিগুলি মেনে চলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের প্রতিটি প্রবেশ পথেও বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা। প্রবেশ পথে যাতে কোনও গাড়ি দাঁড়াতে না পারে, নির্দেশে তা-ও বলা হয়েছে। বিমানবন্দরের পার্কিং লটে দাঁড়ানো গাড়িগুলিকে যেতে হবে আরও কড়া চেকিংয়ের মধ্যে। বিমানে ওঠার আগে যাত্রী ও তাঁদের হ্যান্ডব্যাগগুলিকে যে যে পরীক্ষার মাধ্যমে যেতে হয়, তার মাত্রাও বাড়ানো হয়েছে। বিমানবন্দরে যাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে আসা ব্যক্তিরা যে জায়গায় দাঁড়ান, সেখানকার নিরাপত্তাও বাড়ানো হচ্ছে।
শুধু যাত্রিবাহী বিমানই নয়, প্যারাগ্লাইডার, ইউএএস (আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেমস), ড্রোন, হট এয়ার বেলুন, পাওয়ার হ্যাং গ্লাইডারের মতো অপ্রচলিত আকাশযানের নিরাপত্তাও বাড়াতে বলা হয়েছে।