২২ গজের ইনিংস পেরিয়ে রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়েছিলেন আগেই। এ বার শুধু ব্যাট হাতে তাঁর ঝোড়ো পারফরম্যান্স দেখার অপেক্ষা। গত মাসেই আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার তথা কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। তবে তিনি প্রার্থী হবেন কিনা এবং হলে কোন কেন্দ্র থেকে ভোটযুদ্ধে নামবেন, সেই নিয়ে কানাঘুষো চলছিল। সোমবার নির্বাচন কমিশন ২৪তম নামের তালিকা প্রকাশ করে জানায়, পূর্ব দিল্লির লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন গৌতি, নয়াদিল্লিতে প্রার্থী থাকছেন সাংসদ মীনাক্ষী লেখি।
বেশ কিছুদিন ধরেই রাজধানীতে গম্ভীরকে নিয়ে চর্চা চলছিল। প্রাক্তন ওপেনার নয়াদিল্লি কেন্দ্রে প্রার্থী হতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে ফিসফাসও শোনা যাচ্ছিল। নয়াদিল্লি কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ হলেন মীনাক্ষী লেখি। কিন্তু গম্ভীরের বাড়ি দিল্লির রাজেন্দ্র নগরে। যা আবার এই কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে। সুতরাং নয়াদিল্লি কেন্দ্র থেকে তিনি দাঁড়ালে মীনাক্ষির ঘাড়ে কোপ পড়তে পারে বলে মনে করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বিজেপির মহেশ গিরির বদলে পূর্ব দিল্লির কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী করা হলো গম্ভীরকে। ওই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের অরবিন্দ সিং লাভলি ও আপ নেত্রী অতিশি মারলেনার বিরুদ্ধে তাঁর জোর টক্কর।
এর আগে নভজ্যোৎ সিংহ সিধুকে বিজেপিতে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু পরে কংগ্রেসে ভিড়ে গিয়েছেন সিধু। এ বারে ভোটে এলেন গম্ভীর। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে পঞ্জাবের অমৃতসর কেন্দ্রে অরুণ জেটলির হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন তিনি। যদিও সেই প্রচারের ফলাফল ইতিবাচক হয়নি। কংগ্রেসের অমরিন্দর সিংহের কাছে হারতে হয়েছিল জেটলিকে। তখন থেকেই জল্পনা চলছিল বিজেপির হয়ে ভোটে লড়তে পারেন গম্ভীর। গত ডিসেম্বরে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর গম্ভীরের প্রশংসা করে চিঠি লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর জাতীয়তাবাদী ভাবনা ও সমাজসেবামূলক কাজের তারিফ করেছিলেন। পাশাপাশি, মোদীর প্রশংসা করে গম্ভীর বলেছিলেন, “দেশের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভাবনাকে আমি শ্রদ্ধা করি। রাজনীতির মঞ্চে এসে দেশের জন্য কাজ করতে পারবো বলেই মনে করি।”
দিল্লিতেই জন্ম গম্ভীরের। পড়াশোনা, ক্রিকেটের হাতেখড়িও রাজধানীতে। ভারতীয় দলের পাশাপাশি রঞ্জি ট্রফিও খেলেছেন দিল্লির হয়ে। সেখানে ইমেজ যথেষ্টই ভালো ভারতের এই প্রাক্তন বাঁ’হাতি ব্যাটসম্যানের। ‘পদ্মশ্রী’ গম্ভীর ক্রিকেটের বাইরে সমাজসেবামূলক কাজেও বেশ সরব। সোশ্যাল মিডিয়ায় হামেশাই তাঁর উপস্থিতি দেখা যায়। পুলওয়ামায় সিআরপিএফ ক্যাম্পে জঙ্গি হামলার নিন্দা করে প্রচুর পোস্ট রয়েছে তাঁর টুইটারে। ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানের সমর্থনেও রয়েছে তাঁর একাধিক পোস্ট। তা ছাড়া আপ সরকারের সমালোচনা সংক্রান্ত পোস্টেও ভর্তি তাঁর অ্যাকাউন্ট। পর্যবেক্ষকদের মতে, গম্ভীরের ভোটে দাঁড়ানোটা আপের জন্য মোটেই সুখবর নয়।