শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডের বিস্ফোরণেও জড়িয়ে গেল কাশ্মীরের নাম। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার সেনাপ্রধান এক বিদেশী সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমাদের দেশে বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে সন্ত্রাসবাদীরা সম্ভবত ভারতের কাশ্মীরে অথবা কেরলে গিয়েছিল। সেখান থেকে তারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে।
শ্রীলঙ্কায় গত ২১ এপ্রিল আটটি বিস্ফোরণে নিহত হন প্রায় ৪০০ জন। সেদেশের লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহেশ সেনানায়েকে বলেন, বিস্ফোরণের কিছুদিন আগে জঙ্গিরা ভারতে গিয়েছিল। ভারতের গোয়েন্দারাও শ্রীলঙ্কায় বিস্ফোরণের কিছুদিন পরেই তদন্ত শুরু করেছেন, এদেশের কোনও গোষ্ঠীর সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বোমারুদের যোগ ছিল কিনা।
সেনানায়েকে বলেন, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, বিস্ফোরণের আগে জঙ্গিরা বেঙ্গালুরু, কেরল ও কাশ্মীরে গিয়েছে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, জঙ্গিরা কেন ওই সব জায়গায় গিয়েছিল মনে হয়? তিনি বলেন, সম্ভবত তারা প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিল। এছাড়া দেশের বাইরে অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করাও তাদের উদ্দেশ্য হতে পারে।
ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির মতো সংস্থা ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ু ও কেরলের কয়েকটি অঞ্চলে তল্লাশি চালিয়েছে। আইসিস নামে জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। সিরিয়ার ওই গোষ্ঠীটি শ্রীলঙ্কায় বিস্ফোরণের দায়িত্ব স্বীকার করেছিল। যদিও সেই দাবি কতদূর সত্য তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ আছে।
ভারতের দুই গোয়েন্দা অফিসার জানিয়েছেন, আত্মঘাতী বোমারুদের অন্তত দু’জন ২০১৭ সালে ভারতে এসেছিল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার বোমারুরা কেউ ভারতে ট্রেনিং নিয়েছিল বলে জানা নেই। শ্রীলঙ্কা সরকার আমাদের এমন কথা জানায়নি। শ্রীলঙ্কার বোমারুরা কাশ্মীরে গিয়েছিল কিনা, আমরা জানতে পারিনি। তবে তদন্ত চলছে।
শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল তৌহিত জামাত নামে একটি সংগঠন ইস্টার সানডেতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল বলে জানা যায়। ওই সংগঠনের নেতা মৌলভী জাহরান বিন হাশিম ভারতে এসেছিলেন বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। গোয়েন্দারা জানতে চেষ্টা করছেন, হাশিম ভারতে এসে কাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। একটি সূত্রে জানা যায়, তাঁর সঙ্গে তামিলনাড়ুর একটি সংগঠনের যোগাযোগ ছিল। কিন্তু সেই সংগঠনটির সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় বিস্ফোরণের কোনও সম্পর্ক নেই। যতদূর জানা যায়, শ্রীলঙ্কান ন্যাশনাল তৌহিত জামাত নামে সংগঠনটি কয়েক বছর আগে তৈরি করেন হাশিম। তাঁর সঙ্গে সিরিয়ার আইসিস সংগঠনটির যোগাযোগ আছে কিনা, তাও এখনও স্পষ্ট নয়।