স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনার মাঝেই কাশ্মীরে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হলো ৮ হাজার সেনাকে

ঠিক যে মুহূর্তে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের উপর থেকে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস তুলে নেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে জোর আলোচনা চলছে রাজ্যসভায়, তখন অন্যদিকে ফের আট হাজার সেনাকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হলো কাশ্মীরে। ফলে উপত্যকায় গত কয়েকদিনে মোতায়েন করা হলো ৪৩ হাজার সেনা।

এ দিন জানানো হয়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সি ১৭ ট্রান্সপোর্ট বিমানে করে আট হাজার সেনাকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কাশ্মীরে। জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস রদ হয়ে গেলে উপত্যকায় অশান্তি ছড়াতে পারে, এই ভেবেই মোতায়েন করা হয়েছে এই সেনা। এর আগে ২৫ জুলাই ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল কাশ্মীরে। তার কয়েকদিন পরেই ফের আরও ২৫ হাজার সেনা পাঠানো হয় সেখানে। যাতে কোনও অবস্থাতেইও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি না হয়, তার জন্য এই সিদ্ধান্ত, এমনটাই জানানো হয়েছে।

গত কয়েক দিন ধরে কাশ্মীরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। কয়েকদিন আগেই অমরনাথ যাত্রা পথের পাশেই পাক সেনার স্নাইফার রাইফেল ও মাইন উদ্ধার করে সেনা। সাংবাদিক সম্মেলন করে তা দেখানো হয়। তারপরেই সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে সতর্কতা জারি করে প্রশাসন। নিরাপত্তার স্বার্থে তীর্থযাত্রী এবং পর্যটকদের অবিলম্বে কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্র। গোটা পরিস্থিতিতে কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েন পর্যটক থেকে আম কাশ্মীরবাসী। বিমানের টিকিন না মেলায় শনিবার পর্যন্ত ব্যাপক ভিড় দেখা যায় শ্রীগনর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে। জানা গিয়েছে, শনিবার রাত থেকে ৬ হাজারের বেশি পর্যটককে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীনগরের বাইরে।  যার মধ্যে প্রায় ৩৮৭ জনকে দফায় দফায় এয়ারলিফট করে নিয়ে যায় ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ারক্রাফ্ট।

শ্রীনগর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তালিকা অনুযায়ী, শনিবার থেকে বিমান পথে উপত্যকা ছেড়েছেন ৬,২০০ জনের বেশি যাত্রী। অন্তত ৫,৮২৯ জনকে উড়িয়ে নিয়ে গেছে ৩২ টিরও বেশি এয়ারলাইন্স। বাকিদের মধ্যে ৩৮৭ জনকে এয়ারলিফট দিয়েছে বায়ুসেনার বিমান। জম্মু, পাঠানকোট ও হিন্দনের নানা জায়গা থেকে এয়ারক্রাফ্টে তোলা হয়েছে তাদের।

এরপর রবিবার সকালেই কাশ্মীরের কেরন সেক্টরে ভারতীয় সেনার হাতে পাক ব্যাট ফোর্সের ৭ জওয়ান খতম হয়। ভারতীয় সেনা তাদের ছবিও প্রকাশ করে। পাকিস্তানকে বলা হয়, সেইসব দেহ নিয়ে যেতে। রবিবার রাতে কাশ্মীরের প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে উপত্যকার ইন্টারনেট পরিষেবা। বন্ধ রয়েছে স্কুল কলেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.