পাতে গরম ভাত দেওয়া হয়েছে -তা থেকে ধোঁয়া উঠছে। অন্নের প্রতিটি কণা অভগ্ন, একটির থেকে অন্যটিকে পৃথক করা যায়, সরু প্রতিটি দানা সুসিদ্ধ , সুস্বাদু এবং দুধের মতো সাদা, তাতে ভুর ভুর করে চমৎকার গন্ধ নির্বাসিত হচ্ছে। তার উপরে গরম ঘি। কেয়া পাতার ডোঙ্গায় তপ্ত ডাল গড়িয়ে যাচ্ছে। খাবার অন্তিমে বাটিতে তপ্ত ঘন দুগ্ধ, চাঁপার কলা আম্র…. ছানা সন্দেশ অপার। পিপীলিকা , মক্ষিকা পাতের পার্শ্বে লোভে প্রদক্ষিণ করছে।
হাতে খই , বেতে খই
তবু করে খই খই।
যুগযুগান্ত ধরে এই তো আমাদের রসনা তৃপ্তির অমোঘ দৃশ্য। ঋগ্বেদে বাজ, যশ, ব্রহ্ম, শ্রব, চনঃ ইত্যাদি শব্দ প্রাপ্তি ঘটে, এগুলো অন্ন অর্থাৎ নানা প্রকার খাদ্যের রূপ বিশেষ। এ ব্যতীত পয়ঃ ( দুগ্ধ বা ক্ষীর ) মধু ,ঘৃত , ধানাঘৃতস্রবঃ, গুড়ধানাঃ , স্বাদুদক্ষা, পুরোডাশ প্রভৃতির উল্লেখ পাওয়া যায়। বেদে নানা ওষধিগুণ খাদ্য, শস্য এবং মশলার উল্লেখ আছে।
মনুসংহিতায় অপূপ, সরস পায়েস, সূপ এবং ইক্ষু বা শর্করার উল্লেখ আছে। আবার কৃষর বা খিচুড়ি, সংযাব অর্থাৎ ঘি, ক্ষীর ও গুড় যুক্ত আটা বা ময়দার কথা বলা হয়েছে। অমরকোষে টাটকা ও বাসী দুধের ঘি , দই, পরমান্ন খন্ড, মন্ড, কুর্চিকা, রসালা ইত্যাদি নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। আবার কান্বকুব্জের রাজা বিজয়চন্দ্র বা জয়চন্দ্রের সভাকবি শ্রীহর্ষচরিত #নৈষধচরিত কাব্যের নল দময়ন্তী বিবাহের প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, মাছের তরকারি, ছাগ-মেষ- হরিণের মাংস ,পিঠা , সুগন্ধি পানীয়, তাম্বুল পরিবেশিত হয়েছিল।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় তিন প্রকার খাদ্যের কথা বলা হয়েছে । যথা – সাত্ত্বিক, রাজসিক এবং তামসিক।
আয়ূ সত্ত্ব বলারোগ্য সুখ প্রীতি বিবর্ধনা।ট
রস্যাঃ স্নিগ্ধাঃ স্থিরা হৃদ্যা আহারাঃ
সাত্ত্বিক প্রিয়া।।
আয়ু বৃদ্ধি বল আরোগ্য সুখ ও প্রীতিবর্ধক সরল স্নিগ্ধ পুষ্টিকর এবং মনোরম আহারই স্বাত্তিক হয় এবং স্বাত্তিক ব্যক্তির তাই প্রিয়।
কট্বম্ল লবণাতুষ্ণ্য তীক্ষ্ণ রূক্ষ বিদাহিনঃ।
আহারা রাজ সস্যেষ্টা দুঃখ শোক ময়প্রদাঃ।।
কটু, অম্ল, লবণাক্ত , অত্যন্ত তপ্ত, তীক্ষ্ণ, রুক্ষ , প্রদাহকর এবং দুঃখ চিন্তা, রোগ উৎপাদনকারী আহার রাজসিক ব্যক্তিদের প্রিয়।
যাত সামং গত রসং পূতি পর্য্যষিতঞ্চ সৎ।
