প্রতি বছর কত হাজার হাজার ছেলে মেয়ে শুধু একটা চাকরির বিজ্ঞাপনের দিকে তাকিয়ে বসে থাকেন জানেন না তিনি ?

একদিনে তিনবার থাপ্পড় খেয়েছেন কোনোদিন ? ক্লাসের ব্যাক বেঞ্চার রাও চট করে খায় না । যা এ রাজ্যের সরকার খেল । আজ আদালতে ।

প্রথমটি পাঁচ হাজার টাকার জরিমানা । আদালতের সঙ্গে স্রেফ ছ্যাবলামি করতে গিয়ে । শুনেছেন কেউ কোনোদিন কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রীকে সে রাজ্যের উচ্চ আদালত পাঁচ হাজার টাকা ফাইন করেছে ? কতটা নীচে নামিয়েছেন মমতা নিজেকে, নিজের চেয়ারটাকে ! না হলে উচ্চ আদালতকে এই সিদ্ধান্ত আজ নিতে হয় !

যে কোন আত্মমর্যাদা সম্পন্ন মানুষ হলে লজ্জা পেতেন । ইনি পান না । কারণ সেটি উনি অনেক দিন আগেই রাজনীতি করতে করতে হারিয়েই ফেলেছেন ।

দ্বিতীয় ঘটনা দেবাঞ্জনকে নিয়ে আদালতের প্রশ্নবাণ । নীল আলো জ্বালানো গাড়ি নিয়ে তিন বছর ধরে এক প্রতারক যখন ঘুরছিল পুলিশ কি করছিল ?

এরাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী কে ? আদালতের এই প্রশ্ন একটা সরকার কি ভাবে চলছে তার চেহারা বর্ণনা করে দিল । লজ্জা কি পেলেন পুলিশ মন্ত্রী ?

তৃতীয়টি আরও মারাত্মক । শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে স্থগিতাদেশ । বলুন কোন রাজ্যে এই কীর্তি হয় ? এ রাজ্যে পড়াশুনা করা কি অপরাধ ? একটা সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন তালিকা বারবার করে বার করবে যাতে পরীক্ষার্থীরা আদালতে যায় এবং তা আটকে যায় ? সরকারের লাভ ? লাভ ঐ ১৪ হাজার ৩৮৯ জনের মাইনেটা সরকারের বাঁচবে । ওদিকে সরকার বলতে পারবে অনায়াসে আমি তো চাকরি দিতে চেয়েছিলাম । আদালত আটকে দিচ্ছে । কি করব বলুন ?

আদালত আটকে দিচ্ছে কেন ? আদালতে লোককে যেতে হচ্ছে কেন ? আদালতে লোকে যাতে যায় তার অবকাশ রাখছেন কেন ? এই প্রশ্নের উত্তর দেবেন মুখ্যমন্ত্রী ? এই প্রশ্নগুলো করার হিম্মত দেখাতে পারবেন কোন সাংবাদিক, নবান্নে বসে বসে যখন তিনি প্রেস ব্রিফ করেন ।

আসলে সব কিছু সাজানো । প্ল্যান মাফিক । লক্ষ লক্ষ মানুষের সঙ্গে অন্তহীন প্রতারণা । প্রতি বছর কত হাজার হাজার ছেলে মেয়ে শুধু একটা চাকরির বিজ্ঞাপনের দিকে তাকিয়ে বসে থাকেন জানেন না তিনি ? এই রাজ্যে প্রতি বছর ৯ লক্ষ ছেলে মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে । আর এদের জন্য সরকারি সব চাকরির সব দরজাই প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন । আর ওদিকে ১০ লাখ, বারো লাখে চাকরি বিক্রি হচ্ছে নিয়ম করে । আগে যা হত ৬ কিম্বা ৮ লাখে ।

আমার খুব পরিচিত দুটি পরিবারের অল্প শিক্ষিত দুই সন্তান এভাবেই চাকরি পেয়ে কলার উল্টে ঘুরছে এই সমাজে এম এ, এম এস সি বিএড ফার্স্ট ক্লাস পেয়েও চাকরি না পাওয়া ছেলে মেয়েগুলোর সামনে ।

কোনদিন এঁরাই যদি ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন তোলে – কেন স্কুল কলেজে যাব ? কেন শিক্ষিত হব ? কোন উত্তর আছে এই সমাজের ?

জানিনা । একদমই জানিনা ।

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় ( ৯৮৩০৪২৬০৭৮)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.