জয়েন্টে বাংলা ভাষা ব্রাত্য কেন এই নিয়ে অভিষেক-সহ গোটা তৃণমূলকে বিঁধতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সোমবার দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বাংলা থেকে ক’জন জয়েন্ট পরীক্ষা দেয়, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন? বাংলার সরকারি স্কুলে পড়ে জয়েন্ট দেওয়া যায় নাকি! গুজরাতে ৬০হাজার ছাত্রছাত্রী জয়েন্ট দেয়। এখানে কজন?’ সেইসঙ্গে বিজেপির রাজ্যসভাপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘যখন আবেদন করতে বলা হয়েছিল ভাষার জন্যে, তখন করেননি কেন? এখন বাংলা নিয়ে রাজনীতি করছেন!’
জয়েন্টে আঞ্চলিক ভাষা হিসাবে শুধুমাত্র স্থান পেয়েছে গুজরাতি। আঞ্চলিক ভাষা হিসাবে বাংলা ব্রাত্য কেন? সেই প্রশ্নই তুলে ধর্নায় বসেছে তৃণমূল। শাসকদলের এই ধর্নায় যোগ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ধর্না মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী তথা তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও।
বাংলা ভাষার এই বঞ্চনার বিষয়টি খুব শীঘ্রই সংসদেও তোলা হবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সংসদে যদি তাঁদের কথা না শোনা হয় সেক্ষেত্রে ভারতবর্ষের প্রতিটি প্রান্তে এই নিয়ে তারা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে বলেও হুমকি দেয়।
এই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘বাংলার প্রতি নিরন্তর বঞ্চনা করা হচ্ছে, বাঙালির প্রতি এই বঞ্চনা মেনে নেওয়া যায় না। যতদিন না পর্যন্ত বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে ততদিন এই লড়াই চলবে।’ এই লড়াইতে একজোট থাকার আহ্বান জানান তিনি। জয়েন্টের প্রবেশিকায় বাংলা ভাষা যদি স্বীকৃতি না পায়, তবে আমরা দিল্লির বুক থেকে অধিকার ছিনিয়ে নেব।’
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই জয়েন্টে প্রবেশিকার পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে গুজরাতি ছাড়া অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষাগুলি কেন ব্রাত্য এই নিয়েই তৃণমূল ভবনে অন্যান্য সাংসদ এবং বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই বৈঠক শেষেই সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, ‘অন্য ভাষাতেও জয়েন্টের প্রশ্নপত্র হওয়া উচিত। আমার গুজরাতি ভাষায় কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলা বা অন্যান্য ভাষাগুলি ব্রাত্য থাকবে কেন? বাংলাসহ অন্যান্য ভাষাতেও চালু করতে হবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স।’
এই দাবির পরই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ১১ নভেম্বর রাজ্যজুড়ে বাংলা এবং অন্যান্যা ভাষাতেও জয়েন্ট প্রবেশিকা চালু করার দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হবে। তিনি আরও বলেছিলেন, ভাষা বৈষ্যম্যের প্রতিবাদেই হবে কর্মসূচি। এই মর্মে কেন্দ্র সরকারকে চিঠিও দিয়েছিল রাজ্য।