মেকী ধর্মনিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবীদের থেকেও সমসাময়িক পরিস্থিতিতে হিন্দুদের এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে দেখা যায় নি

২০২০ সাল, ২৩ শে ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে নাগরিকত্ব বিরোধী সংশোধনী আইন (সিএএ) এবং সিএএ সমর্থিত বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। হিংসাত্মক এই দাঙ্গা পরবর্তীতে সাম্প্রদায়িক মোড় নেয় এবং পরের ১০ দিনের মধ্যে ৫৩ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়। আহত হয়েছিলেন ২০০ জনেরও বেশি। দোকান এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এমনকি মন্দির গুলিতেও আক্রমণ করা হয়েছিল।হিন্দু বিরোধী দিল্লির দাঙ্গায় বিভিন্ন উগ্ৰ-জিহাদি সংগঠন যেমন তাবলিগী জামাত, পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া, জামিয়া মিলিয়া কমিটি, পিনজ্রা টোড ইত্যাদির ভূমিকা প্রকাশ পেয়েছে ,  হিংসার  অভিযোগে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা চার্জশিট দাখিল করেছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির এক হিন্দুর মালিকানাধীন প্রাইভেট স্কুলের অগ্নিসংযোগের অভিযোগে দিল্লি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দিল্লি পুলিশ।দিল্লির হিন্দুরা বাঙালি হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে পথে নেমেছিল । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন। আজাদ বিনোদ ও তাঁর সঙ্গীরা যখন জানতে পারলেন যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঙ্গল ভবনে রয়েছেন, উনারা মধ্যরাতে বঙ্গভবনে পৌঁছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন। বাংলাদেশের থেকে ধার নেওয়া “খেলা হবে” স্লোগান যা দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় ফিরে এসেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশাল  জয়ের পরে “খেলা হবে” এই স্লোগানটি বাংলার বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের পরে, সারা বাংলার তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা বিজেপি সমর্থকদের এবং তৃণমূলকে ভোট দেয়নি এমন হিন্দুদের লক্ষ্য করে তাদের মারধর করেছিল, তাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে , উগ্ৰ জেহাদি শক্তির সাহায্য নিয়ে দোকানপাট  লুঠ পর্যন্ত করা হয়েছে , যার ফলশ্রুতিতে আমরা দেখতে পেয়েছি হাজার হাজার হিন্দুরা ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল , আমাদের আধুনিক সভ্য সমাজে যা ভাবা অকল্পনীয়। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে  তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের পরে যে হিংস্রতা, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের খেলাটি খেলা হয়েছিল তা পুরো দেশকে ক্ষোভে ভরিয়ে দিয়েছে , এক্ষেত্রে এই খেলা পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দু গণহত্যার সমার্থক বলে ধরেই নেওয়া যায় ,তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা ক্ষমতার স্বার্থে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছিল, মহিলাদের ধর্ষণ করেছিল।অনেক ভীতিকর ভিডিওও সামনে এলো। এর পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয় যে নির্বাচনের ফলাফলের পরে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা হিংসাত্মক রক্তাক্ত খেলা খেলেন ,  যুবতী থেকে শুরু করে প্রবীণ মহিলাদের পর্যন্ত কেবল ধর্ষণই করা হয়নি বরং গণধর্ষণ করা হয়েছিল। আমরা দেখেছিলাম একজন বিজেপি সমর্থকের বৃদ্ধা মা কে কিভাবে মারধর করা হয়েছিল , পরবর্তীতে উনি মারা যান।বাংলায় এই ধরণের হিন্দু নির্যাতন নতুন নয়। সরকারের প্রচ্ছন্নপ্রশ্রয়ে বাঙালি হিন্দুদের উপর এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে এখন দিল্লির হিন্দুরা সোচ্চার হয়েছে। সংবাদ অনুসারে,  গত ২৬ শে জুলাই রাতে দিল্লির বিশিষ্ট হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতা আজাদ বিনোদের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক হিন্দুত্ববাদীরা বঙ্গভবনে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়।

দিল্লির হিন্দু অধিবাসীরামমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। তাঁরা হাতে প্ল্যাকার্ড ধরেছিল, যার উপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান লেখা ছিল। হিন্দুদের খুনী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ফিরে যাওয়ার স্লোগান তোলা হয়েছিল। হঠাৎ বঙ্গভবনে হিন্দু নেতাকর্মীদের জমায়েত দেখে পুলিশ প্রশাসনের হাত গজিয়ে উঠল এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর পুলিশ বাহিনী পৌঁছে যায়। এর পরে পুলিশ জড়ো হওয়া সমর্থকদের  থানায় নিয়ে যায়। হিন্দু নেতা  আজাদ বিনোদ বলেন  যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলায় হিন্দুদের টার্গেট করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে, আমাদের বাঙালি হিন্দু মা-বোনদের ধর্ষণ করা হয়েছে।তিনি বলেন যে, কেউ যখন বাঙালি হিন্দুদের সমর্থনে কিছু বলছেন না, তখন আমাদের কর্তব্য যে আমাদের হিন্দু ভাই-বোনেরা বাংলার নিপীড়িতদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবেন, তাঁরা যাতে  উপলব্ধি করেন  যে দেশের হিন্দুরা  তাদের সাথে আছেন, তাই আমরা

আজ রাতের বেলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বঙ্গভবনে এসেছি। আরেক হিন্দু নেতা দীপক সিংহ হিন্দু বলেছিলেন যে এই বিক্ষোভ দেখানোর উদ্দেশ্য যে বাংলার হিন্দুরা একা নন, দিল্লির হিন্দুরাও তাদের সাথে রয়েছেন। সমস্ত অত্যাচারের পরেও বাংলার প্রতিটি হিন্দু  যেভাবে ধর্মের উপর অবিচল রয়েছেন, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তাঁদের সমর্থন করা, তাঁদের সমর্থনে আওয়াজ তোলা আমাদের দায়িত্ব হয়ে পড়ে। এই প্রতিবাদের  অঙ্গ হিসেবে সোনু সানাতানি বলেন যে মধ্যরাতে বঙ্গভবনে হিন্দুদের এই সমাবেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি বার্তা যে তাঁর হিন্দু বিরোধী সরকার জনসাধারণের সমর্থন পাবে না, হয় তাঁকে তাঁর হিন্দু বিরোধী নীতি ছেড়ে দিতে হবে নাহলে তাকে দেশের প্রতিটি কোণে হিন্দুদের এই ক্রোধের মুখোমুখি হতে হবে। এ সময় চন্দন সিং, অজয় ​​বশিষ্ঠ, ভারত ঠাকুর, সানি যাদব সহ অন্যান্য সমস্ত হিন্দু কর্মী উপস্থিত ছিলেন। অবশ্য উল্লেখযোগ্য বিষয় যে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, মেকী ধর্মনিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবীদের থেকেও সমসাময়িক পরিস্থিতিতে হিন্দুদের এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে দেখা যায় নি।

Saptarshi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.