ভি শেপড রিকভারি’। শুক্রবার ২০২০-২১ সালের আর্থিক সমীক্ষায় ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে এই কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে। ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষরটির একটি বাহু যেমন নীচের দিকে নেমে ফের উপরের দিকে উঠে যায়, আশা করা হচ্ছে, ভারতের অর্থনীতির সূচকও ওইভাবে নেমে যাওয়ার পরে ফের উঠে আসবে। করোনা অতিমহামারীর ধাক্কায় মন্দার কবলে পড়েছে ভারতের অর্থনীতি। কিন্তু জানুয়ারির ১৬ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে টিকাকরণ। প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখ সারির করোনা যোদ্ধাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। অর্থনীতিবিদদের আশা, এর ফলেই করোনার প্রভাব থেকে অর্থনীতি বেরিয়ে আসবে। ফের শুরু হবে বিকাশ।
গত বছর সরকার স্থির করেছিল, রাজকোষ ঘাটতিকে মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি)-র ৩.৫ শতাংশে বেঁধে রাখা হবে। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলেই মনে হচ্ছে। আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কয়েকটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
শুক্রবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে আর্থিক সমীক্ষা পেশ করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ সালের আর্থিক বছরে জিডিপির বিকাশ হতে পারে ১১ শতাংশ হারে। টিকাকরণের ফলে ফের করোনা সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা দূর হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবে শুরু হবে আর্থিক কার্যকলাপ।
২০২০-২১ সালে জিডিপি ৭.৭ শতাংশ সংকুচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থাও একই ভবিষ্যৎবাণী করেছিল। গত ডিসেম্বরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলে, দেশের জিডিপি ৭.৫ শতাংশ হারে সংকুচিত হতে পারে।
গত বছর করোনা অতিমহামারীর ফলে দেশের অর্থনীতি একসময় প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। মার্চের শেষদিক থেকে দেশ জুড়ে চালু হয়েছিল লকডাউন। লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, “সেই অন্ধকারের মধ্যে একমাত্র রুপোলি রেখা ছিল কৃষি। অতিমহামারীর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পরিষেবা, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং গৃহ নির্মাণশিল্প।”
এদিন সংসদে আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাসের ত্রৈমাসিকের তুলনায় ২০২০ সালের ওই সময়ে অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছিল ২৩.৯ শতাংশ। ৪০ বছরে এই প্রথম দেশের জিডিপি সংকুচিত হয়েছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের ত্রৈমাসিকে জিডিপি-র সংকোচন ৭.৫ শতাংশে নেমে আসে। কারণ তখন লকডাউন অনেকাংশে শিথিল করে দেওয়া হয়েছিল। ধীরে ধীরে চালু হচ্ছিল অর্থনৈতিক কার্যকলাপ।