উচ্ছিষ্টমপি চামেব্যং ভোজনং তামস প্রিয়ং।।
আধ কাঁচা,পোড়া, পচা, রসহীন , দুর্গন্ধযুক্ত, বাসি, উচ্ছিষ্ট এবং অপবিত্র আহার সাধারণত তামসিক ব্যক্তির প্রিয়।
এই ভোজনের সঙ্গে বৈষ্ণব সমাজ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গের খাদ্য ইতিহাস রচনা করতে গেলে বৈষ্ণব সমাজের খাদ্য ব্যবস্থাকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায় না। শ্রীচৈতন্যদেব পূর্ব এবং পরবর্তী বৈষ্ণব সমাজের প্রভাব সম্পূর্ণ বঙ্গ তথা ভারত জুড়ে অবস্থান করছে। ষোড়শশতকে বৈষ্ণব ধর্ম দর্শন , সঙ্গীত, সাহিত্য- নাট্য- স্থাপত্য- চিত্রকলা, শিল্প-বুদ্ধি ও মননশীলতা, সংবেদনশীলতা, রাজনীতি, সূপবিদ্যা অর্থাৎ রন্ধনপ্রণালী বঙ্গ তথা ভারতে একটি নব অধ্যায় সংযোজন করেছিল। যা আজ সমগ্র ভারতে কোথাও প্রকট ,কোথাও প্রচ্ছন্নভাবে বহমান।
মরু আক্রমণের ফলে বিধস্ত ষোড়শ শতকের বঙ্গে নদের নিমাই নবজাগরণের সূচনা করেন। সেই মহাযজ্ঞে সামিল হয়েছিলেন বৃন্দাবনের ষড়গোস্বামী শ্রীরূপ , সনাতন, শ্রীজীব গোস্বামী, শ্রী গোপাল ভট্ট, শ্রী রঘুনাথ ভট্ট, শ্রী অদ্বৈত আচার্য, শ্রী নিত্যানন্দ, শ্রী গদাধর পন্ডিত গোস্বামী, শ্রী বৃন্দাবন দাস, শ্রী স্বরূপ দামোদর, শ্রী কৃষ্ণদাস কবিরাজ, শ্রীনিবাস আচার্য, শ্রী নরোত্তম ঠাকুর, শ্রী শ্যামানন্দ প্রভু, শ্রী নরহরি চক্রবর্তী, শ্রীজ্ঞান দাস, শ্রী গোবিন্দ দাস, শ্রী বাসু ঘোষ, শ্ৰী নয়নানন্দ ঠাকুর ও পরম্পরাগতভাবে অজস্র বৈষ্ণবাচার্যগণ।
শ্ৰীচৈতন্য সংস্কৃতির ফলে পূর্ণ বঙ্গ জুড়ে বৃদ্ধি পেলে অসংখ্য শ্রীপাট ও মন্দির। তাদের কেন্দ্র করে পুনরায় রচিত হল বাঙ্গালীর এক উজ্জ্বল সংস্কৃতি। যার প্রভাব ঠাকুর বাড়ির রবি ও তাঁর সৃষ্টিতেও গভীরভাবে ফেলেছিল। সে সময়ের বঙ্গে বৈষ্ণবাচার্য হবার বেশ কিছু শর্ত ছিল , যথা- শাস্ত্রজ্ঞ , সংগীতবিদ , একজন সর্বাঙ্গীণ নান্দনিক ব্যক্তি, মার্দঙ্গিক, স্বভাবজ ভক্তি, করুনাপার এবং সর্বোপরি একজন ভালো সূপবিদ হওয়া। সূপবিদ হলে তবেই সম্পূর্ণভাবে নিষ্ঠাবান ,ঐতিহ্যবাহী মহোৎসব , অনুষ্ঠানাদির সকল বৃত্তি বহন করা , সেবাদি কর্ম করা সম্ভব। ঈশ্বর সেবা হল আত্মবৎ সেবা।
