পুরো শক্তি এখনও ধারণ করেনি। তাতেই ‘তকতে’-এর দাপটে লন্ডভন্ড হল গোয়া। পশ্চিম ভারতের উপকূলবর্তী রাজ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তার ফলে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত ভারতে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে। তকতে-র তাণ্ডবে কর্নাটকে ৪ জনের পাশাপাশি কেরলেও মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে কেরলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ২টি জেলায়। এর্নাকুলাম ও কোঝিকোড়ে।
রবিবার বিকেলে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত জানান, রাজ্যে দু’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ৫০০-রও বেশি গাছ পড়ে গিয়েছে। প্রায় ১০০ টি বড় বাড়ি এবং ১০০ টি ছোটো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একাধিক রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে আছে। ধাক্কা খেয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। তাছাড়াও শনিবার রাতে কর্নাটক উপকূলে প্রবেশের পর দক্ষিণ ভারতের রাজ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে কর্নাটকে যে শুধুই ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তা নয়, ৭৩টি বাড়িও ভেঙে পড়েছে বলেও জানিয়েছে কর্নাটক প্রশাসন। যে ৬টি জেলায় ঝড়ের দাপট সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে তিনটি উপকূলবর্তী ও তিনটি পশ্চিমঘাট পর্বত সংলগ্ন। রবিবার বেলা বাড়তেই গোয়ায় ঝড়-বৃষ্টির প্রভাব বেড়েছে। উপড়ে গিয়েছে গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। গোয়ার একটা বড় অংশে ঝড়ের দাপটে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু রাস্তা। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে কেরলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ২টি জেলায়। এর্নাকুলাম ও কোঝিকোড়ে। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত ভারতে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
তবে সেখানেই উদ্বেগ কাটছে না। মৌসম ভবন রবিবার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় তকতে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়ে সোমবার সকালে গুজরাটের পোরবন্দর ও নালিয়ার মধ্যবর্তী কোনও উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে। গুজরাত ও দিউ উপকূলে ইতিমধ্যেই কড়া নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। মৌসম ভবনের সিনিয়র ডিরেক্টর (আবহাওয়া) শুভানি ভুতে জানিয়েছেন, তকতে-র দাপটে রবিবার বিকেল থেকেই তুমুল বৃষ্টি হতে পারে মুম্বই ও সংলগ্ন এলাকাগুলিতে। ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে গোটা কোঙ্কন ও পশ্চিম মহারাষ্ট্রের পার্বত্য এলাকাগুলিতে। রবি ও সোমবার তুমুল বৃষ্টি হতে পারে মহারাষ্ট্রের কোলহাপুর ও সাতারায়। এ ছাড়াও তুমুল বৃষ্টি হতে পারে গুজরাতের জুনাগড়, গির সোমনাথ, সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ, দিউ, পোরবন্দর, দ্বারকা, আমরেলি, রাজকোট ও জামনগরে। মঙ্গলবার ঝড়ের দাপট কিছুটা কমতে পারে। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ বেগ ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার হয়ে যেতে পারে।
ইতিমধ্যেই এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আলোচনায় বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সেই বৈঠকে নির্দেশ দেন যেন এই ঝড়ের কারণে করোনা চিকিৎসায় কোনও সমস্যা না দেখা যায়। হাসপাতালগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে বাকি সব পরিষেবা যাতে দেওয়া হয়, সে কথা বলেন তিনি।