তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম খবরটা আজ আনন্দবাজারে । পেলাম না ।
কি খবর ?
A Delhi court has summoned TMC MP Abhishek Banerjee’s wife, Rujira Banerjee, on the complaint filed by the ED over her refusal to join the probe in connection with a coal smuggling case.
১৮ সেপ্টেম্বর রায়টা দিয়েছে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট দুপুরে । সেই খবর আনন্দবাজার পায়নি ১৮ তারিখ রাত পর্যন্ত এটা বিশ্বাস করতে হবে ? আসলে পেয়েছে কিন্তু ছাপেনি । যা ছাপা উচিত ছিল ১৯ তারিখের কাগজে ।
কেন ? এটা খবর নয় ? নাকি আদৌ গুরুত্বপূর্ন কোন খবরই নয় ? এই প্রশ্নের উত্তর আনন্দবাজার দেবে না । তবু করা দরকার ।
‘এই সময়’ আবার খুব ছোট করে ভেতরের বাঁয়ের পাতায় একটা বড় খবরের ভেতরে চার লাইনে দায় সেরে রেখেছে । যদি তারা একবারও জানতো আনন্দবাজার এ খবর ছাপবে না ‘এই সময়’ নির্ঘাত খবরটাকে ব্ল্যাক লিস্টেড করত । বর্তমানের আবার এ সব খবরে মন থাকে না । প্রত্যাশামতই তারা ছাপেনি ।
যে খবর এই তিনটে কাগজ সবাই মিলে চেপে গেছে আসুন একটু গভীরে চোখ বোলাই ।
কয়লা পাচার কাণ্ডে তদন্তকে ভেস্তে দিতে অভিষেক যে অসাধু উপায় নিচ্ছে ইডি তাই নিয়ে দিল্লী পাতিয়ালা হাউস কোর্টে সম্প্রতি একটি মামলা দায়ের করেছে । সেখানে ই ডি যে তথ্য পেশ করছে তার বয়ান এরকম – ৩১ আগস্ট রুজিরা ব্যানার্জি ই ডি কে লিখেছেন যে প্যান্ডেমিকের মধ্যে আমার পক্ষে দুই সন্তানের মা হিসেবে দিল্লী যাওয়া বিপজ্জনক । তাই আমি হাজিরা দিতে পারছি না । ১৮ আগস্ট রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমন ধরিয়ে বলা হয়েছিল দিল্লীতে ১ লা সেপ্টেম্বর হাজিরা দিতে হবে । রুজিরা আসেননি ।
অথচ এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে রুজিরা কলকাতা থেকে আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহেই দিল্লী যান । দিল্লির কাছাকাছি একটি হিল স্টেশনে সময় কাটান, দিল্লীতে বিউটি পার্লারেও যান, দিল্লীর দর্শনীয় স্থানেও যান । তারপর হাজিরার ঠিক তিন দিন আগে ২৮ আগস্ট এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে কলকাতা ফিরে যান । এই তথ্য আদালতে পেশ করে ইডি বলছে – she used pandmic as an excuse and intentionally lied to avoid her questioning.
ইডি কে যে রুজিরা মিথ্যে বলেছেন তা ইডি আদালতকে এভাবেই জানিয়েছে এবং এই সংক্রান্ত সব তথ্য প্রমাণ পেশ করে ।
আর তারই প্রেক্ষিতে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে ৩০ সেপ্টেম্বর দিল্লির কোর্টে হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য সমন পাঠিয়েছে ।
আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন আমি এত সব জানলাম কি করে ?
জানলাম ‘ইন্ডিয়া টু ডে’র পোর্টাল থেকে । যেখানে তাঁদের সাংবাদিক নলিনী শর্মা এবং মুনিশ চন্দ্র পান্ডে রিপোর্টটি করেছেন । সংবাদটি ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বেরিয়েছে তাদের পোর্টালে ।
এবার বলুন বাংলার প্রেক্ষিতে এত বড় খবরটি কি খবর নয় ?
অভিষেক পত্নী মিথ্যে তথ্য পেশ করছেন, সেটাকে প্রমাণ দিয়ে খন্ডন করছে ই ডি দিল্লির আদালতে এবং তারই ভিত্তিতে ৩০ তারিখ দিল্লীতে আদালত ডেকে পাঠাচ্ছে অভিষেক পত্নী রুজিরাকে । এই খবর যদি খবর না হয় কোনটা খবর তাহলে ? প্রশ্নটা আসে । এবং সেই প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করানো দরকার বাংলা সংবাদ মাধ্যমকে ।
আনন্দবাজার, বর্তমান, এই সময় এর মত পত্রিকাকে ।
তাঁদের বোঝানো দরকার কাগজ লোকে কেনে পয়সা দিয়ে, পড়ে ব্যস্ত দিনে সময় বার করে । আর সেই পাঠকের রাখা অসীম আস্থা আর বিশ্বাসকে পণ্য করে এরা নবান্ন থেকে বিজ্ঞাপন হাতায় । রোজগার বাড়ায় । একাউন্ট সমৃদ্ধ করে ।
এটা সত্যি এতসব বোঝেনা কিন্তু পাঠক । তাকে অন্ধকারে রাখাই এদের কৌশল । এদের আর্ট । একবার যদি এই অন্ধকারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আপনি এঁদের মুখের ওপর বলে দেন কাল থেকে আর নেব না কাগজ দেখবেন সব বিপ্লব শেষ হবে নিমেষে । অন্ধকার গলিতে দাঁড়িয়ে শাসকের সঙ্গে আপোষের প্রেম নিমেষে তখন উধাও হবে । ইন্ডিয়া টু ডে আজ যা ছাপছে এরাও কাল থেকে ছাপবে সব সংবাদ বাপ বাপ বলে ।
পারবেন আপনি না বলতে ?
Say no to bengali newspaper আন্দোলনে সামিল হতে ? আখেরে লাভ কিন্তু আপনার ।
ভাবুন, বারবার ভাবুন যা লিখলাম ।।
সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় ( ৯৮৩০৪২৬০৭৮)