৭৩ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত এক বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের সাফল্যের সঙ্গে আগামী দিনে সরকারের লক্ষ্যের কথাও তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী।
দেখুন কী কী বললেন প্রধানমন্ত্রী
আমরা এক দেশ, এক সংবিধানের লক্ষ্যে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করেছি। এই স্বপ্ন দেখেছিলেন সর্দার বল্লভভাই পটেল। সর্দারজির স্বপ্ন পূরণ করেছি আমরা।
ভারতের মুসলিম বোনেদের জন্য আইন তৈরি করা হয়েছে। আমরা তাদের অধিকার তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি। তিন তালাক এখন বেআইনি। এর জন্য মুসলিম বোনেরা আমাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন।
জলের জন্য নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের নাম ‘জল জীবন মিশন’। ভবিষ্যতে যাতে দেশে জলের সমস্যা না হয়, তার জন্য জল শক্তি মন্ত্রক আর এক ধাপ এগিয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
জনসংখ্যার বিস্ফোরণ রুখতে ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজ্য সরকার গুলোকেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে হবে।
দুর্নীতি রুখতে সতত প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে। ঢিলেমি দিলে চলবে না। প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হবে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই অনেক দুর্নীতি পরায়ণ আমলাকে ছুটি দিয়ে দিয়েছি।
আমি অফিসারদের সঙ্গে বসে বারবার আলোচনা করি। সাধারণ মানুষের জীবনে সরকারের দখলদারি রয়েছে, তা কি লঘু করতে পারিনা। যাতে মানুষ আরও সহজ ও সাবলীল ভাবে বাঁচতে পারে।
সরকারের দাবাও যেমন থাকা উচিত না, তেমনই সংকটের সময়ে অভাবও হওয়া উচিত নয়।
অপ্রয়োজনীয় বহু আইন খতম করেছি গত পাঁচ বছরে, ১৪৫০ আইন খতম করেছি। গত দশ সপ্তাহে ৬০ টা আইন খতম করেছি।
ইজ অব লিভিং চাই। ইজ অব ডুইং বিজনেস এ গোটা পৃথিবীর প্রথম পঞ্চাশের মধ্যে পৌঁছতে হবে। ইজ অব লিভিং আমার আসল স্বপ্ন। সাধারণ মানুষকে যেন প্রতিদিনের জীবনে সরকারি কাজ কর্ম নিয়ে ঝঞ্ঝাট না থাকে।
আমাদের আস্তে আস্তে এগোলে চলবে না। হাই জাম্প লাগাতে হবে।
একশ লক্ষ কোটি টাকা আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে।
সাগরমালা প্রজেক্ট, বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা, সড়ক, বন্দর নির্মাণ করতে হবে।
আগে শুধু যদি কাগজে কলমে ঠিক হতো যে কোথাও রেল স্টেশন তৈরি হবে, তা হলে বহু দিন ধরে ওই ঘোষণাতেই খুশি থাকত।
এখন আধুনিক রেল স্টেশন কোথাও তৈরি হলে সেখানকার মানুষ প্রশ্ন করে বিমানবন্দর কবে হবে?
এখন শুধু পাকা সড়কের কথা মানুষ করে না। প্রশ্ন করে স্যার চার লেনের রাস্তা হবে না ছয় লেনের।
এখন শুধু বিদ্যুতের পোল দেখে খুশি হয় না, বলে চব্বিশ ঘন্টা বিদ্যুৎ কবে থেকে চালু হবে।
সময় বদলাচ্ছে। তা আমাদের বুঝতে হবে।
পাঁচ ট্রিলিয়ন অর্থনীতি তৈরি করা কঠিন কাজ। কিন্তু চ্যালেঞ্জ তো নিতেই হবে। উপরের দিকে দেখতে হবে।
সত্তর বছরে ভারত দুই ট্রিলিয়ন অর্থনীতিতে পৌঁছেছিল। গত পাঁচ বছরে তা তিন ট্রিলিয়ন ইকোনমিতে পৌঁছেছে। আগামী পাঁচ বছরে তা পাঁচ ট্রিলিয়ন ইকোনমিতে পৌঁছবে।
আমাদের কৃষকরা কেন রফতানি শুরু করবে না। রফতানি বাড়াতেই হবে। দুনিয়ার বাজারে পৌঁছতে চেষ্টা করতেই হবে।
আমাদের সামর্থ্যকে বুঝতে হবে। আমাদের সব জেলার এক্সপোর্ট হাব কেন হবে না?
আমাদের কোনও জেলায় শাড়ি তৈরি হয়, কোথাও মিষ্টি তৈরি হয় কোনও জেলা হস্তশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ। কেন তারা রফতানির সুযোগ পাবে না। ভাবুন।
আমরা কেন স্বপ্ন দেখব না যে ভারতের এমন কোনও জেলা থাকবে না যেখান থেকে কোনও না কোনও জিনিস রফতানি হয়।
আমরা মুদ্রাস্ফীতির হার কমিয়ে আর্থিক বৃদ্ধি ঘটিয়েছি।
বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো আমাদের প্রতিবেশী দেশও সন্ত্রাসবাদে জর্জরিত। আমরা যখন নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসদমনের কথা বলি তখন গোটা এই অঞ্চলের কথাই ভাবি।
টুকরো টুকরো করে ভেবে লাভ নেই। আমরা চাই ভারতের তিন বাহিনীই সমান ভাবে বাড়ুক। সেনা, নৌ সেনা ও বায়ু সেনা তিন বাহিনীই যেন উচ্চতা লাভ করে। পরস্পর সমন্বয় করে চলে।
চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ নিয়োগের কথা ভেবেছি। আজ তা ঘোষণা করছি।
স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় আমি জন্ম নিইনি। দেশের জন্য মরার সুযোগ পাইনি। কিন্তু দেশের জন্য বাঁচার সুযোগ তো পেয়েছি।
মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ শতবর্ষ উদযাপন করার সুযোগ আমরা পাচ্ছি। স্বাধীনতার ৭৫ বছর ও গান্ধীজির সার্ধ শতবর্ষ উদযাপন আমারা সমস্ত আবেগ দিয়ে করব।
আসুন দেশকে প্লাস্টিক মুক্ত করি। আগামী ২ অক্টোবর থেকে এই প্রয়াস শুরু করি। স্টার্ট আপ যারা করছে তাঁদের বলছি, প্লাস্টিক রিসাইকেলের ব্যবস্থা করতে পারেন কিনা দেখুন।
সব দোকানদারকে বলছি, দোকানের বাইরে হোর্ডিং লাগান- দয়া করে প্লাস্টিকের ব্যাগ চাইবেন না। কাপড়ের থলি নিয়ে আসুন।
দীপাবলীতে মানুষকে কাপড়ের ব্যাগ উপহার দিন। মানুষকে কাপড়ের ব্যাগে উপহার দিন। প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা দেশের সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠুক।
আমরা ফেসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আসুন স্বচ্ছতার জন্য ডিজিটাল পেমেন্টের পথে হাঁটি। দোকানদাররা আগে দোকানে হোর্ডিং লাগাতেন, আজ নগদ কাল ধার। তা বদলে এ বার ডিজিটাল পেমেন্টের হোর্ডিং লাগান।