মহাপ্রভু তো জলখাবারের বেলায় বাসিভাতের আমানি, নুন আর লঙ্কা পোড়া খেয়ে উদ্বাহু হয়ে ছুটে যেতেন কৃষ্ণ নামের পসরা সাজিয়ে ব্রজভূমির পথে পথে। মধ্যাহ্নে তেতে পুড়ে এসে স্নানাহ্নিক করে নানা ব্যঞ্জন সহযোগে অন্ন গ্ৰহণ করতেন। সংসারে অর্থের টানাটানি থাকলেও অন্ন কষ্ট পেতেন না। লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী এবং পরবর্তীতে বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী উভয়েই মা অন্নপূর্ণা রূপে সংসারের ভাণ্ডার অফুরন্ত রেখেছিলেন। আর প্রভু বিশ্বাস করতেন ” জিহ্বা দিয়েছেন যিনি , আহার দেবেন তিনি…” । বিশ্বম্ভর মিশ্র খেতে ভালোবাসতেন নিমপাতার ঝোল, শুক্তো, ল্যাবড়া বা নবরত্ন , বিউলির ডাল, মোচার ঘণ্ট, টক। সে সময় বৈষ্ণব সমাজে খুব বিলাসী খাবার ছিল- প্রথম পাতে পুষ্পান্ন আর শেষপাতে পরমান্ন। মহাপ্রভু সাত্ত্বিক নিরামিষভোজী ছিলেন।
কাটোয়ার সন্ন্যাস দীক্ষা নেওয়ার তিনচারদিন রাঢ় পরিক্রমা করে শান্তিপুরে যে সমস্ত ব্যঞ্জনসামগ্রী দিয়ে অদ্বৈত আচার্য প্রভু তাঁর গৃহে শ্রীচৈতন্যদেবের উপবাস ভঙ্গ করিয়েছিলেন। কবি কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থে তার অতি লোভনীয় বর্ণনা আছে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি শ্রী কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর চৈতন্যচরিতামৃতর রচনা কাল ছিল ১৬১৫ খ্রিস্টাব্দ। উক্ত গ্রন্থে যা যা খাদ্যর উল্লেখ আছে তা তালিকা যোগে বিশদে লিখলাম। তবে শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের শতাধিক অনুলিপি প্রাপ্ত হয়। তাই এই মহাগ্রন্থের এক প্রকাশনার সঙ্গে অন্য প্রকাশনার বেশ কিছু পার্থক্য দেখা যায়। যা হোক খাদ্য বিবরণ ইত্যাদি উল্লেখ করা হল।
“ পীত – সুগন্ধি ঘৃতে অন্ন সিক্তকৈল ।
চারিদিগে পাতে ঘৃত বাহিয়া চলিল ।।
কেয়াপত্র – কলার খোলা – ডোঙ্গা সারি সারি ।
চারি দিগে ধরিয়াছে নানা ব্যঞ্জন ভরি ।।
দশ প্রকার শাক , নিম্ব – সুকুতার ঝোল ।
মরিচের ঝাল , ছানা বড়া , বড়া ঘোল ৷৷
দুগ্ধ তুম্বী , দুগ্ধ কুষ্মাণ্ড , বেসরি , লাফরা ।
মোচাঘণ্ট , মোচাভাজা , বিবিধ শাকরা ।।
বুদ্ধ কুষ্মাণ্ড বড়ীর ব্যঞ্জন অপার ।
ফুল বড়ী ফল মূলে বিবিধ প্রকার ।।
নব – নিম্ব প্রত্রসহ তৃষ্ট – বাৰ্তাকী ।
ফুলবড়ী , পটোল – ভাজা , কুষ্মাণ্ড মানচাকী ।।
ভৃষ্ট – মাষ , মুদগা – সুপ অমৃতে নিন্দয় ।
মুধুরান্ন , বড়াম্নাদি অম্ল পাঁচ ছয় ।।
মুগ বড়া , মাষ বড়া , কলাবড়া মিষ্ট ।
ক্ষীরপুলী , নারিকেল – পুলী আর যত পিষ্ট ।।
