কংগ্রেস সহ প্রতিটি বিরোধী দল অভিযোগ করেছিল, বাজেটে কেবল সরকারের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের জন্য নানা সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সংসদে এই অভিযোগের জবাব দিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। গত বাজেটে গরিবদের জন্য কী প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার তালিকা পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সরকারের বিরুদ্ধে কেবল অভিযোগ করা বিরোধীদের একাংশের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার গরিবদের স্বার্থে পদক্ষেপ নিলেও তারা বলে চলেছে, কেবল কয়েকজন শিল্পপতিকেই নাকি নানা সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে। বিরোধীরা এইভাবে মানুষকে ভুল বোঝাতে চায়।”
অর্থমন্ত্রী জানান, বাজেটে বলা হয়েছে, ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়া হবে। ৮ কোটি মানুষ বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস পাবেন। ৪ কোটি মহিলা, কৃষক ও প্রতিবন্ধীকে দেওয়া হবে নগদ টাকা। এর পরেও বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, সরকার কেবল কয়েকজন শিল্পপতির স্বার্থ দেখছে।
আরও তথ্য দিয়ে নির্মলা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ১ কোটি ৬৭ লক্ষের বেশি বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই বাড়িগুলি কি ধনীদের জন্য তৈরি হয়েছে? ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস থেকে প্রধানমন্ত্রী সৌভাগ্যশালী যোজনায় ২ কোটি ৬৭ লক্ষের বেশি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সরকার মাঝারি ও ক্ষুদ্র সংস্থাগুলিকে ৮ লক্ষ কোটি টাকার বেশি অর্ডার দিয়েছে।”
অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করার পরেই প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী তাকে বলেছিলেন অন্তঃসারশূন্য। এখানেই থামেননি রাহুল। তিনি বলেন, “পুরনো কথার চর্বিত চর্বন করা হয়েছে বাজেটে। দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে পরিত্রাণের কোনও কৌশল বাজেটে আমি দেখতে পেলাম না। কেন্দ্রীয় ভাবে যে নীতি ঘোষণার উচিত ছিল তা হয়নি। দেশের মানুষ হতাশ।”
পরে টুইট করে রাহুল আরও বলেন, “বেকারত্ব, কর্মসংস্থান নিয়ে একটিও কথা বলা হয়নি। মূল সমস্যাগুলিকেই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।” বাজেটের দুদিন আগে থেকেই জিডিপি, বিনিয়োগ ইত্যাদি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ করে টুইটে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছিলেন রাহুল। এদিনে সেটাকেই আরও তীব্র করেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।
লোকসভা ভোটের প্রচারেও যেখানেই রাহুল গিয়েছেন, সেখানেই আর্থিক দূরবস্থা, বেকারত্ব নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। কিন্তু উনিশের ভোটে সে সব কাজ দেয়নি। ৩০০-র বেশি আসন নিয়ে দ্বিতীয়বার সরকার গড়েছেন মোদী। কিন্তু রাহুল এদিনও মৌলিক সমস্যাগুলিকেই রাজনৈতিক আক্রমণের হাতিয়ার করলেন।