গোকর্ণ, পাহাড় ও সমুদ্রের মেলবন্ধনে এক অপূর্ব, একাকী ভ্রমণ দ্রষ্টব্য। যারা একটু নিরিবিলি, নির্জনে নিভৃতে ছুটি কাটাতে চান তাদের জন্য একেবারে আদর্শ ভ্রমণস্থল। যেকোনো কারণেই হোক গোকর্ণ গোয়া বা বিশাখাপত্তনমের থেকে অনেক বেশী সুন্দর হলেও এখানে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা লক্ষ্যণীয় ভাবে কম। বিশেষ করে কুদলে বীচের 99% পর্যটকই ইউরোপিয়ান, রাশিয়ান বা আমেরিকান।
গোকর্ণের গন্তব্যস্থলগুলো হল Mythological প্রসিদ্ধ গোকর্ণ মন্দির, গোকর্ণ বীচ, ওম বীচ, কুদলে বীচ, হাফ মূন বীচ ও প্যারাডাইস বীচ।
প্রতিটি বীচেরই প্রাকৃতিক শোভা প্রশ্নাতীত এবং হাফ মূন বীচ ও প্যারাডাইস বীচে পৌঁছানোর একমাত্র উপায় ওম বীচ থেকে পাহাড়ি পথে 4-5 ঘন্টার ট্রেকিং।
আর ওম বীচ বাস্তবিকই ওম চিহ্নের মত আর গোকর্ণ বীচ বাস্তবিকই গরুর কানের আকৃতিবিশিষ্ট্য তবে গোকর্ণ বীচ এতটাই বড় এই বীচের প্রকৃত আকৃতি বুঝতে হলে আপনাকে ঘন্টাখানেক ট্রেক করে কুদলে বীচ ও গোকর্ণ বীচের মধ্যবর্তী পাহাড়ে উঠতেই হবে।
তবে গোকর্ণ এতটাই সুন্দর যে ট্রেক না করলেও আপনার মন ভরে যাবে। নিশ্চিত করেই বলছি গোকর্ণ ভারতের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে অন্যতম সুন্দর এবং একটু অন্যরকম এখানকার বীচের সাথে ভারতের মূল ভূখণ্ডের অন্যান্য বীচের তুলনা চলে না; সেটা গোয়া, কেরালা, বিশাখাপত্তনম বা অন্যান্য রাজ্যের যে বীচই হোক না কেন।
গোকর্ণের আরও একটি সুবিধা হলো কুদলে বীচ বাদে অন্যান্য বীচের হোটেল খরচও অন্যান্য Foreigners Only বীচগুলোর মত তেমন Costly নয়; দিনপ্রতি মোটামুটি 1500-2000 টাকায় ভালো মানের দ্বিশয্যার হোটেল অনায়াসেই পাওয়া যায়।
তবে একমাত্র সমস্যা হল যোগাযোগ ব্যবস্থা; কলকাতা থেকে গোকর্ণ যাওয়ার সরাসরি কোন বিমান বা ট্রেন নেই। বিমানে গেলে ব্যাঙ্গালোর বা ম্যাঙ্গালোর বা গোয়া বিমানবন্দর থেকে নিজস্ব গাড়ি বা ট্রেনে গোকর্ণ পৌঁছানো যায়। ব্যাঙ্গালোর বা ম্যাঙ্গলোর থেকে সরকারি A.C. Sleeper/Non Sleeper বাস সার্ভিসও বেশ ভালো। আর ট্রেনে গেলে প্রথম ব্যাঙ্গালোর, ম্যাঙ্গালোর বা গোয়া পৌঁছে সেখান থেকে ট্রেন পরিবর্তন করে গোকর্ণ পৌঁছানো যায়।
তবে মনে রাখবেন ম্যাঙ্গালোর থেকে গোকর্ণ কোঙ্কন রেলওয়ের এই সফর এতটাই সুন্দর যে আপনার সারা জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ট্রেনসফর হবে কথা দিচ্ছি।