কাঞ্জি বড়া , দুগ্ধচিঁড়া , দুদ্গ – লকলকী ।
আর যত পিঠা কৈল , কহিতে না শকি ।।
ঘৃতসিক্ত পরমান্ন , মৃৎকুণ্ডিকা ভরি ।
চাঁপাকলা – ঘন দুগ্ধ – আম্র তাহা ধরি ।।
রসালা – মথিত দধি , সন্দেশ অপার ।
গৌড়ে উৎকলে যত ভক্ষ্যের প্রকার ।। ” —শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত , মধ্যলীলা , পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ ।। ( শ্লোক ২০৮-২১৮ )
আচার্যগৃহ মহাপ্রভুর উপবাস ভঙ্গের নিমিত্ত খেতে দিয়েছিলেন – পীত ঘৃত সিক্ত শালী অন্নের স্তূপ। নানান শাক, পটল, কুমড়ো, বড়ি ও মান কচুর সঙ্গে দই এবং মরিচ সহযোগে শুক্তো, বেতো শাক ও নরম কচি নিমপাতা ভাজা, ফুলবড়ি, কুমড়ো ও মানচাকি ভাজা, মোচার ঘণ্ট, দুগ্ধ কুষ্মান্ড, মুগডালের বড়া, মাষ বড়া, কলার বড়া, পাঁচ ছয় রকম অম্ল -মধুরাম্ল, বড়া অম্ল ইত্যাদি পঞ্চাশ রকমের ব্যঞ্জন। নারিকেলের শাঁস , চিনি ও ছানা, মাটির মালসায় সঘৃত পায়েস, ঘন দুধ , ক্ষীর পুলি, নারিকেল পুলি, চিঁড়া, লাউয়ের পায়েস, দই, সন্দেশ। মুখশুদ্ধি করতে দিয়েছেন লবঙ্গ, এলাচ এবং দারুচিনি। সকল ভোজের উপর তুলসী মঞ্জরী দেওয়া। সুগন্ধী জল পিঁড়ির উপর সাদা কাপড় ঢাকা দিয়ে অন্ন পরিবেশন করা হয়েছিল।
বৈষ্ণবীয় রীতিতে ভোগ অন্ন পরিবেশন বাংলা বৈষ্ণব সাহিত্যের এক অপূর্ব দৃশ্য ।অতি তুচ্ছ বস্তু এখানে বড় উপাদেয় হয়ে ওঠে । গ্রাম বাংলার রন্ধন পটিয়সী মা ,স্ত্রী বা ভগিনীর হাতে রাঁধা ব্যঞ্জন স্বর্গের অমৃত সমান। কৃষ্ণদাস কবিরাজ পুরীতে বাসুদেব সার্বভৌম ভট্টাচার্য্যের বাড়িতে চৈতন্যদেবেরনিরামিষ আহারের বিবরণ যে দিয়েছেন—
“ বত্রিশ কলার এক আঙ্গেটিয়া পাত,
তিন মান তণ্ডুল তাতে ধরে ভাত।
মধ্যে পাত ঘৃত সিক্ত শাল্যন্ন স্তূপ ।
চারিদিকে ব্যঞ্জন ডোঙ্গা আর মুগসূপ ।।
বাস্তুক শাক পাক বিবিধ প্রকার ।
পটল কুষ্মাণ্ড বড়ী মানকচু আর ।।
চই মরিচ শুক্তা দিয়া সব ফলমূলে ।
অমৃত নিন্দুক পঞ্চবিধ তিক্তঝালে ।।
কোমল নিম্ব পত্র সহ ভাজা বার্তাকী ।
ফুলবড়ী ভাজা আর কুষ্মাণ্ড মানচাকী ।।
নারিকেল শস্যছানা শর্করা মধুর ।
মোচাঘণ্ট দুগ্ধ কুষ্মাণ্ড সকল প্রচুর ।।
মধুরাম্ল বড়াম্লাদি অম্ল পাঁচ ছয় ।
সকল ব্যঞ্জন কৈল লোকে যত হয় ।।
মুগবড়া মাসবড়া কলাবড়া মিষ্টান্ন ।
ক্ষীরপুলি নারিকেল যত পিঠা ইষ্ট ।।
.... ..... ...
সঘৃত পায়স মৃৎকুণ্ডিকা ভরিয়া ।
তিনপাত্রে ঘনাবর্ত দুগ্ধ রাখে তো ধরিয়া ।।
দুগ্ধ চিড়া কলা আর দুগ্ধ লকলকি ।
যতেক করিল তাহা কহিতে না শক্তি ।।”
এক্ষেত্রে বলে রাখি রাজপন্ডিত বাসুদেব সার্বভৌম ভট্টাচার্য বাঙ্গালী ছিলেন। শালি ধানের অন্ন, পাঁচ সাত প্রকার ব্যঞ্জন, পটল ভাজা, নিমপাতা ভাজা, শাক, মোচার ঘণ্ট, লেবু, আদা কুঁচি, দধি দুগ্ধ, খণ্ডসার। নানাবিধ ফল। ফলগুলি ছুলে জলে ডুবিয়ে সুশীতল করা এবং সজল, সশাঁস ডাব …. এই খাদ্য চৈতন্যদেব ও তাঁর পার্ষদদের পরিবেশন করা হয়েছিল।
হোরা বা হেরা পঞ্চমী যাত্রা দর্শনোপলক্ষে কলিঙ্গ রাজা প্রতাপরুদ্রের সঙ্গে শ্রীচৈতন্যের মিলন প্রসাদভোজন লীলার উল্লেখ চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থে সুন্দরভাবে করা হয়েছে। মহারাজ প্রতাপরুদ্র মহাপ্রভু ও তাঁর ভক্তদের জন্য বলগন্ডি ভোগের প্রসাদ পাঠিয়েছিলেন। যথা – নিসকড়ি প্রসাদ ( পাক করা অন্ন ব্যঞ্জনাদি, দই, ক্ষীর , ফলমূল) , ছানা, পানা, পৈড় , আম , নারিকেল, কাঁঠাল, নানা প্রকার কলা, বীজতাল, নারঙ্গ অর্থাৎ কমলালেবু, কচিতাল, ছোলঙ্গ বা টাবা লেবু, বীজপুর বা দাড়িম্ব বা ডালিম, বাদাম, ছোহারা বা অন্যদ্বীপের খেজুর, পিণ্ড খেজুর, দ্রাক্ষা বা আঙ্গুর, নানাবিধ লাড়ু , অমৃত গুটিকা , আদি ক্ষীরসা, অমৃত মন্ডা, ছানাবড়া, কর্পূর কুলি, সরামৃত, সরভাজা, সরপুলী , হরিব্ল্ল্ভ, সেবতি, কূপুর মালতি, ডালিম, মরিচা, নাড়ু, নবাত বা চিনির সিরায় পক্ক মিষ্ট, অমৃতি পদ্মচিনি, চন্দ্রকান্তি, খাজা, খন্ডসার, বিয়রী কদমা, তিলখাজা, ফলফুল পত্রযুক্ত, দধি দুগ্ধ, তত্রু বা ঘোল, রসাল শিখরিণী অর্থাৎ দই, দারুচিনি, গোলমরিচ, ঘি, মধু, হিমায়িত করে উৎকৃষ্ট পানীয়, স – লবণ অঙ্কুরিত মুগ, আদা, লেবু, কুল ইত্যাদি । এসকল কেয়াপাতার দোনে করে মহাপ্রভু নিজহস্তে সকল পার্ষদ এবং ভক্তদের পরিবেশন করে সেবা করেন।
ক্রমশঃ
তথ্যঃ শ্রী শ্রী চৈতন্যচরিতামৃত
©দুর্গেশনন্দিনী